ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

প্রেমিকাকে দূরে সরাতে ভয়ঙ্কর ধর্ষণের পরিকল্পনা প্রেমিকের

প্রকাশিত: ০৬:৫১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০

প্রেমিকাকে দূরে সরাতে ভয়ঙ্কর ধর্ষণের পরিকল্পনা প্রেমিকের

সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ওই ছাত্রী। কিন্তু তাতে সায় ছিল না প্রেমিক মাহফুজুর রহমান সারদের। এমন পরিস্থিতিতে প্রেমিকাকে দূরে সরিয়ে দিতে পরিকল্পনা করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রেমিকার অবস্থাপন্ন পরিবারের কাছ থেকে মোটা অর্থ আদায়ের ফন্দি আঁটেন। পরিকল্পনা মাফিক প্রেমিকাকে ধর্ষণ এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করে তাকে জিম্মি করেন।
গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এ মামলার দুই আসামি জীবন ও জয় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। পরে তাদের রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া মামলার মূল আসামি মাহফুজুর রহমানের দুই দিনের রিমান্ড মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয়েছে।বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) তাকে আদালতে তোলার কথা।

প্রেমিক মাহফুজুর রহমান সারদের এই পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন তারই পাঁচ ঘনিষ্ঠ বন্ধু। একজন বাদে মূল অভিযুক্তসহ পাঁচ জনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই মামলায় মাহফুজুর রহমান সারদের আরও দুই সহযোগী প্লাবন তালুকদার ও রাফসানকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।
অভিযুক্ত মাহফুজুর রহমান সারদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র। প্লাবন তালুকদার ও রাফসান বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আর তারেক মাহমুদ ওরফে জয়, জীবন ও বিশাল স্থানীয় বাসিন্দা।

গত ২৭ জানুয়ারি এ ঘটনায় মতিহার থানায় মামলা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী। ওইদিন রাতেই মতিহার থানা-পুলিশ সারদ, প্লাবন ও রাফসানকে গ্রেফতার করে। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি জীবন ও জয়কেও গ্রেফতার করা হয়। মামলার ছয় আসামির মধ্যে এজাহারনামীয় বিশাল এখনও পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নগরীর মতিহার থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহমান জানান, আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়ার সময় বলেছে, তারা ঘটনার আগের দিন তালাইমারীর মোড়ের একটি চায়ের দোকানে বসে পরিকল্পনা করেন। সারদের সঙ্গে ওই সময় উপস্থিত ছিলেন তারেক মাহমুদ ওরফে জয়, জীবন, রাফসান ও প্লাবন তালুকদার। পরে তারা এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত করে নেন বিশালকে। সারদ তখন বন্ধুদের জানান, ওই ছাত্রী তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি বিয়ে করতে চান না। তাকে দূরে সরিয়ে দিতে ও তার ধনী পরিবার থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করতে চান।

মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে এসআই আবদুর রহমান জানান, পাঁচ মাস আগে ওই ছাত্রীর সঙ্গে মাহফুজুর রহমান সারদের বন্ধুত্ব হয়। এরপর তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক হয়। গত ২৪ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল স্কুলের পাশে বসে ওই ছাত্রী ও সারদ গল্প করছিলেন। এ সময় প্লাবন ফোনে সারদকে তাদের ভাড়া বাসায় আড্ডা দিতে যেতে বলেন। রাত সাড়ে ৭টার দিকে ওই ছাত্রীকে নিয়ে প্লাবনের ভাড়া বাসায় যান সারদ। কিছুক্ষণ পর প্লাবন তাদের দুজনকে গল্প করতে বলে বাইরে চলে যান। একা পেয়ে সারদ ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।
এ সময় জীবন ও অজ্ঞাতনামা দুজন এসে ‘তোরা অসামাজিক কাজ করেছিস’ বলে সাদা কাগজে তাদের দুজনের সই নেন। পরে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাৎক্ষণিকভাবে কাছে থাকা প্রায় চার হাজার টাকা আদায় করেন ওই তিনজন। এ ঘটনার পর ওই ছাত্রী যাতে মামলা করতে না পারেন সেজন্য তারা সারদের সঙ্গে ওই ছাত্রীকে ‘ওপেন’ শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করেন এবং সেই ভিডিও ধারণ করেন।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন