ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ০২ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ভালুকায় গোপনে লাশ দাফনের চেষ্টা স্ত্রী, ছেলে ও বাসার মালিক আটক

প্রকাশিত: ১৬:৪০, ৬ আগস্ট ২০২০

ভালুকায় গোপনে লাশ দাফনের চেষ্টা স্ত্রী, ছেলে ও বাসার মালিক আটক

ময়মনসিংহের ভালুকায় খোকন মিয়া (৪৫) নামে এক রিকশাওয়ালার লাশ গোপনে দাফন করার উদ্দেশ্যে গোসল করানোর সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন পুলিশে খবর দেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ৩ জনকে আটক করেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ভোরে উপজেলার জামিরদিয়া গ্রামের কড়ইতলী এলাকায়। নিহত খোকন গফরগাঁও উপজেলার খারুয়ামোকন্দ গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খোকন মিয়া গত দুই বছর যাবত জামিরদিয়া এলাকার মাইন উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থেকে রিকশা চালাতেন। তার স্ত্রী দেলোয়ারা খাতুন (৪০) রিদিশা টেক্সাটাইল মিল ও ছেলে রাসেল মিয়া (২০) আরিফ কম্পোজিট মিলে চাকরি করেন।

তাদের সংসারে প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকত। ভোরে ছেলে রাসেল ডিউটির জন্য বাসা থেকে বের হয়ে দেখেন তার বাবা রশি দিয়ে কাঁঠাল গাছে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন। পিতার লাশ দেখতে পেয়ে রাসেল মিয়া বাসার মালিককে ডেকে আনেন। ঘটনাটি দেখালে তিনি (মাইন উদ্দিন) লাশটি দাফনের জন্য গফরগাঁওয়ে তাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন।
সকালে পিতার রিকশায় লাশ বসিয়ে মা দেলোয়ারা খাতুন লাশ ধরে রাখে আর ছেলে রাসেল রিকশা চালিয়ে লাশ গফরগাঁওয়ে গ্রামের বাড়িতে দাফনের জন্য নিয়ে যান।

খোকন মিয়ার বাড়িতে লাশ দাফনের জন্য নেয়ার পর লাশের গোসল দেয়ার সময় খোকনের অণ্ডকোষ থেঁতলানো, পিঠ ও হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন দেখে ছেলে ও স্ত্রীকে স্থানীয় লোকজন আটক করে গফরগাঁও থানা পুলিশে দেন।

গফরগাঁও থানার ওসি (তদন্ত) পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন মৃতের গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে ভালুকা মডেল থানা পুলিশকে খবর দেন। ভালুকা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার মালিক মাইন উদ্দিনকে তার বাসা থেকে থানায় নিয়ে আসেন। মৃত্যুর ঘটনা সন্দেহ হওয়ায় ভালুকা থানার এসআই ইকবাল হোসেন নিহতের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন।

পুলিশ ধারণা করছে- খোকনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গাছের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। বাসার মালিক মাইন উদ্দিন জানান, ভোরে নিহতের ছেলে আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলে জানায় তার বাবা ফাঁসিতে আত্মহত্যা করেছেন। আমি লাশ দেখে তাদের বলি লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। তারা রিকশা দিয়ে লাশ গফরগাঁওয়ে নিয়ে যায়।

গফরগাঁওয়ের রাওনা ইউপি চেয়ারম্যান সহাবোল আহম্মেদ জানান, মা ও ছেলে মিলে রিকশায় করে ভালুকা থেকে লাশ আনা ও গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে এ মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
লাশের সুরতহাল প্রস্তুতকারী ভালুকা মডেল থানার এসআই ইকবাল হোসেন জানান, নিহতের পায়ে, পিঠে ও অণ্ডকোষে আঘাতের চিহ্ন দেখে মনে হয় এটা আত্মহত্যা নয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্ত্রী ও ছেলেকে থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে।

ভালুকা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মাইন উদ্দিন জানান, এটা আত্মহত্যা নয়, ধারণা করা হচ্ছে এটা হত্যাকাণ্ড। লাশ উদ্ধারের জন্য নিহতের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ জনকে থানায় আনা হয়েছে।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন