দিল্লি টিকা দিচ্ছে না বলে বাংলাদেশ ইলিশ পাঠাচ্ছে না– ভারতীয় গণমাধ্যমে এমন খবরে মুখ খুললেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘আমরা এত নিচু মানসিকতার নই।’
মঙ্গলবার কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, দিল্লি টিকা দিচ্ছে না বলে বাংলাদেশ ইলিশ পাঠাচ্ছে না।
মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্রিফিংয়ের সময় সাংবাদিকেরা এ বিষয়টি তার নজরে আনেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তখন এক বাক্যের এ মন্তব্য করেন।
ভারতে বেশ কয়েক বছর ধরে আনুষ্ঠানিকভাবে ইলিশ রপ্তানি বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ।
কোভিড টিকা পাঠায়নি দিল্লি, ইলিশও আসছে না ঢাকা থেকে, প্রশ্নের মুখে মোদির ‘সোনালি অধ্যায়' শিরোনামে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, 'প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার বিদেশ মন্ত্রকের বহু বিজ্ঞাপিত ‘ভারত-বাংলাদেশ সোনালি অধ্যায়’-এর রং এই মুহূর্তে যথেষ্ট ফিকে। বাংলাদেশের প্রায় ১৬ লাখ মানুষ ভারতীয় করোনা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ নিয়ে বসে রয়েছেন। সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ভারত জানাচ্ছে, আপাতত ভ্যাকসিনের আর একটি ডোজও পাঠানো সম্ভব নয়। ঢাকা সূত্রের বক্তব্য, বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ আর চাপা থাকছে না সে দেশে। যার সরাসরি প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে বাঙালির প্রিয় মাছ ইলিশ প্রসঙ্গে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘দীর্ঘদিন ধরেই ভারতে ইলিশ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বাংলাদেশের। তা সত্ত্বেও গত বছর জামাইষষ্ঠীর সময়ে পশ্চিমবঙ্গে দুই হাজার টন ইলিশ রপ্তানিতে ছাড়পত্র দিয়েছিল হাসিনা সরকার। কিন্তু এ বছর পশ্চিমবঙ্গের পাতে পড়েনি পদ্মার ইলিশ।’
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘এমন সরলীকরণ করাটাও ঠিক হবে না যে, প্রতিশ্রুত টিকা পাঠানো হয়নি বলেই ইলিশ রপ্তানি বন্ধ থাকল। কিন্তু এটাও ঠিক, দুই পক্ষের সম্পর্ক এতটাই আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছে, ইলিশ-কূটনীতির আবহাওয়াটাই আর নেই।’
প্রসঙ্গত, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ওঠা-পড়ায় ইলিশ এক কূটনৈতিক প্রতীকও বটে। এর আগে স্থলসীমান্ত চুক্তি সই করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ঢাকায় গিয়েছিলেন, ইলিশ নিয়ে কিছুটা রসিকতার ঢঙে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছিল তার। ভোজের তালিকায় ইলিশের পঞ্চপদ দেখে মমতা হাসিনাকে প্রশ্ন করেছিলেন, কেন তারা ইলিশ আটকে রেখেছেন? হাসিনার জবাব ছিল, ‘তিস্তার পানি এলেই মাছ সাঁতার কেটে চলে যাবে ওপারে!'
গাজীপুর কথা