ঢাকা,  শনিবার  ২৭ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মানুষের দোয়ায় শামিল হওয়ার উপায়

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ২৮ মে ২০২১

মানুষের দোয়ায় শামিল হওয়ার উপায়

আমরা সবাই অন্যের কাছে দোয়া প্রত্যাশা করি। সুযোগ পেলেই দ্বিনদার মানুষের কাছে নিজের জন্য এবং নিজের পরিবার-পরিজনের জন্য দোয়া চেয়ে থাকি। কিন্তু ইসলামী শরিয়ত আমাদের জন্য এমন কিছু উপায় করে দিয়েছে, যা অবলম্বন করে আমরা অনায়াসে মানুষের দোয়ায় শামিল হতে পারি। সে উপায়গুলো হলো—

নেক সন্তান প্রতিপালন করা

মানুষের দোয়া লাভের অন্যতম উপায় হলো নেক সন্তান। নেককার সন্তান মাতা-পিতার সওয়াব লাভের উপায়। কেননা এমন কত পরহেজগার মানুষ আছে, যাদের মৃত্যুর পর আমলের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু যে মাতা-পিতা নেককার-পরহেজগার সন্তান রেখে কবরে যান, মৃত্যুর পর তাঁর নেকি অর্জনের পথ বন্ধ হয় না। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার আমলের পথ বন্ধ হয়ে যায়, তিনটি আমল ছাড়া, সদকায়ে জারিয়া, এমন ইলম যার দ্বারা উপকৃত হওয়া যায় এবং নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৬৩১)

পরোপকার ও সদাচরণ

মানুষের দোয়ার ছায়ায় আশ্রয় লাভের অন্যতম উপায় হলো পরোপকার ও সদাচরণ। মানুষ উপকারের মাধ্যমে অন্যের মন জয় করতে পারে। তাই উপকারকারীর জন্য দোয়া করার ব্যাপারে রাসুল (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে আশ্রয় কামনা করে, তাকে নিরাপত্তা দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে যাচ্ঞা করে, তাকে তা দিয়ে দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের দাওয়াত দেয়, তার দাওয়াত গ্রহণ করো। আর যে ব্যক্তি তোমাদের উপকার করে, তাকে বিনিময় দিয়ে দাও। যদি বিনিময় আদায়ের মতো কোনো কিছু না থাকে, তার জন্য দোয়া করো, যত দিন না তুমি বুঝবে যে তার উপকারের বিনিময় আদায় হয়েছে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৭২)

মানুষের কাছে দোয়া চাওয়া

মানুষের দোয়ায় নিজেকে শামিল করার আরেকটি উপায় হলো সৎকর্মশীল বান্দাদের কাছে দোয়া চাওয়া। কেননা নবী (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম ব্যক্তি তার ভাইয়ের অনুপস্থিতে দোয়া করলে তা কবুল হয়। তার মাথার কাছে একজন ফেরেশতা নিয়োজিত থাকেন। যখন সে তার ভাইয়ের কল্যাণের দোয়া করে, তখন নিয়োজিত ফেরেশতা বলেন, আমিন! তোমার জন্যও অনুরূপ কল্যাণ বর্ষিত হোক।’ সাফওয়ান (রহ.) বলেন, আমি বাজারে গিয়ে আবুদ দারদা (রা.)-এর দেখা পেলাম, তিনিও আমাকে এই হাদিস শোনালেন। (মুসলিম, হাদিস : ২৭৩৩)

হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা বা হাঁচির জবাব দেওয়া

হাঁচির মাধ্যমে হাঁচিদাতা এবং এর জবাবদাতা পরস্পর পরস্পরের দোয়ায় নিজেকে শামিল করে নিতে পারে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ হাঁচি দেওয়া পছন্দ করেন এবং হাই তোলা অপসন্দ করেন। যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলে, তখন তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ (আল্লাহ আপনার ওপর দয়া করুন) বলা ওয়াজিব হয়ে যায়। আর হাই তোলা শয়তাদের পক্ষ থেকে হয়। কাজেই তোমাদের কোনো ব্যক্তির হাই উঠলে, সে যেন সাধ্যানুযায়ী তা রোধ করে। কেননা হাই তুললে শয়তান তাকে দেখে হাসে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬২২৩)

সালামের প্রসার ঘটানো

সালামের আদান-প্রদানের মাধ্যমে মুসলিমরা পরস্পরের জন্য দোয়া করে থাকেন। সালাম দেওয়া সুন্নত এবং জবাব দেওয়া ওয়াজিব। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একজন মুমিনের ওপর অন্য মুমিনের ছয়টি হক আছে। যথা—(১) যখন কোনো মুমিনের রোগ-ব্যাধি হয়, তখন তার সেবা করা, (২) কেউ মারা গেলে তার জানাজা ও দাফন-কাফনে উপস্থিত হওয়া, (৩) কেউ দাওয়াত করলে তা গ্রহণ করা অথবা কারো ডাকে সাড়া দেওয়া, (৪) সাক্ষাৎ হলে সালাম দেওয়া, (৫) হাঁচি দিলে জবাব দেওয়া এবং (৬) উপস্থিত-অনুপস্থিত সব অবস্থায় মুমিনের কল্যাণ কামনা করা।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৭৩৭)

মহান আল্লাহ আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।

গাজীপুর কথা