ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৮ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

২০ অক্টোবর, বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস

প্রকাশিত: ০৪:৩৬, ২০ অক্টোবর ২০২০

২০ অক্টোবর, বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস

২০ অক্টোবর বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়- ‘কানেক্টিং দ্যা ওয়ার্ল্ড উইথ ডাটা উই ক্যান ট্রাষ্ট’। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোতে একযোগে পালিত হচ্ছে দিবসটি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় পাঁচ বছর অন্তর বাংলাদেশেও তৃতীয়বারের মতো ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস-২০২০’ পালিত হচ্ছে।

২০১০ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভায় ২০ অক্টোবরকে ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। সিদ্ধান্ত হয়, পাঁচ বছর পর পর জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলো এ দিবস পালন করবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেছেন, সব খাতে পরিসংখ্যানের প্রয়োগ দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় পাঁচ বছর অন্তর বাংলাদেশেও তৃতীয়বারের মতো ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস-২০২০’ পালিত হচ্ছে জেনে রাষ্ট্রপতি সন্তোষ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, পরিসংখ্যান উন্নয়ন ও অগ্রগতির পরিমাপক। আর্থ সামাজিক সকল কর্মকান্ডের গতি-প্রকৃতি নির্ণয় ও উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব অপরিসীম। মূলত সঠিক পরিসংখ্যানই কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়নের পূর্বশর্ত। অর্থনৈতিক, জনমিতিক, সামাজিক সকল ক্ষেত্রে পরিমাণগত ও গুণগত পরিমাপে পরিসংখ্যানের ব্যাপক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান বিশ্বে সরকারি ও বেসরকারি পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের ক্ষেত্রে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেকোনো দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে সঠিক ও সময়োচিত পরিসংখ্যানের ব্যবহার অপরিহার্য। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিটি সেক্টরে নির্ভুল ও সময়ানুগ পরিসংখ্যানের প্রয়োগ দেশকে দ্রুত উন্নয়নশীল থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বের উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশগুলোর প্রকৃত উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে পরিসংখ্যানের বিকল্প নেই। সরকার পরিসংখ্যান কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করে তা জাতীয় উন্নয়নে ব্যবহারের বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক।

তিনি বলেন, জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যবস্থার উন্নয়নে ‘পরিসংখ্যান আইন ২০১৩’ ও এতদসংক্রান্ত জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি আশা করেন, বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস পালনের মধ্য দিয়ে দেশের সকল খাতে পরিসংখ্যানের প্রয়োগ বৃদ্ধি পাবে, যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক হবে।
তিনি‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস ২০২০’ উদযাপনের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

অপরদিকে, দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাসের মহামারি থেকে জীবন বাঁচাতে এবং এর থেকে উত্তরণে পরিসংখ্যানের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। করোনা সংকটকালে সরকারের নগদ সহায়তা ও প্রণোদনাসহ সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার কারণে মৃত্যুর হার হ্রাস এবং অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে।

বাণীতে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, টেকসই উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সঠিক, নির্ভরযোগ্য, সময়োপযোগী এবং বিশ্বস্ত পরিসংখ্যান ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের পরিবর্তিত বিশ্বকে বুঝতে সাহায্য করে।’

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য অন্যতম প্রধান শর্ত হলো সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা। সঠিক পরিকল্পনার জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যান। পরিসংখ্যান যত নির্ভুল হবে, নীতি-নির্ধারকদের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ তত সহজতর হবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার সকলক্ষেত্রে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয়, সময়োপযোগী এবং মানসম্পন্ন পরিসংখ্যান সংগ্রহ ও প্রকাশ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তথ্য-উপাত্ত প্রক্রিয়া ও পরিজ্ঞাত করণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে চাহিদা মাফিক উপাত্ত সরবরাহ এবং পরিসংখ্যান বিষয়ক কার্যক্রম সময়োপযোগী ও ত্বরান্বিত করণে আমরা সর্বদা সচেষ্ট।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, উন্নয়ন ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব উপলব্ধি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পরিসংখ্যান কার্যক্রমে নিয়োজিত কয়েকটি পৃথক প্রতিষ্ঠানকে একীভূতও সুসমন্বিত করে ১৯৭৪ সালে বিবিএস প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে বিবিএস-এর সার্বিক কর্মকা- সমন্বয়, তত্ত্বাবধান ও সাচিবিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠান করা হয় পরিসংখ্যান বিভাগ। জাতীয় পরিসংখ্যানিক ব্যবস্থাকে আইনগত ভিত্তি প্রদানের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সালে ‘পরিসংখ্যান আইন-২০১৩’ প্রণয়ন করে।

প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনাকারী, নীতি নির্ধারক, শিক্ষাবিদ এবং গবেষকগণ যারা দেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচেছন, তাদেরকে বিদ্যমান পরিসংখ্যানের সর্বোত্তম ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমি মনে করি, বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস পালনের মাধ্যমে দেশবাসীকে পরিসংখ্যানের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করার একটি অনন্য সুযোগ।’

তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও ২০ অক্টোবর ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস-২০২০’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর ক্রোড়পত্র প্রকাশের উদ্যোগকে তিনি সাধুবাদ জানান। এ বছর বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবসের প্রতিপাদ্য পরিসংখ্যানের ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও ব্যবহারের গুরুত্বকে সামনে নিয়ে এসেছে বলেও জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সময়োপযোগী সঠিক পরিসংখ্যানের সাহায্যে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবেন।

প্রধানমন্ত্রী ‘বিশ্ব পরিসংখ্যান দিবস-২০২০’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

গাজীপুর কথা