ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

বিকাশ প্রতারকের কাছে পুরো মাসের রোজগার খোয়ালেন কালীগঞ্জের রাবেয়া

প্রকাশিত: ১২:৫২, ৯ এপ্রিল ২০২১

বিকাশ প্রতারকের কাছে পুরো মাসের রোজগার খোয়ালেন কালীগঞ্জের রাবেয়া

রাবেয়া আক্তারের (২৭)। থাকেন গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌর এলাকার ভাদার্ত্তী (দক্ষিণ পাড়া) গ্রামে। বাবা আলাউদ্দিনের মৃত‌্যুর পর সবই হারিয়েছেন স্বামী পরিত্যক্তা রাবেয়া। তাই অচেনা মানুষের মতো নিজ গ্রামের হাবীবুল্লাহ সরকারের বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকেন রাবেয়া।

শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন স্থানীয় হা-মীম পোশাক কারখানায়। করোনার কারণে মাসের বেতন বিকাশের মাধ‌্যমে দেওয়া হয়। এ মাসের ৭ তারিখে বিকাশের মাধ্যমে পেয়েছেন গত মাসের বেতন। কিন্তু বিকাশ প্রতারকদের কারণে সেই টাকা আর হাতে পেলেন না রাবেয়া। 

ঘরে অপেক্ষায় থাকা শিশু সন্তান রায়হান (৭) ও কিশোরী মেয়ে আনিকার (১৫) জন্যও কিছু কিনতে পারেননি। কথা ছিল বেতন পেলে ভালো খাবার কেনা হবে। সামনে ঈদ কাপড় কেনা হবে। কিছুই হলো না।

এখন দুশ্চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া নেই রাবেয়ার। ঘর ভাড়া, বিদ‌্যুৎ বিল, গ‌্যাস বিল এসব কীভাবে মেটাবেন? কী করেই বা চলবে আগামী একটি মাস।

সারা মাসের হাড়ভাঙা পরিশ্রমের সামান‌্য কিছু টাকায় দোকানের বাকি অথবা পুরনো ঋণের কিস্তি চলতো। ছেলে-মেয়ের পড়াশোনা, সামান‌্য শখ-আহ্লাদ মেটানো বা সারা মাসের বাজার সদাইয়ের হিসেব কষা হতো ওই টাকার ওপর ভরসা করে।

রাবেয়া জানান, মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে তার মোবাইলের বিকাশ অ‌্যাকাউন্টে বেতনের ১২ হাজার ৯০৭ টাকা আসে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দুটি নাম্বার থেকে কল আসে। প্রতারকরা রাবেয়াকে জানায়, পৌরসভায় তার নামে করোনা ভাতার জন্য চার হাজার দুইশ’ টাকা এসেছে। আর সেই টাকা পেতে হলে মোবাইলের ক্যালকুলেটর অ‌্যাপ ওপেন করে তাতে ৪২০০ এর সঙ্গে বিকাশের পিন নাম্বার যোগ করতে হবে। যদি সে এ কাজে সফল হয় তাহলে তার অ‌্যাকাউন্টে করোনা ভাতার টাকা চলে যাবে। 

কথা মতো কাজ করেন রাবেয়া। ব‌্যাস! বেতনের টাকাসহ ১৫ হাজার টাকা ৩০ সেকেন্ডের মধ‌্যেই হাওয়া হয়ে গেলো। পরবর্তীতে ওই দুই নম্বরে বারবার ফোন করা হয়। ততক্ষণে দোকান গুটিয়েছে ওই নম্বরগুলোর মালিক। বন্ধ পাওয়া গেলো নম্বর দুটো। 

অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূক্তভোগী রাবেয়া।
 
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মিজানুল হক জানান, সারাদেশ করোনা মহামারিতে লকডাউনে চলছে। আর এই অবস্থায় একজন পোশাক শ্রমিকের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়টি দুঃখজনক। 

তিনি বলেন, ‘অভিযোগটি হাতে পেয়েছি। এ ব‌্যাপারে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

গাজীপুর কথা