ছবি: সংগৃহীত
চীনা মালিকানার অ্যাপ টিকটকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে মার্কিন কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও অ্যাপের লাইট সংস্করণের কারণে কম বয়সীদের ক্ষতির আশঙ্কায় কড়া পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে ৷
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে টিকটকের আবেদন উপেক্ষা করা সম্ভব নয়৷ চীনা মালিকানার এই অ্যাপ অসংখ্য কনটেন্ট ক্রিয়েটরের আয়ের উৎসও বটে ৷ কিন্তু ভারতের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে সেই অ্যাপ নিষিদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে ৷
কয়েক মাসের জটিলতার পর গত শনিবার মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ যখন ইউক্রেনের জন্য সামরিক সহায়তার প্রস্তাব অনুমোদন করলো, সেই ঘটনা সংবাদ শিরোনাম দখল করেছিল। তবে একই অধিবেশনে মার্কিন পার্লামেন্ট টিকটকের চীনা মালিক বাইটড্যান্স কোম্পানিকে সতর্ক করে দিয়েছে ৷
এক বছরের মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি টিকটকের মালিকানা হস্তান্তর না করলে জাতীয় পর্যায়ে সেটি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে পার্লামেন্টের প্রতিনিধি পরিষদ। উচ্চকক্ষ সিনেটেও বিলটি অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে ৷
অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা সত্ত্বেও টিকটকের প্রশ্নে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলের মধ্যে যথেষ্ট ঐকমত্য দেখা যাচ্ছে। টিকটকের মাধ্যমে চীনের সরকার যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব খাটাতে পারে বলে মার্কিন রাজনৈতিক নেতারা মনে করছেন। ফলে জাতীয় স্বার্থে এই প্রশ্নে কড়া অবস্থান নেওয়ার জন্য চাপ বাড়ছে ৷
এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও টিকটকের প্রশ্নে আরো কড়া অবস্থান নিচ্ছে। ইউরোপেও চীনের অযাচিত প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা কাজ করছে। আপাতত টিকটক লাইট রিওয়ার্ড প্রোগ্রাম বাতিল করার পথে এগোতে পারে এই রাষ্ট্রজোট ৷
শিশু-কিশোরদের নেশার আশঙ্কা দূর করতে টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট পদক্ষেপ না নিলে বৃহস্পতিবারই সেই কর্মসূচি বন্ধ করা হতে পারে। ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট নামের আইনকে হাতিয়ার করে ইইউ ক্ষতিকর ও বেআইনি কনটেন্ট মোকাবিলার চেষ্টা করছে। টিকটক অবশ্য ইইউ’র হুমকি সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করে জানিয়েছে, ১৮ বছরের কমবয়সীদের জন্য রিওয়ার্ডস হাব বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ থাকার কথা নয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে টিকটকের বিরুদ্ধে অন্য একটি তদন্ত শুরু হয়েছে ৷
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে টিকটক ব্যবহারকারীদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ মত প্রকাশের অধিকারের দোহাই দিয়ে নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করছে। চীনের কোম্পানি হওয়া সত্ত্বেও টিকটক একই কারণে সংশয় প্রকাশ করছে। অ্যাটলান্টিকের ২ প্রান্তের অনেক রাজনৈতিক নেতা ও দল প্রচারের স্বার্থে টিকটক ব্যবহারও করছে। এখনই পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞার পথে না গেলেও ইইউ টিকটকের উপর চাপ বজায় রাখছে। এমন পরিস্থিতিতে টিকটক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বাজার ধরে রাখতে অদূর ভবিষ্যতে সত্যি মালিকানা হস্তান্তর করবে কিনা, সে বিষয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে ৷
