মঙ্গলগ্রহের দক্ষিণ মেরুর নিচে তিনটি বিশাল ভূগর্ভস্থ হৃদের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। হ্রদগুলো বরফে আচ্ছন্ন মাটির নিচে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি লবণাক্ত পুকুরও রয়েছে। যা মঙ্গলে ক্ষুদ্র প্রাণ থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলেছে।
২০১৮ সালে মঙ্গলের মেরু বরফের নিচে একটি লুকানো হ্রদের অনুসন্ধানের বিষয়টিকে সম্প্রতি সমর্থন দিয়েছে ইতালির রোমা ট্রে ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। এ ছাড়া নতুন গবেষণায় আরো তিনটি নতুন জলাশয় থাকার কথা বলা হচ্ছে।
ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি-র স্পেসক্র্যাফট মার্স এক্সপ্রেস ২০১৮ সালে মঙ্গলে এমন একটি জায়গা আবিষ্কার করে, যেখানে বরফের নিচে লবণাক্ত পানির হ্রদ রয়েছে বলে দাবি করা হয়। ২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত, এই হ্রদ নিয়ে নিশ্চিত হতে স্যাটেলাইট প্রায় ২৯ বার ওই এলাকা দিয়ে ঘুরেছে এবং ছবি তুলেছে। এর থেকে জানা গিয়েছে ওই এলাকায় এমন আরো হ্রদ রয়েছে।
ন্যাচার অ্যাস্ট্রোনমি সাময়িকীতে প্রকাশিত সর্বশেষ গবেষণায় বিজ্ঞানীরা ভূগর্ভস্থ লবণাক্ত হৃদটির বিষয়ে আরো প্রমাণ হাজির করেন। এটি আনুমানিক ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার বিস্তৃত এবং বরফের ভূপৃষ্ঠের দেড় কিলোমিটার নিচে রয়েছে। এখন পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহে পাওয়া সবচেয়ে বৃহত্তম হ্রদ এটিই।
গবেষকেরা আশা করছেন, কম তাপমাত্রায় তরল থাকার জন্য পানি লোনা হবে। ২০১৯ সালের পৃথক এক গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা পানি জমাট বাঁধতে দেয় না। তবে বর্তমান গবেষণায় পানিতে অতিরিক্ত লবণ থাকার বিষয়টিতে জোর দিয়েছে।
নতুন গবেষণাটির জন্য রোমা ট্রে ইউনিভার্সিটির সেবাস্তিয়ান ইমানুয়েল লউরোর নেতৃত্বে গবেষকেরা পৃথিবীতে অ্যান্টার্কটিকা ও কানাডিয়ান আর্কটিকে মাটির নিচের হৃদ শনাক্তের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করেন। এ জন্য তারা ২০০৩ সালে উৎক্ষেপণ করা মার্স এক্সপ্রেস মহাকাশযান থেকে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সময়ের শতাধিক রাডার পর্যবেক্ষণের উপাত্ত নিয়ে কাজ করেন।
একসময় মঙ্গলকে একটি পানিহীন গ্রহ ভাবা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে সেই ভুল ধীরে ধীরে ভাঙছে। অবশ্য বিজ্ঞানীরা বহুদিন আগে থেকেই জানিয়েছিলেন, মঙ্গলগ্রহে একসময় প্রচুর পরিমাণে পানি প্রবাহিত হত। তিন বিলিয়ন বছর আগে জলবায়ুতে বড় ধরনের পরিবর্তনের কারণে মঙ্গল গ্রহের সব রূপ পরিবর্তিত হয়েছিল বলে মত বিজ্ঞানীদের।
গাজীপুর কথা