ঢাকা,  বুধবার  ০১ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

রাসুল (সা.) সপ্তাহের যেসব দিন রোজা রাখতেন

প্রকাশিত: ০১:১২, ২১ অক্টোবর ২০২৩

রাসুল (সা.) সপ্তাহের যেসব দিন রোজা রাখতেন

সংগৃহীত ছবি

মহান আল্লাহ মানবজাতি ও জিনজাতিকে তাঁর ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছেন। তাই আমাদের উচিত, জীবনের প্রতিটি সময় এমনভাবে অতিবাহিত করা, যাতে তা ইবাদতে গণ্য হয়। আজকে আমরা জানব মুমিনের সাপ্তাহিক কিছু বিশেষ আমল সম্পর্কে, যেগুলোর প্রতি রাসুল (সা.) বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন।

সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা

সোম ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহের অন্যতম বরকতময় দিন।

 


এই দিনে বান্দার আমল আল্লাহর দরবারে উত্থাপিত হয়, এই দিনগুলোতে জান্নাতের দরজা খোলা হয়। অনেক বান্দাকে ক্ষমা করা হয়। তাই মুমিনের উচিত নবীজি (সা.)-এর দেখানো পদ্ধতিতে সপ্তাহের এই দিনগুলোর মূল্যায়ন করা। এই দিনগুলোর ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার (আল্লাহ তাআলার দরবারে) আমল পেশ করা হয়।

সুতরাং আমার আমলসমূহ রোজা পালনরত অবস্থায় পেশ করা হোক—এটাই আমার পছন্দনীয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৪৭)
অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেছেন, প্রতি সোমবার ও বৃহস্পতিবার জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। এরপর এমন সব বান্দাকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়, যারা আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার স্থাপন করে না। তবে সে ব্যক্তিকে নয়, যার ভাই ও তার মধ্যে শত্রুতা বিদ্যমান।


এরপর বলা হবে, এ দুজনকে আপস-মীমাংসা করার জন্য অবকাশ দাও, এ দুজনকে আপস-মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও, এ দুজনকে আপস-মীমাংসা করার জন্য সুযোগ দাও। (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৩৮)
আল্লামা জারকানি (রহ.) বলেন, সোম ও বৃহস্পতিবার সপ্তাহের অন্যতম ফজিলতপূর্ণ দিন। তাই এই দিনে নবীজি (সা.) রোজা রাখার মাধ্যমে এই দিনগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতেন। এবং তাঁর উম্মতরা এই দিনে রোজা রাখাকে পছন্দ করতেন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে অধিক দরুদ পাঠ করা : নবীজি (সা.)-এর যত বেশি দরুদ পড়া যায় ততই মঙ্গল।


দরুদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত পাওয়া যায়, দুশ্চিন্তা ও কষ্ট দূর হয়, মাগফিরাত পাওয়া যায়। তাই সপ্তাহের প্রতিদিনই অধিক হারে দরুদ পড়ার চেষ্টা করা আবশ্যক। কমপক্ষে জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে) অধিক হারে দরুদের আমল করা উচিত। কেননা নবীজি (সা.) বলেছেন, তোমাদের সর্বোত্তম দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিনটি উৎকৃষ্ট। কাজেই এই দিনে তোমরা আমার প্রতি বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করবে। কেননা তোমাদের দরুদ আমার কাছে পেশ করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন, তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের দরুদ আপনার কাছে কিভাবে উপস্থিত করা হবে, আপনি তো মাটির সঙ্গে মিশে যাবেন? বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরা বলল, আপনি তো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন। তিনি (সা.) বলেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ নবীদের দেহকে মাটির জন্য হারাম করে দিয়েছেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৩১)
জুমার দিন সুরা কাহফ পড়া : জুমার দিন সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা অন্যতম সাপ্তাহিক আমল। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সুরা কাহফ পাঠ করবে তার জন্য দুই জুমার মধ্যবর্তীকাল জ্যোতির্ময় হবে। (বায়হাকি)

জুমার নামাজ আদায় করা :  জুমার নামাজ সপ্তাহের মধ্যবর্তী সময়ের পাপগুলো মোচনে সহায়তা করে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এক জুমা থেকে অন্য জুমা এবং উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের সব গুনাহের জন্য কাফফারাহ হয়ে যায় যদি সে কবিরা‌ গুনাহতে লিপ্ত না হয়। (মুসলিম, হাদিস : ৪৩৮)

তাই মুমিনের উচিত এই নামাজের ব্যাপারে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। কোনো যৌক্তিক ওজর ছাড়া এই নামাজ ত্যাগ করলে মহান আল্লাহ বান্দার অন্তরে মোহর মেরে দেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি (বিনা কারণে) অলসতা করে পর পর তিনটি জুমা ত্যাগ করে মহান আল্লাহ তার অন্তরে সিলমোহর মেরে দেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৫২)