ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

মসজিদের দানবাক্সে এক কোটি ১১ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার !

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ১৩ মার্চ ২০২০

মসজিদের দানবাক্সে এক কোটি ১১ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার !

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান সিন্দুকে দান হিসেবে পাওয়া স্বর্ণালঙ্কার ও রূপা এক কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ১২০ টাকায় নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। বুধবার (১১ মার্চ) এই নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে গত প্রায় তিন বছর ধরে দানসিন্দুকে জমা হওয়া ৪২০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ১৮৮ ভরি রূপা এই টাকায় বিক্রি করা হয়।

পাগলা মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের বিক্রয় উপ-কমিটির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, সদস্য সচিব ও নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মীর মো. আল কামাহ তমাল, কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল কাদির ভূইয়া, পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক একেএম শামছুল ইসলাম খান মাছুম, পাগলা মসজিদের খতিব মাওলানা খলিলুর রহমান, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা প্রমুখ নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকি করেন।

নিলামে মোট আটজন ক্রেতা অংশ নেন। প্রত্যেকে জামানত হিসেবে দেড় লাখ টাকা করে নগদ জমা প্রদান করে নিলামে অংশ নেন।

নিলামে পাগলা মসজিদের দানসিন্দুকে পাওয়া অলঙ্কারগুলোতে ৫টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ২১ ভরি ওজনের ২১ ও ২২ ক্যারেট মানের বিদেশি স্বর্ণ প্রতিভরি ৩৯ হাজার চারশ’ টাকা, ৩১ ভরি দেশি স্বর্ণ প্রতি ভরি ৩৬ হাজার তিনশ’ টাকা, দেশি স্বর্ণের তৈরি ১৩১ ভরি ওজনের  চাঁদ ও তারকা প্রতিভরি ৪০ হাজার ৫শ’ টাকা এবং ২৩৭ ভরি ১০ আনা ওজনের নাকফুল প্রতিভরি ১৭ হাজার ৬শ’ টাকায় বিক্রি হয়।

এছাড়া ১৮৮ ভরি রূপার অলঙ্কার প্রতি ভরি ৪শ’ টাকা করে বিক্রি করা হয়।

সাধারণত তিন মাস পর পর পাগলা মসজিদের দান সিন্দুক খোলা হয়। প্রতিবারই দানের টাকা কোটি ছাড়িয়ে যায়। বিপুল পরিমাণ দানের এই নগদ টাকা ছাড়াও বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রা ও দান হিসেবে স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া যায়। টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা করা হয়। এছাড়া স্বর্ণালঙ্কার কালেক্টরেটের ট্রেজারিতে রাখা হয়।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুকগুলোতে নগদ টাকা-পয়সা ছাড়াও স্বর্ণালঙ্কার, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র দান করেন।

কথিত আছে, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনোবাঞ্চা পূর্ণ হয়। সেজন্য দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন।

শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সাথে সাথে বেড়েছে এর খ্যাতি ও ঐতিহাসিক মূল্যও।

মসজিদকে কেন্দ্র করে একটি অত্যাধুনিক ধর্মীয় কমপ্লেক্স এখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রসারিত হয়েছে মূল মসজিদ ভবন।

দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত মসজিদটিকে পাগলা মসজিদ ইসলামী কমপ্লেক্স নামকরণ করা হয়েছে। এ মসজিদের আয় দিয়ে কমপ্লেক্সের বিশাল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে মসজিদটিকে ঘিরে চলছে ব্যাপক উন্নয়নযজ্ঞ। এছাড়া মসজিদের আয় থেকে বিভিন্ন সেবামূলক খাতে অর্থ সাহায্য করা হয়।

ভিডিও:

 

গাজীপুর কথা