ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ভিক্ষা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে ২৮ জন ভিক্ষুক

প্রকাশিত: ১০:১১, ২২ জুন ২০২১

ভিক্ষা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে ২৮ জন ভিক্ষুক

গাজীপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে সমাজ সেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে সম্প্রতি জেলার ২৮ জন ভিক্ষুককে পুর্নবাসন করে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এ ছাড়াও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অনেককেই সহায়তার মাধ্যমে অভিশপ্ত পেশা ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বের করে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে।

গাজীপুর কাপাসিয়া উপজেলার চরখামের গ্রামের নিলুফা বেগম। নানা প্রতিবন্ধকতায় ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত ছিলেন ২০ বছর ধরে। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছিলেন না। অবশেষে সরকারি উদ্যোগে তাকে দেওয়া

হয়েছে একটি দোকান ঘর। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছ থেকে দোকান বুঝে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন নিলুফা।

একই উপজেলার পাকিয়াব গ্রামের নাজিম উদ্দিন বলেন, অনিচ্ছা সত্ত্বেও বেঁচে থাকার তাগিদে তিনি ভিক্ষা করছিলেন। তবে সরকারিভাবে তাকে দোকান দিয়ে সহায়তা করায় এখন তিনি আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠার চেষ্টা করছেন।

কাপাসিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমত আরা বলেন, উপজেলায় সরকারি সহায়তার মাধ্যমে ৬ জন ভিক্ষুককে ভিক্ষাবৃত্তি থেকে সরিয়ে এনে সাবলম্বী করে গড়ে তোলা হয়েছে।

স্থানীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও বাজারগুলোয় ক্ষুদ্র দোকান তৈরি করে মালামাল ক্রয় করে দেওয়া হয়েছে। এখান থেকে যে আয় হবে তা দিয়ে তারা সংসার চালাবেন। তালিকায় থাকা অনেককেই ভিক্ষাবৃত্তির অভিশাপ থেকে বের হয়ে আসার জন্য আমরা কাউন্সিলিংও করছি।

গাজীপুর জেলা সমাজসেবা বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী গত দুই বছর আগে ভিক্ষুক মুক্ত গাজীপুর গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য প্রাথমিক অবস্থায় জেলার ৫টি উপজেলায় জরিপ চালিয়ে বাছাই করা হয় ভিক্ষুক। জরিপে কালিয়াকৈরে ৫৭৮ জন, কালিগঞ্জে ২৩৬ জন, শ্রীপুরে ৪৬৬ জন, কাপাসিয়ায় ৭৮ জন, গাজীপুর সদরে ১৭০ জন মোট ৯৫০ জন ভিক্ষুক বাছাই করা হয়।

পরে তাদের এ পেশা থেকে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয় পুর্নবাসনের। সরকারিভাবে ভিক্ষুক পুনর্বাসন করতে মোট ৭ লাখ টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে গাজীপুর সদরে ৮ জন, কাপাসিয়ায় ৬ জন, কালিগঞ্জে ৩ জন, কালিয়াকৈরে ৫ জনকে মুদি দোকান তৈরি করে দেওয়া হয়। এ ছাড়াও এ প্রকল্পের আওতায় শ্রীপুরে ১২ জন ভিক্ষুককে ছাগল পালনের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তুলতে ছাগল প্রদান করা হয়েছে।

গাজীপুর সমাজসেবা বিভাগের উপপরিচালক এসএম আনোয়ারুল করিম বলেন, জরিপে থাকা সবাইকে ধাপে ধাপে পুনর্বাসিত করা হবে। আমাদের কাজ অব্যাহত রয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, প্রধানমন্ত্রীর ভিশন ও নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সারাদেশের মতো গাজীপুরকে ভিক্ষুক মুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যেই আমরা কাজ শুরু করেছি। অনেকেই এখন সরকারি সহায়তার মাধ্যমে ভিক্ষা ছেড়ে আত্মনির্ভরশীল হয়ে গড়ে উঠছেন।

গাজীপুর কথা