ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৮ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সিনেমা বাঁচাবো নাকি সিনেমা হল?

প্রকাশিত: ১৬:০০, ২৮ মার্চ ২০২৩

সিনেমা বাঁচাবো নাকি সিনেমা হল?

সিনেমা বাঁচাবো নাকি সিনেমা হল?

দেশের সিনেমা দর্শক ফিরিয়ে আনছে সিনেমাহলে। যদিও ব্যবসাসফল সিনেমার সংখ্যা কম। অল্প কয়েকটি সিনেমা দিয়ে সারা বছরের খরচ তুলতে হিমশিম খায় সিনেমাহল কর্তৃপক্ষ। তাই কেউ কেউ বলছেন হিন্দি সিনেমা আনলে সিনেমাহল বাঁচবে। এ বিষয়ে গত পর্বে কথা বলেছিলেন তিন জন চলচ্চিত্র পরিচালক। আজ দ্বিতীয় ও শেষ পর্বে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন সিনেমা সংশ্লিষ্ট দুই জন।

আলোচিত নির্মাতা অনন্য মামুন। তিনি নিয়মিতই সিনেমা বানাচ্ছেন। নানা কারণে থাকছেন আলোচনায়। তিনি সিনেমা সংশ্লিষ্টদের প্রতি উল্টো প্রশ্ন রাখলেন, আমাদের সমস্যা হলো নিজেদের নিয়েই শুধু ভাবি। ভবিষ্যত প্রজন্মকে নিয়ে ভাবি না। যারা বাইরের ছবির বিরোধিতা করেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন এক সময় হল সংখ্যা ১৪০০ ছিলো; হিন্দি সিনেমা আসেনি। তারপরও কেন হল সংখ্যা ৫০ – এ নেমে গেল? 

তিনি আরও বলেন, এখন প্রতিযোগিতার যুগ। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিযোগীতা করে টিকে থাকতে হবে। একটি সিনেমা বানিয়ে দর্শকের উপর জোর করে চাপিয়ে দিলে তো হবে না। সিনেমা দেখার সিদ্ধান্ত নিবে দর্শক। আমরা সেখানে তাদের ইচ্ছে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। 

 

দেশের সিনেমা

মামুন সবশেষে বলেন, হিন্দি সিনেমা চললে হলগুলো ব্যবসা করতে পারবে। তারা টিকে থাকতে পারবে। ঢালাওভাবে তো বাইরের সিনেমা চালানো হবে না। সরকার দুই বছরের জন্য অনুমতি দিচ্ছে। প্রথম বছর ১০টি এবং দ্বিতীয় বছর ৮টি সিনেমা চলবে। বাইরের সিনেমা চললে সিনেমাহলের মান উন্নত হবে। দর্শক সিনেমাহলমুখী হবে।

অনন্য মামুনের কথার সাথে মিল খুঁজে পাওয়া গেল নারায়ণগঞ্জের ‘সিনেস্কোপ’ – এর নির্বাহী পরিচালক জনাব রবির কণ্ঠে। তিনি বললেন, গেল পঞ্চাশ বছর আমরা সিনেমা বাঁচিয়েছি। তাই তো হল সংখ্যা ১৪০০ থেকে ৫০ – এ নেমে এসেছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সিনেমাহল হারিয়ে যাবে। আর সিনেমাহল না থাকলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থাকবে না। আমাদের বিকল্প চিন্তা করতে হবে। বাইরের সিনেমা কিন্তু দর্শক দেখছে। যদি আমরা দর্শককে সেসব সিনেমা দেখার সুব্যবস্থা করে দিতে পারি তাহলে সংশ্লিষ্ট সকলে উপকৃত হতে পারি। একটা ফ্লো তৈরী হলে দর্শক দেশের সিনেমাও দেখবে।

 

দেশের সিনেমা

রবি যোগ করে আরও বললেন, আরেকটি বিষয় ভাবা দরকার। সেটি হলো এখন সিনেমাহলের চেয়ে ওয়েব প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব বেড়েছে। সিনেমা মুক্তির কিছুদিনের মধ্যে সেটি ওটিটিতে চলে আসছে। তখন কিন্তু সে সিনেমা আর হলে গিয়ে দেখতে চাইবে না দর্শক। অথচ, সে সিনেমাটি হয়তো হলে ব্যবসা করছিলো। তাই এ বিষয়টি বিবেচনা রাখা প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের।

সবশেষে রবি জানান, গেল বছর ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ ছিলো ব্যবসা সফল দুটি সিনেমা। সিনেমাহল টিকে থাকতে হলে বছরে এরকম অন্তত ৫টি সিনেমা দরকার। আমরা তা দিতে পারছিনা বলেই আজ অধিকাংশ সিনেমাহল বন্ধ হয়ে মার্কেট হয়ে গেছে। 
সিনেমা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপের মাধ্যমে বোঝা যায় দেশের সিনেমাহল বাঁচানোর পক্ষে সবাই। পাশাপাশি দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিকেও বাঁচাতে হবে। সে লক্ষ্যে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। যার বাস্তবায়ন ফল বয়ে আনবে সিনেমা ও সিনেমাহল উভয়ের জন্য।