ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

যেভাবে ‘ইনডেমনিটি’ আইন বাতিল হয়ে শাস্তি পেল খুনিরা

প্রকাশিত: ১১:০৫, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০

যেভাবে ‘ইনডেমনিটি’ আইন বাতিল হয়ে শাস্তি পেল খুনিরা

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ঘটে। ক্ষমতায় আসেন খন্দকার মোশতাক আহমদ। আর এসেই ২৬ সেপ্টেম্বর ইনডেমনিটি নামে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন।

ওই অধ্যাদেশটিতে উল্লেখ করা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বলবৎ আইনের পরিপন্থী যা কিছুই ঘটে থাকুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রীমকার্টসহ কোন আদালতে বা ট্রাইব্যুনালে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোন আইনী প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ আইন হিসেবে অনুমোদন করেন। তারপর কেটে যায় বহু বছর।

এদিকে, বাবার হত্যাকারীদের বিচার তরান্বিত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন শেখ হাসিনা। বিচার চেয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন তিনি, কোনো লাভ হয়নি। তবে নিরাশ হননি। অবশেষে সেই সুযোগ এলো। বাতিল করা হলো ইনডেমনিটি আইন। অতঃপর হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে আর কোনো বাধা থাকলো না।

দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়। ওই বছর ২৩ জুন বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপরই বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া আইনী বাধা অপসারণের প্রক্রিয়া শুরু হয়।

জানা যায়, সংবিধান বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিতকরণ বিল, সপ্তম সংসদে উত্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয়। ১৪ নভেম্বর রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের পর এটি পরিপূর্ণভাবে আইনে পরিণত হয়। ফলে মোশতাকের জারি করা এবং জিয়ার সময় বৈধতা পাওয়া ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হয়।

এদিকে, মানবতা ও সভ্যতাবিরোধী এই অধ্যাদেশ বাতিলের মাধ্যমে ঘোচানো হয় ২১ বছরের কলঙ্ক। খুলে যায় বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ। আইনী প্রক্রিয়া শুরু হয়। সর্বশেষ ২০০৯ সালে লিভ-টু-আপীল-এর মাধ্যমে এর বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। আপীল শেষে বারো জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন মহামান্য আদালত। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি খুনী পাঁচজনের ফাঁসির মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বাকি ছয়জন এখনও পলাতক। তাদেরকেও দেশে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকরে বদ্ধ পরিকর শেখ হাসিনা। আর এভাবেই বহু বাধা পেরিয়ে বাবার হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি কার্যকর করেন তিনি।

গাজীপুর কথা