ঢাকা,  মঙ্গলবার  ৩০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

গোলাপি রঙের সাইকেলে চড়ে বিদ্যালয়ে যাবে রিয়ারা

প্রকাশিত: ২২:৩৪, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

গোলাপি রঙের সাইকেলে চড়ে বিদ্যালয়ে যাবে রিয়ারা

গোলাপি রঙের নতুন সাইকেল হাতে পেয়ে আনন্দিত শিক্ষার্থীরা। ছবিটি রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা প্রশাসন স্কুল মাঠ থেকে তোলা।

রিকশাভাড়ার টাকা না থাকায় প্রতিদিন দুই কিলোমিটার পথ হেঁটে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করত রংপুরের তারাগঞ্জের ইকরচালী উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়া খাতুন। এখন সে হেঁটে নয় নিজের বাইসাইকেলে প্যাডল ঘুরিয়ে বিদ্যালয়ে যাবে। আজ বুধবার রিয়ার হাতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপহারের বাইসাইকেল তুলে দেওয়া হয়েছে। রিয়ার বাড়ি লক্ষ্মীপুর গ্রামে। 

বাইসাইকেল হাতে পেয়ে আনন্দে রিয়ার চোখ-মুখ ঝলমল করছিল। বারবার নতুন সাইকেলটি নেড়েচেড়ে দেখছিল সে। জানতে চাইলে রিয়া বলে, ‘আর পায়ে ব্যথা হবে না। হেঁটে নয়, এখন গোলাপি রঙের সাইকেল চড়ে স্কুলে যাব। ছুটির পর বাড়ি ফিরতে আর আগের মতো দেরি হবে না। বেলা ডুবার আগেই সাইকেল ঘুরিয়ে ঘরে ফিরব। বই পড়ব।’ 

শুধু রিয়া খাতুনই নয়, তাঁর মতো উপজেলার ১০টি বিদ্যালয়ের ৩৭ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীকে আজ উপহার হিসেবে বাইসাইকেল দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) অর্থায়নে উপজেলা প্রশাসন স্কুল মাঠে এসব সাইকেল বিতরণ করা হয়। 

বাইসাইকেল পেয়ে মাঠেই চালিয়ে দেখছিল পাটোয়ারিপাড়া গ্রামের ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া খুশি মনি। সে বলে, ‘স্কুলে ভর্তি হয়েছি থেকেই হেঁটে যাওয়া আসা করি। আজ সরকারি সাইকেল পাইলাম। এটাতে চড়ে বাড়ি থেকে স্কুল, স্কুল থেকে বাড়ি দ্রুত যাব। লেখাপড়া করার সময় বেশি পাব। যারা আমাদের সাইকেল দিল তাঁদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’ 

ছুট মেনানগর গ্রামের ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী আরিচা আক্তার বলে, ‘স্বপ্নেও ভাবি নাই আমার নিজের একটা সাইকেল হবে। হেঁটে যাওয়ায় ধুলাবালিতে কাপড় নষ্ট হতো। হেঁটে যেতে কষ্ট হতো, পা ব্যথা করত। এখন আর এসব কষ্ট থাকবে না। সরকারি সাইকেলে চড়ে স্কুলে যাব।’ 

মেয়ের সঙ্গে বাইসাইকেল নিতে আসা এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কমল চন্দ্র রায় বলেন, ‘কামাইর টাকা দিয়া সংসার খরচই হয় না। ছাওয়ার স্কুলোত যাওয়া আসার রিকশা ভাড়া কোনঠে থাকি দেই। টিফিনের দুই চার টাকায় দিবার পারি না। হাঁটি স্কুল গেইছে ছাওয়া গুলা। আইজ বেটিটা সাইকেল পাইল। মুই খুব খুশি সরকারি লোকোক ধন্যবাদ দেও।’ 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুবেল রানা বলেন, ‘২০২২-২০২৩ অর্থবছরের এডিপির অর্থায়নে সাইকেলগুলো কেনা ছিল। সেগুলো আজ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হলো। শিক্ষার্থীরা সাইকেলে বিদ্যালয় যাবে। এতে সময় বাঁচবে, কষ্ট কমবে। পড়াশোনার ক্ষেত্রে সাইকেলগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।’