ঢাকা,  শুক্রবার  ০৩ মে ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

পাকিস্তান উন্নয়ন দেখে, বিএনপি উন্নয়ন দেখে না: কাদের

প্রকাশিত: ১৫:২২, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

পাকিস্তান উন্নয়ন দেখে, বিএনপি উন্নয়ন দেখে না: কাদের

ফাইল ছবি

বাংলাদেশের অভূতপুর্ব উন্নয়ন পরিক্রমা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের করা মন্তব্যে দেশের বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা নিতে বিএনপির প্রতি পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর করা বক্তব্য থেকে দলটির শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে বাংলাদেশের যে উন্নতি, যে উচ্চতা, তা দেখে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ লজ্জিত হোন। তিনি বলেছেন, তৎকালীন পাকিস্তানের যে অংশকে দেশটির নেতারা বোঝা মনে করতেন সেই বোঝা উন্নয়ন-অগ্রগতিতে অনেক এগিয়ে গেছে। এবং বাংলাদেশের এই উন্নতি দেখে আমরা লজ্জিত হচ্ছি।

পাকিস্তান আজ বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করে আর বিএনপি দেশের উন্নয়ন দেখতে পায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি যত মিথ্যাচার করে, সরকারের উন্নয়ন নিয়ে অপপ্রচার করে। তাদের শাহবাজ শরীফের এ বক্তব্য থেকে প্রকৃত সত্য অনুধাবন ও শিক্ষা নেওয়ার অনেক কিছুই আছে।

‘তারা দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে। যখন আলোকজ্জল তখন তারা আমাবশ্যার অন্ধকার দেখে। দেশের উন্নয়ন নিয়ে এত হীন মনোবৃত্তির পরিচয় তারা দিচ্ছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে তাদের বাস্তবতাটা বোঝা উচিত।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে কথায় কথায় তারা ডামি নির্বাচনের কথা বলে। কিন্তু বিএনপি গণতন্ত্র ও নির্বাচনে অকার্যকর হয়ে তারা নিজেরাই ডামি রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তারা মনে করেছিল, বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে সরকার বৈধতা পাবে না। কিন্তু হয়েছে উল্টো। জাতীয় নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে ২৩১ টি নির্বাচন হয়েছে। যেখানে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ।

বিএনপির নির্দেশ অমান্য করে দলটির অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, বিষয়টি আওয়ামী লীগ কিভাবে দেখছে জানতে চাইলে এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, বিএনপিকে ছাড়াই দেশের গণতন্ত্র এবং নির্বাচন ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে। এই নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নিলে তাতে সমর্থন কিংবা বিরোধিতা কোনটাই করবে না আওয়ামী লীগ। বিএনপির ব্যাপার বিএনপিই দেখবে।

উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের নিকটাত্মীয়দের নির্বাচন থেকে সরে যেতে দলীয় নির্দেশ অমান্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের এখনো সময় আছে। শেষ দিন পর্যন্ত দেখতে হবে। দলীয় নির্দেশ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা সময়মতো নেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাচনে এমপিদের হস্তক্ষেপ এবং সহিংসতার আশঙ্কা করছে নির্বাচন কমিশন- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সংঘাতের আশঙ্কা করতে পারেন। তবে সংঘাত যেন না হয় আমাদের প্রয়াস অব্যাহত আছে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের বিষয়ে দলীয় বক্তব্য জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, গাজায় ইসরাইল যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা মানবাধিকারের কোন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে? ১৪ হাজার শিশু, ৩৫ হাজার মানুষ এবং প্রতিদিনই হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। প্রতিদিন সেখানে মানুষ মারছে। কারো কথারই তোয়াক্কা করছে না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবও মানছে না। সেই যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের ফান্ডে ইসরায়েলের অংশের অনুমোদন ইতিমধ্যে দিয়েছে। তার মানে যুদ্ধের উস্কানিতে সহযোগিতা করছে।

‘আগে তারা জেরা ইসরাইলের যে গণহত্যা, এ গণহত্যার ব্যাপারে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে নিকৃষ্টতম নমুনা, এর ব্যাপারে তারা তাদের অবস্থান পরিষ্কার করুক। তারপর অন্যদের হেদায়েত করুক’, বলেন তিনি।

বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজনৈতিক কারণে বিএনপির কোনো নেতাকর্মীদের মামলা নেই। রাজনৈতিক কারণে দলের কোনো নেতাকর্মী কারাগারে নেই। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, কারাগারে আছে, তাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অপকর্ম অপরাধের মামলা আছে। সে কারণেই তারা কারাগারেও যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হচ্ছে।

‘বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলামকে বলতে চাই, আপনি যে ভুয়া হিসেব জাতির সামনে উত্থাপন করছেন, এটা দল হিসেবে আপনাদের স্বচ্ছ্বতাকে মানুষের কাছে ছোট করছে। কারণ বাংলাদেশের যত কারাগার আছে এই কারাগারের ধারণক্ষমতা কত? আর বিএনপির যে ৬০ লাখ লোকের কথা বলে এই দুটো সংখ্যার মিলিয়ে এখন কারাগারের ধারণক্ষমতার বাইরে বিএনপির এত লোক কিভাবে থাকবে-সেটাই তো আমরা বুঝতে পারছি না।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খানসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।