সংগৃহীত ছবি
কারণে-অকারণে এমন কোনো মন্তব্য করা যাবে না যেন ভারতের মনক্ষুণ্ন হয়। এমনিতেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সাথে বিএনপির সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে।
কিছুদিন আগেই ভারতীয় পণ্য বর্জনে সরব হয়েছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। নিজের গায়ের শাল পুড়িয়ে ভারত বিরোধিতায় নামেন তিনি। এবার সেই বিরোধিতা উসকে দিতে ফের তৎপর হয়েছেন এই নেতা। তবে প্রতিবেশী দেশটি নিয়ে এমন কর্মকাণ্ডে উল্টো রিজভীর ওপরই ক্ষুব্ধ দলের খোদ শীর্ষ নেতারা।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে কার্যত গা-ঢাকা দিতে হয়েছিল’ এমন দাবি ঘিরে ঘটনার সূত্রপাত। কিছুদিন আগেই দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। যদিও মার্কিন প্রশাসন এই বক্তব্য সরাসরি নাকচ করে দিলেও মানতে নারাজ রিজভী।
গণমাধ্যমে এক সাক্ষাতকারে বিএনপির এই নেতা বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছে বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কিন্তু ভারত যে এটা চায়নি তা স্পষ্ট হলো পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তীর বক্তব্যে। কৌশলে এই বিরোধিতা উসকে দিয়ে রিজভী বলেন, নির্বাচনে ভারত নিজেদের সর্বশক্তি নিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে দাঁড়িয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রও যেন নির্বাচন ইস্যুতে বাংলাদেশে বাড়তি কোনো চাপ প্রয়োগ না করে সেই চেষ্টাও করেছিল। কাজেই সবকিছুর পেছনে নাটের গুরু যে ভারত তা এখন প্রমাণিত।
বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলছেন, দেশের রাজনীতিতে ভারত খুবই সেনসিটিভ ইস্যু। কেননা প্রতিবেশী দেশটি যাকে চাইবে সেই ক্ষমতায় থাকবে। কাজেই কারণে-অকারণে এমন কোনো মন্তব্য করা যাবে না যেন ভারতের মনক্ষুণ্ন হয়। এমনিতেই সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির সাথে বিএনপির সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। সর্বশেষ পণ্য বর্জন ইস্যুতে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে সম্পর্ক ভালো করতে চাইলেও তা হতে দিচ্ছেন না রিজভী। তার এমন বক্তব্যের জেরে নিজ দলের শীর্ষ নেতাদের তীব্র রোষানলে পড়েছেন তিনি। এমনকি হাইকমান্ড থেকে তাকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে। রিজভীর বেফাঁস মন্তব্যের কারণে খামোখা বিএনপি দল হিসেবে ভারতের চক্ষুশূল হচ্ছে বলেও মনে করছেন তারা। তাই ভবিষ্যতে ভারত ইস্যুতে তাকে আর কোনো মন্তব্য থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দিয়েছে দলীয় হাইকমান্ড।