ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

গাজীপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শিল্পকারখানা

প্রকাশিত: ১৭:২৯, ১৭ এপ্রিল ২০২১

গাজীপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে শিল্পকারখানা

করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে সবকিছু বন্ধ থাকলেও সরকারি সিদ্ধান্তে চালু রয়েছে শিল্পকারখানা। এসব কারখানায় শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন কারখানা কর্তৃপক্ষ।

তবে কারখানায় আসা যাওয়ার জন্য নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার কথা থাকলেও তা রয়েছে উপেক্ষিত। আর কাজের ক্ষেত্রে কারখানার ব্যবস্থাপনা থেকেই সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার ডিভাইন টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানা সুইং আপারেটর মো. জসিম উদ্দিনের বলেন, সরকারি সিদ্ধান্তের পর তাদের কারখানার মূল গেইটে জীবনুনাশক স্প্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। হাত ধোয়ার জন্য সাবান বেসিন দেওয়া আছে। আর কারখানা ভবনে প্রবেশের সময় সবার হাতে স্যানিটাইজার দেওয়া হচ্ছে। আর মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক ছিলো আগে থেকেই।

একই অবস্থা দেখা গেছে কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা এলাকার ইকু টেক্স লিমিটেড, অ্যাপেক্স ল্যাঞ্জারী, ফরটিক্স টেক্সটাইল লিমিটেড, নূরুল ইসলাম স্পিনিং, শামসুদ্দিন স্পিনিং, লিবাইস টেক্সটাইলসহ বেশ কয়েকটি কারখানায়।

সরেজমিন বেশ কয়েকটি পোশাক কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে শ্রমিক পৌঁছানোর পরে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে ও প্রত্যেককে মাস্ক পরিয়ে কারখানার প্রবেশদ্বারে আনা হচ্ছে। সেখানে অনেক প্রতিষ্ঠান আগেই পাত্রভর্তি জীবাণুনাশক পানি রেখে দিয়েছে। শ্রমিকরা সে পানিতে নিজের পা ও জুতা চুবিয়ে পরিষ্কার করে যাচ্ছেন নিরাপত্তা কর্মীর কাছে। থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে পোশাক কর্মীদের শরীরের তাপমাত্রা মাপার পর তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন। এরপরেই ভেতরে কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান বেসিনে আবার কোনও কোনও প্রতিষ্ঠান সাপ্লাই পানির লাইনে একাধিক ট্যাপ লাগিয়ে ও সাবান রেখে শ্রমিকদের হাত-মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে। এরপরই তারা কাজের জন্য কারখানার ভেতরে প্রবেশ করেছে।

গাজীপুর শিল্পপুলিশ ও কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, শিল্পঅধ্যুষিত গাজীপুরে তিন হাজারেরও বেশি তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় কাজ করছেন লাখ লাখ শ্রমিক। সর্বাত্মক লকডাউনে সরকারের ১৩ দফা নির্দেশনা অনুযায়ী চান্দনা চৌরাস্তা, জয়দেবপুর, টঙ্গী, পোড়াবাড়ি, সালনাসহ জেলার শুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গড়ে ওঠা কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় শ্রমিকদের মাস্ক পরা, শরীরে জীবাণুমুক্তকরণ, হাত ধোয়াসহ প্রত্যেক শ্রমিকের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে কর্মস্থলে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে। তবে শ্রমিকদের স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা নেওয়ার বিষয়টি উপেক্ষিত রয়েছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় রিকশা, অটো রিকশা ও পায়ে হেঁটে কারখানায় আসছেন শ্রমিকরা।

কারখানার শ্রমিক আব্দুল আলীম জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় শরীরের তাপমাত্রা মাপা, হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও সামাজিক দূরত্বের জন্য মালিকপক্ষ ব্যবস্থা নিয়েছেন। জীবন ও জীবিকার জন্য কারখানায় কাজ করতে চান তারা।
 
স্পেরো কারখানার কর্মকর্তা এজিএম আলতাফ হোসেন বলেন, জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে কারখানা পরিচালনা করছেন তারা। আর কর্মরত শ্রমিকরাও তাদের জন্য নেওয়া এসব ব্যবস্থা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। গত লকডাউনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে করোনা মোকাবিলায় এবার কারখানা পরিচালনা করছেন। কিন্তু শ্রমিকরা পরিবহন নিয়ে যে দুর্গতি পোহাচ্ছেন, সে ব্যাপারে কোনো কথা বলতে চায়নি কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুশান্ত সরকার জানান, গাজীপুরের কারখানাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে কিনা তা নিয়মিত দেখা হচ্ছে। সব কারখানায় কমবেশি স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ করে যাচ্ছে।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন