ঢাকা,  মঙ্গলবার  ২৩ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সুলতান আল-মারিনীর হাতেলেখা ৭শ’ বছরের পুরোনো কুরআনের পাণ্ডুলিপি

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৭ মার্চ ২০২১

সুলতান আল-মারিনীর হাতেলেখা ৭শ’ বছরের পুরোনো কুরআনের পাণ্ডুলিপি

কুরআনুল কারিমের বিরল পাণ্ডুলিপি। ইসরায়েল অধিকৃত মুসলমানদের প্রথম কেবলা মসজিদে আকসায় কস্তুরি ও স্বর্ণ মিশ্রিত জাফরান কালিতে লেখা ৭০০ বছরের পুরোনো পাণ্ডুলিপিটি সংরক্ষিত আছে।

ফিলিস্তিনের মসজিদে আকসার সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে ৭০০ বছরের পুরনো এ কুরআন। ১৩৪৪ সালে মরক্কোর সুলতান আলি আবুল হাসান আলম-মারিনী নিজ হাতে এ পাণ্ডুলিপি লেখেন। লেখা শেষে সুলতান আলি আল-মারিনী এটি মসজিদে আকসায় হাদিয়া হিসেবে উপহার দেন। সেটিই ৭০০ বছর ধরে পড়ে থাকার পরও কুব্বাতুস সাখরার মসজিদে আকসায় অক্ষত এবং ঝলমল অবস্থায় সংরক্ষিত আছে।

সুলতান আলি আবুল হাসান আল-মারিনী মরক্কোর ক্ষমতাধর ব্যক্তি হওয়া সত্বেও নিজ হাতে কুরআন লেখার অভিনব কাজ করতেন। যে কারণে এ অসামান্য কাজের জন্য আজও তিনি মানুষের হৃদয়ে অবস্থান করছেন। সুলতান আল-মারিনীর নাম মুসলিম উম্মাহর মুখে মুখে।

সুলতান আল-মারিনীর স্বর্ণমিশ্রিত জাফরানের কালিতে লেখা কুরআন মাজিদের উজ্জ্ব পাণ্ডুলিপিটি ফিলিস্তিনের মসজিদে আকসায় সংগ্রহশালায় অক্ষত থাকলেও সংরক্ষিত থাকেনি আরও দুইটি পাণ্ডুলিপি।

কেননা মসজিদে আকসা ছাড়াও একই রকম তৈরিকৃত কুরআন মাজিদের পৃথক দুইটি পাণ্ডুলিপি পবিত্র নগরী মক্কার মসজিদে হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীতেও হাদিয়া হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় তা হারিয়ে গেছে।

পাণ্ডুলিপির বিবরণ
সুলতান আল-মারিনীর হাতে লেখা কুরআনের ঐতিহাসিক পাণ্ডুলিপিটি ফিলিস্তিনের মসজিদে আকসার কুব্বাতুস সাখরায় সংরক্ষিত।

পাণ্ডুলিপিটি রৌপ্যখচিত আবলুস কাঠের তৈরি এক বক্সে মধ্যে সংরক্ষিত। পাণ্ডুলিপিটি বক্সের ভেতরে ৩০টি আলাদা আলাদা ছোট খণ্ডে বিভক্ত। এ খণ্ডগুলোর প্রত্যেকটি ১ পারা করে কুরআনুল কারিম লিখিত। আবলুস কাঠে তৈরি বর্গাকৃতির বক্সে সংরক্ষণ করায় এটিকে ’মরক্কোর রাবা’ বলা হয়। আরবিতে রাবা শব্দের অর্থ হলো বর্গাকৃতি।

স্বর্ণমিশ্রিত জাফরান কালিতে পাণ্ডুলিপিটি বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি উন্নতমানের চামড়ায় লেখা হয়েছে। যা সহজেই কাগজের নষ্ট হবে না।

সুলতান মারিনী সে সময় প্রচলিত কুফি লিখন রীতি এবং বিন্যাসের ক্ষেত্রে বিশেষ ফিতার সাহায্যে জ্যামিতিক নানা সূত্র অনুসরণ করেছেন। সুঘ্রাণ ও ঝলমলে পাণ্ডুলিপির জন্য তিনি কস্তুরিমিশ্রিত ও স্বর্ণ মিশ্রিত জাফরানের কালি ব্যবহার করা হয়েছে।

সুরা ও পারার শুরু এবংশেষে বিশেষ আল্পনাচিহ্নিত কারুকাজ রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিটি পৃষ্ঠায় কারুকাজের বিশেষ নকশাও ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সুলতান মারিনী লিখিত এ পাণ্ডুলিপিটির সংরক্ষিত থাকলেও এখন তা অসম্পূর্ণ। কারণ গত শতকের প্রথম দিকে ফিলিস্তিন নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হলে পাণ্ডুলিপিটির ৬ অংশ লুট হয়ে যায়। বর্তমানে মরোক্কান সংগ্রহশালায় এখন ২৪টি অংশ বিদ্যমান আছে।

গাজীপুর কথা