ঢাকা,  মঙ্গলবার  ৩০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনেও ছিল যুক্তরাষ্ট্র : মেয়র লিটন

প্রকাশিত: ২৩:০৬, ২৯ আগস্ট ২০২৩

বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনেও ছিল যুক্তরাষ্ট্র : মেয়র লিটন

.

বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।

তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাতির পিতাকে হত্যা করার জন্য তাদের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত ঢাকায় যিনি ছিলেন, সেই ব্যক্তিকে দিয়ে সকল কলকাঠি নাড়িয়ে মেজর ডালিম-রশিদদেরকে ডেকে নিয়ে তাদেরকে বসিয়ে, চক্রান্ত করে গ্রিন সিগনাল দেয়। অর্থাৎ তোমরা হত্যা করতে পারো, আমরা তোমাদের পেছনে আছি। এই সিগনাল দেওয়ার কারণেই হিমালয় সম একটা মানুষ, যাকে শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের মানুষও মহামানব হিসেবে জানতো সেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সাহস সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত অথবা পাকিস্তান থেকে পরে আসা মেজর ডালিম, রশিদ, হুদা, মজিদ, মাজেদ, শাহারিয়ার এই হত্যাকাণ্ড করার সাহস পেয়েছিল। সেটিও কিন্তু এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোডে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শোকসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র লিটন এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, আমেরিকার নেতৃত্বে বা প্রেসক্রিপশনে দেশ স্বাধীন হয়নি। তারা যে আজ বাংলাদেশকে প্রেসক্রিপশন দেয়, মাথা ঘামাতে আসে এটা ঠিক নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়েও সপ্তম নৌবহর পাঠিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছিল। তখন বন্ধু দেশ ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল, তাই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। তখন ইন্দিরা গান্ধী আমাদের এক কোটি মানুষকে দেখেছিলেন। না হলে এই মুক্তিযুদ্ধ অন্যদিকে চলে যেতে পারত।

মেয়র লিটন বলেন, জিয়াউর রহমান জাতির পিতার হত্যাকারীদের ক্ষমা করে দেন। তিনিই তাদেরকে নানান জায়গায় পুনর্বাসন করেছিলেন। তার সময়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলায় হাজার হাজার সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অফিসার জোয়ানদের বিনা বিচারে হত্যা করা হয়েছিল। তিনি কারফিউ দিয়েছেন, মানুষকে নির্যাতন করেছেন। তার সময়ে অসংখ্য নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছে। জিয়াউর রহমান জাতির পিতাকে হত্যার কলকাঠি নেড়েছেন।

খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমরা জাতি হিসেবে গর্বিত যে আমাদের পূর্বপুরুষরা কোনো না কোনোভাবে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত। সেই জাতি আমরা, আমাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। এমন হাজার হাজার মা ছিলেন যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় সন্তানকে দেশের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। আমাদের তারা ভয় দেখায় যে আগামীতে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনা যাবে না, দেশে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না? তাদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী এ দেশে নির্বাচন হবে না। আজকে দেশে যে অভূতপূর্ব উন্নতি এটা শেখ হাসিনার হাত দিয়ে হয়েছে। উন্নয়নের নানান সূচক এখন দৃশ্যমান। বাংলাদেশের মানুষের আয় বেড়েছে, এটাও উন্নয়নের সূচক।

তিনি বলেন, বিএনপি বলছে অক্টোবর থেকে লাগাতার আন্দোলন করবে। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করুক আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে ট্রেন পোড়াবেন, বাস পোড়াবেন, সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাবেন তা হবে না। নেত্রী বলে দিয়েছেন এগুলো আর মেনে নেওয়া হবে না।

সিরাজগঞ্জকে নৌকার উর্বর ঘাটি উল্লেখ করে মেয়র লিটন বলেন, আমরা আগামীতেও এখানকার ৬টি আসন পাব ইনশাআল্লাহ। দেশের এতো উন্নয়ন মানুষ ভুলে যেতে পারে না। আর যাই হোক তারেক রহমান লন্ডনে বসে বাংলাদেশের মাটিতে ক্ষমতায় যাওয়ার যে নকশা করছে, বাংলাদেশের মানুষ তা হতে দেবে না।

সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কেএম হোসেন আলী হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুস সামাদ তালুকদারের সঞ্চালনায় শোকসভায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এসএম কামাল হোসেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা জাহান কবিতা, সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর)  আসনের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না, সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ-রায়গঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. আব্দুল আজিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সূর্য, আলহাজ ইসহাক আলী প্রমুখ।