ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ধ্বংসের মুখে কালের সাক্ষী কাশিমপুর রাজবাড়ি

প্রকাশিত: ০৬:৫৪, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

ধ্বংসের মুখে কালের সাক্ষী কাশিমপুর রাজবাড়ি

নওগাঁর রাণীনগর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে ছোট যমুনা নদীর পাশে কাশিমপুর রাজবাড়ি। এ বাড়িটি পাগলা রাজার বাড়ি বলে বেশ পরিচিত। বর্তমানে রাজবাড়িরর শেষ অংশটুকুও ধ্বংসের মুখে পড়েছে। মন্দিরের কিছু অংশ এখনো কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে।

আফছার,সেকেন্দার আলীসহ বেশ কয়েকজন বৃদ্ধ জানান, কাশিমপুর পাগলা রাজা নাটোরের রাজার বংশধর। শ্রী অন্নদা প্রসন্ন লাহিড়ী বাহাদুর ছিলেন এই রাজত্বের শেষ রাজা। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে ছিলেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর রাজবংশের সবাই এই রাজত্ব ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চলে যান। শুধু ছোট রাজা শ্রী শক্তি প্রসন্ন লাহিড়ী বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগ পর্যন্ত এই কাশিমপুর রাজবাড়িতে বসবাস করতেন। সময়ের বিবর্তনে সেও এক সময় কিছুটা চুপিসারে রাজবাড়ির স্টেটের অঢেল সম্পদ রেখে ভারতে চলে যান। কাশিমপুর ২ একর ১৯ শতক জমির উপর রাজবাড়ির অবস্থান। এই রাজবাড়িটির নিদর্শন সমূহ যাবৎ রক্ষণা বেক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে সকল কারুকার্য ধ্বংস প্রায়।

রাজবাড়ির মূল ভবনের সামনের চারটি গম্বুজ, উত্তর পাশে হাওয়াখানা ও পশ্চিম পাশে একটি দূর্গা মন্দির ছিলো। প্রতিনিয়ত মন্দিরে পূজা ও সন্ধ্যায় জ্বালানো হতো প্রদিব শোনা যেত শঙ্খ ও উলুর ধ্বনি। মন্দিরের পাশে ছিলো একটি রাজবাড়ির বৈঠকখানা, পুকুর ও নদীর ধারে একটি কাঁচের ঘরের তৈরি বালিকা বিদ্যালয়। বর্তমানে রাজার জায়গার কিছু অংশ এখন কাশিমপুর ইউপি ভূমি অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। 

এই রাজবাড়িটিকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র। কশিমপুর রাজার শত শত বিঘা জমি ও পুকুর স্থানীয় প্রভাবশালীরা বিভিন্ন কায়দা-কৌশলে দখলে রেখেছে। রাজার সম্পত্তিগুলো স্থানীয় মানুষদের অত্যাচারে সবই এখন প্রায় বেদখল। রাজবাড়ির বেশির ভাগ জায়গা স্থানীয়রা অবৈধভাবে দখলে নিয়ে বিভিন্ন পন্থায় উপজেলা ভূমি অফিস ও জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে লিজ নিয়ে চাতাল তৈরি করে ব্যবসা করছে।

কাশিমপুর রাজবাড়ি ধ্বংসের মুখে

কাশিমপুর রাজবাড়িটি দিনদিন প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাচ্ছে। এরইমধ্যে গড়ে তোলা হয়েছে চাতাল, মিল, কলকারখানা, বসতবাড়ি। এছাড়া উঁচু জমি কেটে সমতল করে ধান চাষ করা হচ্ছে। রাজবাড়ি ও রাজার সম্পদগুলোর উপর নজর না দেয়ার কারণে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। 

কাশিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. মকলেছুর রহমান বাবু বলেন, স্বাধীনতার পর কাশিমপুর রাজার বংশধররা কয়েক দফায় সবাই এই রাজত্ব ছেড়ে ভারতে চলে যান। তারা চলে যাওয়ায় স্থানীয় কিছু ব্যক্তিরা রাজার এই বিশাল সম্পত্তি দখলে নেয়। এক সময় বিভিন্ন কায়দায় উপজেলা ভূমি অফিস থেকে লীজ নেওয়ার কথা আমি শুনেছি। সরকারি উদ্যোগে নিয়ে রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের মাধ্যমে দৃষ্টি নন্দন করলে এখানেও গড়ে উঠতে পারে ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য দর্শনীয় স্থান।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন