ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

নদীতীর রক্ষা প্রকল্পে স্বস্তি এলাকাবাসীর

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ২৯ জুন ২০২০

নদীতীর রক্ষা প্রকল্পে স্বস্তি এলাকাবাসীর

ফরিদপুরে আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মার তীর সংরক্ষণ কাজ সম্পন্ন হওয়ায় স্বস্তি ফিরে এসেছে ভাঙনের আতঙ্কে থাকা এলাকাবাসীর। দীর্ঘ ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এ দুটি নদনদীর দু'পাড়ে বসবাসকারীরা প্রতি বছর ভাঙনের শিকার হয়। নিঃস্ব হয় শত শত পরিবার। কিন্তু চলতি বর্ষা মৌসুমে এই প্রথমবারের মতো ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে নদীপাড়ের মানুষ।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, ভাঙনের হাত থেকে স্থানীয়দের রক্ষায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পদ্মা নদীতে চরভদ্রাসন উপজেলায় প্রায় ২৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩.৪ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ বাঁধ ও ১০ কিলোমিটার ড্রেজিং এবং সদরপুর উপজেলায় ২৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়িয়াল খাঁ নদের ৫ দশমিক ৩৮ কিলোমিটার তীর সংরক্ষণ ও ৬.৩ কিলোমিটার নদের ড্রেজিং কাজের অনুমোদন পায়।

তিনি বলেন, ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড এ প্রকল্পের তীর সংরক্ষণ ও ড্রেজিয়ের জন্য পদ্মায় ১২ এবং আড়িয়াল খাঁয় ১৭ গ্রুপকে কার্যাদেশ দেয়। ইতোমধ্যে কাজের ৭৫ শতাংশ শেষ করেছে সংশ্নিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে গত ৫০ বছর ধরে নদী দুটির আগ্রাসনে যে ভূসম্পদের ক্ষতিসাধন হতো তার থেকে চলতি বর্ষা মৌসুমে রক্ষা পাচ্ছে নদনদী পাড়ের মানুষ।

প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ায় কয়েক হাজার মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে। স্থানীয়রা পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর পাড়ে তীর সংরক্ষণ কাজ দেখে আশায় বুক বেঁধেছে।

আড়িয়াল খাঁ নদের চন্দ্রপাড়া এলাকার বিপুল মাতুব্বর বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর ভাঙন দেখেছি। এখন প্রকল্পটি সম্পন্ন হওয়ায় নতুন করে বসত গড়ার স্বপ্ন দেখছি আবার।

সদরপুর উপজেলার দরগা বাজারের বাসিন্দা তারাপদ ঘোষ জানান, আড়িয়াল খাঁ তার বাড়ি তিনবার ভেঙেছে। প্রতিবছর বর্ষা এলেই চিন্তায় থাকতে হতো। কিন্তু এবারই দরগা বাজার এলাকাবাসী নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে।

চরভদ্রাসন উপজেলার হাজিগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, এই বাজার চারবার নদীতে বিলীন হয়েছে। অবশেষে বাজারসংলগ্ন এলাকায় পদ্মায় স্থায়ী বাঁধ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা ভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে।

স্থানীয় এমপি মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের চোখের পানি মুছে গিয়ে মুখে হাসি ফুটেছে। জানমালের নিরাপত্তার পাশাপাশি আর্থিক সচ্ছলতাও ফিরে আসবে। ঘুচবে এই অঞ্চলের মানুষের নদীভাঙনের আতঙ্ক।

এই জনপ্রতিনিধি আরও বলেন, প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁর ভাঙনে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর ও ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতি হতো। ভাঙন রোধে ড্রেজিং ও তীর সংরক্ষণে ব্লক দিয়ে বাঁধের কাজ ৭৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে, আশা করছি অল্প কয়েক দিনের মধ্যে কাজ শেষ হবে।

গাজীপুর কথা