ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ০২ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ইউক্রেনে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

প্রকাশিত: ১১:২১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ইউক্রেনে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

ফাইল ছবি

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চলছে টানা দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে। রুশ এই আগ্রাসনের শুরু থেকেই ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিয়েভকে দেওয়া সহায়তার বিষয়ে দেশটি বরাবরই প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়ে থাকে।

তবে প্রকাশ্য সেই ঘোষণার বাইরেও ইউক্রেনে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি সেগুলো ইউক্রেন ব্যবহারও শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে ইউক্রেন গোপনে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার শুরু করেছে বলে মার্কিন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

এসব অস্ত্র চলতি বছরের মার্চ মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অনুমোদিত ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা প্যাকেজের অংশ ছিল এবং সেগুলো চলতি এপ্রিল মাসে ইউক্রেনে পৌঁছায়।

এছাড়া অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য এসব অস্ত্র ইতোমধ্যে অন্তত একবার ব্যবহার করা হয়েছে বলেও মার্কিন মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এখন ইউক্রেনের জন্য ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের নতুন সহায়তা প্যাকেজে স্বাক্ষর করেছেন।

বিজ্ঞাপন


বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এর আগে ইউক্রেনকে আর্মি ট্যাকটিক্যাল মিসাইল সিস্টেম (এটিএসিএমএস) নামে মধ্য-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করেছিল। কিন্তু রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলা করা এই দেশটিতে আরও শক্তিশালী কিছু পাঠাতে বরাবরই অনিচ্ছুক ছিল ওয়াশিংটন।

যাইহোক, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনেকে গোপনে দূরপাল্লার মিসাইল সিস্টেম দেওয়ার বিষয়ে সবুজ সংকেত দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এটি ৩০০ কিলোমিটার (১৮৬ মাইল) পর্যন্ত দূরত্বে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পারে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, ‘আমি নিশ্চিত করতে পারি, প্রেসিডেন্টের সরাসরি নির্দেশে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার এটিএসিএমএস প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র।’

তিনি আরও বলেন, কিয়েভের অনুরোধে ইউক্রেনের অপারেশনাল নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য শুরুতে এই বিষয়ে কোনও ঘোষণা দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।

ইতোমধ্যে কতগুলো অস্ত্র পাঠানো হয়েছে তা স্পষ্ট নয়, তবে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ওয়াশিংটন এই ধরনের আরও অস্ত্র পাঠানোর পরিকল্পনা করেছে।

তিনি বলেছেন, ‘তারা (লড়াইয়ের ক্ষেত্রে) পার্থক্য তৈরি করবে। কিন্তু আমি যেমন এই মঞ্চ থেকে আগেই বলেছি... কঠিন সমস্যার কোনও জাদুকরী সমাধান নেই।’

এদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানিয়েছে, অধিকৃত ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার একটি বিমানঘাঁটিতে আঘাত হানতে গত সপ্তাহে প্রথমবারের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার রাতে অধিকৃত বন্দরনগরী বারডিয়ানস্কে রাশিয়ার সেনাদের ওপর হামলায় নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কিয়েভ বারবারই পশ্চিমা সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়ে এসেছে কারণ তাদের হাতে থাকা গোলাবারুদের মজুদ শেষ হয়ে এসেছিল এবং বিপরীতদিকে রাশিয়াও তাদের অবস্থান আরও দৃঢ় করছিল।

এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ইউক্রেনে সামরিক সহায়তার লক্ষ্যে ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিদেশি সহায়তা প্যাকেজ বিল পাস হয়। পরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এতে স্বাক্ষর করেন। 

আইনে স্বাক্ষর করার পরে তিনি বলেন, ‘এটি আমেরিকাকে আরও নিরাপদ করতে চলেছে, বিশ্বকে আরও নিরাপদ করতে চলেছে।’