ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমলে দেশেও কমবে: কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৬:৪৩, ৪ আগস্ট ২০২২

আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমলে দেশেও কমবে: কৃষিমন্ত্রী

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক

কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ইউরিয়া সারের দাম কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধির ফলে উৎপাদনে প্রভাব পড়বে না বলে। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমলে দেশেও দাম কমানো হবে।  

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, সরকার ইউরিয়া সারের সুষম ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করে আসছে। কৃষকদের মধ্যে ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহার করার প্রবণতা রয়েছে। ডিএপি সারে শতকরা ১৮ ভাগ নাইট্রোজেন বা ইউরিয়া সারের উপাদান রয়েছে। সেজন্য ডিএপির ব্যবহার বাড়িয়ে ইউরিয়া সারের অপ্রয়োজনীয় ও মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে আনার জন্য সরকার ডিএপি সারের মূল্য প্রতিকেজি ৯০ টাকা থেকে কমিয়ে প্রথমে ২৫ টাকা (২০০৯ সালে) এবং পরে ২০১৯ সালে ২৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১৬ টাকা করে কৃষকদের দিয়ে যাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে বিগত কয়েক বছরে ডিএপি সারের ব্যবহার দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে ডিএপির ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে ভেবেছিলাম ইউরিয়া সারের ব্যবহার কমবে, কিন্তু কমেনি। দাম বৃদ্ধির ফলে ইউরিয়ার ব্যবহার কমবে বলে আশা করি।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে সব ধরনের সারের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। বর্তমানে ইউরিয়া ৭ লাখ ২৭ হাজার টন, টিএসপি ৩ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ৬ লাখ ৩৪ হাজার টন, এমওপি ২ লাখ ১০ হাজার টন মজুদ রয়েছে। আর আমন মৌসুম পর্যন্ত (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চাহিদা হলো- ইউরিয়া ৬ লাখ ১৯ হাজার টন, টিএসপি ১ লাখ ১৯ হাজার টন, ডিএপি ২ লাখ ২৫ হাজার টন ও এমওপি ১ লাখ ৩৭ হাজার টন রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দেশের কোথাও যাতে কেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কৃত্রিম সংকট তৈরির মাধ্যমে দাম বেশি নিলে 
সংশ্লিষ্টদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।

রাজ্জাক বলেন, ফসলের জমিতে সুষম সার প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ইউরিয়া সারের বর্তমান ব্যবহার কমপক্ষে ২০ শতাংশ কমিয়ে ইউরিয়ার ব্যবহার যৌক্তিক পর্যায়ে রাখতে পারি। এতে ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না, বরং উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে কৃষকের খরচও কমবে। এটি করতে হলে আমাদের কৃষক ভাইসহ সবার সচেতনতা প্রয়োজন। 

কৃষিমন্ত্রী বলেন, নন ইউরিয়া সার (টিএসপি, ডিএপি, এমওপি) বছরে ব্যবহার হয় ৩২ লাখ টনের বেশি। এর পুরোটাই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। এসব সারের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে ৪ গুণ বেড়েছে, কিন্তু দেশে দাম বাড়াইনি। কাজেই ইউরিয়া সারের কেজিতে ৬ টাকা দাম বৃদ্ধির ফলে ফসলের উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। ইউরিয়া সারের সুষম ব্যবহার করলে কৃষকের উৎপাদন খরচও বাড়বে না। 

উল্লেখ্য, সরকার ইউরিয়া সারের দাম ১ আগস্ট থেকে কেজিতে ৬ টাকা বৃদ্ধি করে ডিলার পর্যায়ে সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য প্রতিকেজি ১৪ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে প্রতিকেজি ২০ টাকা এবং কৃষক পর্যায়ে প্রতিকেজি ১৬ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে প্রতিকেজি ২২ টাকা পুনঃনির্ধারণ করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিকেজি ইউরিয়ার সারের বর্তমান দাম ৮১ টাকা। 

কৃষিসচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন