ঢাকা,  শুক্রবার  ০৩ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

জুমার নামাজের ফরজ ও হারাম

প্রকাশিত: ১৫:৪০, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

জুমার নামাজের ফরজ ও হারাম

জুমার নামাজের ফরজ ও হারাম

جُمُعَة (জুমু’আহ) শব্দটি আরবি। এর অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া। যেহেতু সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন-মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সঙ্গে সে দিনের জোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরজরূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে ‘জুমার নামাজ’ বলা হয়।

আর এই জুমার নামাজের আগে খুতবা পাঠ নামাজেরই অংশবিশেষ। তাই খুতবা আরবিতে পাঠ করতে হয়। তবে খুতবা পাঠের আগে খতিব সাহেবরা মাতৃভাষায় খুতবার মূল বক্তব্যটুকু তুলে ধরলে শ্রোতা-মুসল্লিরা উপকৃত হয়।

জুমার নামাজের শর্ত বা ফরজ হলো খুতবা। খুতবা ব্যতীত জুমার নামাজ হয় না। উপস্থিত মুসল্লিদের জন্য শোনা ওয়াজিব। তাই খুতবা চলাকালে নিরর্থক কাজে ব্যস্ত থাকা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয়।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন খুতবার সময় যদি তুমি তোমার সঙ্গীকে ‘চুপ করো’ বলাও অনর্থক’। (বুখারি, হাদিস নম্বর: ১/১২৮)

উক্ত হাদিস দ্বারা সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয়, খুতবার সময় নিশ্চুপ হয়ে খুতবা শোনা ওয়াজিব ও কথাবার্তা বলা হারাম। তাই মুসল্লিদের উচিত খুতবার সময় কথাবার্তা থেকে বিরত থেকে অত্যন্ত মনোযোগী হয়ে খুতবা শোনা এবং যেসব কাজ নামাজে নিষিদ্ধ তা থেকে বিরত থাকা।

ফিকাহ শাস্ত্রের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ ফাতাওয়ায়ে শামিতে একটি মূলনীতি উল্লেখ হয়েছে, যেসব কর্ম নামাজের মধ্যে হারাম, তা খুতবা চলাকালীন সময়ও হারাম। যেমন- কথাবার্তা বলা, পানাহার করা ইত্যাদি। (ফাতাওয়ায়ে শামি: ৩/৩৫)।

অনেক মুসল্লি খুতবা চলাকালে বিভিন্ন কাজে লিপ্ত হয়, যা সম্পূর্ণ শরিয়ত পরিপন্থী এবং হারাম। এছাড়া অনেক মসজিদে খুতবা চলাকালে চাঁদার বাক্স চালানো হয়, এটাও শরিয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েজ ও অশোভনীয়। তাই খুতবার সময় এসব নাজায়েজ কর্ম পরিহার করে মনোযোগী হয়ে খুতবা শ্রবণ করা অত্যন্ত জরুরি।

উল্লেখ্য, জুমার দিন মসজিদে প্রচুর পরিমাণ মানুষের সমাগম হয়, তাই এ সুযোগে জুমার খুতবার সময় সমাজে প্রচলিত অন্যায়-অবিচার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি, মজুতদারি, কালোবাজারি, মুনাফাখোরি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য সামাজিক অবক্ষয় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করলে মুসল্লিরা সতর্ক হবে। বিধ্বস্ত মানবতার বিরুদ্ধে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হবে।

এছাড়াও অসহায়-গরিব, অভাবগ্রস্ত পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন এবং আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে সামর্থ্যবানদের সহযোগিতার দিকনির্দেশনা দেয়া যায়। এ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণীর সঠিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ এবং আদর্শ জাতি গঠনে ও সামাজিক সচেতনতা তৈরিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেন খতিব সাহেবরা।