ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৮ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

২৫০ টাকায় কেনা সাইকেলেই ৭৫ বছর পার ​নিমু ডাক্তারের

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ১৭ এপ্রিল ২০২১

২৫০ টাকায় কেনা সাইকেলেই ৭৫ বছর পার ​নিমু ডাক্তারের

স্কুলে আসা যাওয়ার জন্য ১৯৪৫ সনে ২৫০ টাকায় কিনেছিলেন একটি হারকিউলিস বাই সাইকেল। সেই থেকে এ সাইকেলটি আছে জীবনের সুখ-দুঃখের সাথী হিসেবে। বর্তমানে বয়সের ভারে ন্যুব্জ হলেও সাইকেল চালিয়েই স্থানীয় গরীব-দুখী মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বলছি ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার পৌরসভার পশ্চিম ভালুকা এলাকার ১০০ বছর বয়সী বৃদ্ধ পল্লী চিকিৎসক জজ বিশপ ওরফে নিমু ডাক্তারের কথা।
 
জজ বিশপের বাবা মৃত ডেনিয়েল বিশপও ছিলেন একজন পল্লী চিকিৎসক। তিনি উনিশ শতকের প্রথমদিকে ঘোড়ায় চড়ে এলাকার মানুষের বাড়িতে গিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতেন। এলাকার মানুষ তাকে সাহেব ডাক্তার অথবা খ্রিস্টান ডাক্তার বলে ডাকতেন। ডাক্তারি পেশার পাশাপাশি তিনি সমাজসেবামূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত ছিলেন।
 
ছাত্রজীবনে বাবার কাছেই জজ বিশপের ডাক্তারি শিক্ষার হাতেখড়ি। বাবার মৃত্যুর পর পল্লী চিকিৎসকের কোর্স সম্পন্ন করে এটাকে পেশা হিসেবে গ্রহন করেন তিনি। তিনি সাইকেল চালিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে এলাকার মানুষের বাড়ি গিয়ে নাম মাত্র ফিতে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছেন। স্টেশন রোড এলাকায় রয়েছে তাঁর ছোট্র একটি চেম্বার। সেখানে বসে প্রতিদিন বিকেলে রোগী দেখেন তিনি। এ চেম্বারে স্থানীয় দরিদ্র লোকজন আসেন চিৎিকসাসেবা নিতে।

জজ বিশপ গৌরীপুর রাজেন্দ্র কিশোর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি পাশ করেন। তিনি ১৯৭২ জাগরণী ক্লাবের সভাপতি ছিলেন। এলাকার শিক্ষার বিস্তারে সত্তরের দশকে তিনি গৌরীপুর পৌর শহরে জাগরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাছুয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নিজ এলাকায় পশ্চিম ভালুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। বর্তমানে গৌরীপুর ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের প্রধান পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ব্যক্তি জীবনে তাঁর এক স্ত্রী, তিন ছেলে, দুই মেয়ে, মেয়ে জামাই, নাতি-নাতনীসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রয়েছে।

জজ বিশপ জানান, এই সাইকেলটি তাঁর খুব শখের। এটাকে খুব যত্ন করে রেখেছেন। জীবনের অনেক সুখ-দুঃখের সাথী সাইকেলটি। ৭৫ বছরে টায়ার, টিউব ও কিছু ছোট যন্ত্রাংশ পিটিং ছাড়া আর কোন বড় ধরনের মেরামত করতে হয়নি এ সাইকেলের।

গাজীপুর কথা