ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় লিচু, কাঁঠাল, পেয়ারা, আনারসের পর এবার চাষ করা হচ্ছে সবুজ মাল্টা। এরইমধ্যে উপজেলার নোয়াবাদি, মেরাশানী, বিষ্ণুপুর ও পাহাড়পুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বেশি চাষ হচ্ছে। এ বছর ১২ কোটি টাকা মাল্টা বিক্রির আশা করা হচ্ছে।
২০১৬ সালে কৃষি বিভাগের প্রণোদনায় প্রথমবারের মতো বারি-১ ও বারি-২ জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন চাষিরা। শুরুতে সবুজ মাল্টা চাষে চাষিদের আগ্রহ কম থাকলেও ভালো ফলন ও বিক্রিতে লাভ হওয়ায় অন্যদেরও আগ্রহ বাড়াচ্ছে।
২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো বারি-১ ও বারি-২ জাতের মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন চাষিরা
আগামীতে উঁচু পাহাড়ি জমিসহ খালি জমিতে যাতে মাল্টার চাষ করা যায় সে লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন কৃষকরা। অন্যদিকে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও এই মাল্টা রফতানি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
জানা গেছে, এ বছর বিজয়নগরে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। বিক্রিও বেশ ভালো। প্রতি কেজি মাল্টা ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে। খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা কেজি দরে। কুমিল্লা, নরসিংদী ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকাররা এসে বাগান থেকে মাল্টা কিনে নিচ্ছেন। তবে আশপাশের এলাকার লোকজন প্রতিদিন এক থেকে দেড়শ কেজি মাল্টা সরাসরি বাগানে এসে নিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিকেজি মাল্টা ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করা হয়
এদিকে মাল্টার বাগানের চলতি মৌসুমের ফল মজনু মিয়ার কাছে বিক্রি করেছেন বাগান মালিক আলমগীর মিয়া। তিনি বলেন, চলতি মৌসুমে বাগানের দুইশ গাছে ফলন এসেছে। এই বাগানের ফল অন্তত ৮ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।
এদিকে বিজয়নগরের আলমগীর মিয়ার বাগান দেখে এলাকার অনেকেই এখন মাল্টার বাগান করতে অনুপ্রাণিত হয়েছেন। এই বছরে তিনি তার ২৫০টি গাছের বাগানটি সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। আগামীতে এলাকায় মাল্টার বাগানের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিজয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খিজির হোসেন জানান, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বিজয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সাইট্রাস ভিলেজ প্রজেক্টের আওতায় কৃষকদের বিনামূল্যে মাল্টার চারাসহ কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হয়। যা দেখে এলাকার কৃষকরা মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বর্তমানে বিজয়নগরে মাল্টা চাষে প্রসার ঘটেছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় এ বছর বিজয়নগরে মাল্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। এই মাল্টা বিজয়নগরসহ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন তারা।
চলতি মৌসুমে প্রায় ৪২ হেক্টর উচু জমিতে মাল্টার বাগান করা হয়েছে। বাগানে যে ফলন এসেছে তার বাজার মূল্য হবে প্রায় ১২ কোটি টাকা। আগামীতে আরো ব্যাপক প্রসার হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।
গাজীপুর কথা