![বঙ্গবন্ধু যোগ্যদেরই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতেন: আব্দুল মান্নান বঙ্গবন্ধু যোগ্যদেরই গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতেন: আব্দুল মান্নান](https://www.gazipurkotha.com/media/imgAll/2023September/Screenshot_14-2309141115.jpg)
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর অনেক গুণের সঙ্গে একটি বড় গুণ ছিল, তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে যোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন করতেন। বর্তমানের মতো তখন পর্যন্ত দেশে আমলা বা প্রশাসকদের লাগামহীন দৌরাত্ম্য শুরু হয়নি। আমলা ছাড়া কোনো দেশ চলবে না, কিন্তু সেই আমলা যখন দেশে আমলাতন্ত্র কায়েম করে তখন দেশের সর্বনাশের শুরু হয়। সেটি বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের ২৩ বছরে দেখেছেন, উপলব্ধি করেছেন, তার শিকার হয়েছেন। পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থার প্রধান কারণ দেশটির সামরিক, বেসামরিক আমলাদের রাষ্ট্রীয় কাজে অযৌক্তিকভাবে হস্তক্ষেপ এবং তাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করার মানসিকতা।
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাচিন্তা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক আব্দুল মান্নান বলেন, কুদরত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনে বলা হয়েছিল দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে একমুখী। শিক্ষার মূল লক্ষ্য হবে শুধু শিক্ষিত বা অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন মানুষ তৈরি করা নয়, মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ তৈরি করা। প্রাথমিক শিক্ষা হবে একমুখী। দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর বছর পর পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে। হয়েছে উলটো। এখন দেশে সনাতন প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াও আছে বিভিন্ন প্রকারের ইংরেজি শিক্ষা মাধ্যম। এসব স্কুলের অধিকাংশে শিক্ষার্থীদের বাঙালির ইতিহাস বা সংস্কৃতি শেখার কোনো সুযোগ নেই। এখানে শেখানো হয় না- কেমন করে বাংলাদেশ এলো। একাধিক প্রজন্মতো না জেনেই বেড়ে উঠেছে- একাত্তরে বাঙালি কার সঙ্গে যুদ্ধ করেছিল। অথচ বঙ্গবন্ধু সবসময় উপলব্ধি করতেন একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বুনিয়াদ হচ্ছে তার প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা। এই গুরুত্বপূর্ণ ভিত শক্ত না হলে পরবর্তী ধাপগুলো নড়বড়ে হতে বাধ্য।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিম আফরিন ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক (ইংরেজি) কাজী তাসলিমা নাসরিন জেরিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌল্লাহ।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেন জ্ঞান চর্চার কেন্দ্র হয়। তিনি চেয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তৈরি হবে শিক্ষিত বুদ্ধিজীবী। আজকে দেশে অর্ধশতাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে শিক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন। সবাই মিলে সেই স্বপ্ন পূরণে কাজ করতে হবে। আমি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আহ্বান করবো তারা যেন প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতার শিক্ষা দেন।
সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন চিটাগাং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক চৌধুরী। এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক বেনু কুমার দে ও চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী।