ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ২৮ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ সিরিয়াল কিলার, ৭ বছর বয়সেই তিন খুন

প্রকাশিত: ০৭:৩৪, ২১ জানুয়ারি ২০২১

বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ সিরিয়াল কিলার, ৭ বছর বয়সেই তিন খুন

সিরিয়াল কিলারের কথা শুনলেই প্রথমেই সবার মাথায় আসে জ্যাক দি রিপারের কথা। যে কিনা তৎকালীন সময়ে লন্ডনের হোয়াইট চ্যাপেলের এক আতংকের নাম। বেছে বেছে যৌনকর্মীদের খুন করতেন তিনি। খুবই নৃশংস ছিল তার হত্যার ধরণ। কে ছিল সেই জ্যাক দ্য রিপার, তা আজো ধোঁয়াশা।

যদিও সন্দেহের বশে পুলিশ অনেককেই জ্যাক দ্য রিপারের তকমা দিয়েছে। বিনা দোষে হয়তো অনেকে শাস্তিও পেয়েছে। তবে সে যাই হোক, পরবর্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় এমন অনেক সিরিয়াল কিলারের নাম পাওয়া গেছে। কেউ কেউ ছিলেন মানসিক রোগী। কারো বা ছিল নেশা। মানে ঝোকের বশে নাকি খুন করতেন তারা। সিরিয়াল কিলারের তালিকায় রয়েছে অনেকের নাম। 

 

মাত্র ৭ বছর বয়সেই প্রথম খুনটি করে সে

মাত্র ৭ বছর বয়সেই প্রথম খুনটি করে সে

মানুষ হত্যা কারো ছিল নেশা, কারোবা পেশা। তবে মনোবিজ্ঞানীদের ধারণা যারা এই কাজগুলো ঘটাতেন তারা কোনো সাধারণ মানুষ নয়। বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত তারা। তবে সিরিয়াল কিলারদের তালিকায় এই পর্যন্ত যেসব ব্যক্তির কথা উঠে এসেছে, তারা সবাই প্রায় প্রাপ্ত বয়স্ক ছিল। এবার যে সিরিয়াল কিলারের কথা বলছি। যে মাত্র ৭ বছর বয়সেই প্রথম খুনটি করে। বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ সিরিয়াল কিলার বলা হয় এই শিশুকে। 

ভারতের বিহারের মুশাহার গ্রামের বাসিন্দা অমরজিৎ। যে বয়সে তার খেলাধুলা আর বাবা-মায়ের হাত ধরে পথ চলতে শেখার কথা। সে বয়সেই কি-না খুনী হিসেবে অভিযুক্ত। ২০০৬ সালে অমরজিৎ প্রথম তার ৬ বছরের চাচাতো বোনকে খুন করে। তখন তার বয়স মাত্র ৭ বছর। বয়সের কোঠা ৮ না পেরোতেই সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় তিনে। এসব খুন করে সে দুঃখিত হয়নি বরং খুশিতে আত্মহারা।

 

অমরজিতের কথা জেনে যায় পরিবার

অমরজিতের কথা জেনে যায় পরিবার

নিজের বোনসহ আরও ২ জনকে খুন করেছে শিশুটি। ‘বিশ্বের সর্বকনিষ্ঠ সিরিয়াল কিলার’ হিসেবে আখ্যা পেয়েছে অমরজিৎ। এরপর খুন করা যেন তার নেশা হয়ে দাঁড়ায়। অমরজিৎ তার নিজের ৮ মাসের বোনকেও খুন করে। অমরজিতের চাচা গণমাধ্যমকে বলেন, পরিবারের সবাই ওর খুনের বিষয়গুলো জানতো। তবে সবাই পারিবারিক বিষয় বলে বাইরে জানাজানি করতে চাননি। 

২০০৭ সালে অমরজিৎ তৃতীয় খুনটি করে। খুশবু নামের ৬ মাস বয়সী এক শিশুকে। খুশবুর মা একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। তিনি যখন স্কুলে গিয়েছিলেন তখন শিশুটি ঘরেই ঘুমাচ্ছিল। তবে স্কুল থেকে ফিরে তিনি খুশবুকে ঘরে পাননি। এরপরই খুঁজতে থাকেন মেয়েকে।

এর কয়েক ঘণ্টা পর অমরজিৎ এসে খুশবুর মায়ের কাছে অপরাধের কথা স্বীকার করে। সে জানায়, শিশুটিকে গলা টিপে হত্যা করেছে। এরপর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে অমরজিৎ। এমনকি হত্যার পর ৬ মাস বয়সী শিশুটিকে মাটি খুঁড়ে কবরও দিয়েছে সে। নারী ছেঁড়া ধনের এমন নৃশংস মৃত্যুর কথা শুনে স্থির থাকতে পারেননি খুশবুর মা। 

 

সর্বশেষ খুন করে ছয় মাস বয়সী খুশবুকে

সর্বশেষ খুন করে ছয় মাস বয়সী খুশবুকে

এরপর গ্রামবাসীকে খুশবুকে কবর দেয়ার স্থানে নিয়ে যায় অমরজিৎ। ততক্ষণে পুলিশ এসে অমরজিৎকে গ্রেফতার করেছে। সে পুলিশের কাছে খুনের অপরাধ স্বীকার করে জানায়, এর আগেও নিজ বোনসহ চাচাতো বোনকে সে খুন করেছে।

থানায় নেয়ার পর পুলিশ অনেকবার অমরজিৎকে প্রশ্ন করতে থাকে। তবে সে শুধু হাসতে থাকে। সেখানকার পুলিশ জানায়, অমরজিৎকে আমরা অনেক প্রশ্ন করেছি, তবে সে কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। একটু পরপরই সে পাগলের মতো হাসে আর বিস্কুট খেতে চাচ্ছিল।

 

১৮ বছর পর জেল থেকে ছাড়া পায় অমরজিৎ

১৮ বছর পর জেল থেকে ছাড়া পায় অমরজিৎ

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, অমরজিৎ কন্ডাক্ট ডিসঅর্ডারে ভুগছে। অন্যকে কষ্ট দিয়ে নিজেকে আনন্দ দেয়। এমন মানসিক রোগে আক্রান্তরা শুধু অন্যকে কষ্টই দিতে জানে। এতে তারা আনন্দ পায়। শিশু অপরাধী হিসেবে প্রথমে অমরজিৎকে চিলড্রেন্স হোমে রাখা হয়। এ ছাড়াও টানা ৩ বছর সে মনোরোগবিদের কাছে কাউন্সিলিং গ্রহণ করে। ১৮ বছর বয়সে ২০১৬ সালে সে মুক্তি পায় সে। বয়স কম থাকায় ও মানসিক রোগের কারণে বিচারক তার ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাননি। এ জন্য তাকে মুক্তি দেয়া হয়।

বর্তমানে অমরজিতের বয়স ২২ বছর। তবে এখন সে কোথায়, কীভাবে আছে, জানা নেই কারো। তার ঠিকানা লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এমনকি তার নামও অমরজিৎ পরিবর্তন করে সমরজিৎ করে দেয়া হয়েছে।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন