ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

টঙ্গীতে মেশিনপত্র নিয়ে মালিকপক্ষের পলায়ন চেষ্টা, মালামাল আটকা

প্রকাশিত: ১৫:০৮, ২ আগস্ট ২০২০

টঙ্গীতে মেশিনপত্র নিয়ে মালিকপক্ষের পলায়ন চেষ্টা, মালামাল আটকা

গাজীপুরের টঙ্গীতে একটি কারখানার ভবনের প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকার বকেয়া ভাড়া ও শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করেই ঈদের ছুটির সুযোগে মেশিনপত্র নিয়ে পলায়নের চেষ্টা করেছে মালিক পক্ষ। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় শ্রমিকরা কারখানার মালামাল আটকে দেয়। গাজীপুর মহানগরের কলমেশ্বর এলাকায় প্যান্ডরা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানায় রোববার এ ঘটনা ঘটে।

শ্রমিকরা জানান, গত বৃহস্পতিবার জুলাই মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করে কারখানায় মৌখিকভাবে ঈদের ছুটি ঘোষণা করা হয়। ছুটি পেয়ে অধিকাংশ শ্রমিক গ্রামের বাড়িতে চলে যান। এই সুযোগে পর দিন শুক্রবার রাতে কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে গেটে নোটিশ টানানো হয়। শনিবার রাতে কারখানার মেশিনপত্র কয়েকটি ট্রাকে উঠিয়ে আজ রোববার ভোর রাতে ট্রাকগুলো কারখানা ত্যাগ করে। স্থানীয়রা বিষয়টি টের পেয়ে শ্রমিকদের খবর দেয়। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শ্রমিকরা ট্রাকগুলোকে আটক করে কারখানায় ফেরত নিয়ে যায়। ইতোমধ্যে কারখানার ভবন মালিকও খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।

ভবন মালিক খায়রুল ইসলাম জানান, ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে চার তলা ভবনের চারটি ফ্লোর প্যান্ডরা ফ্যাশন কর্তৃপক্ষের কাছে মাসিক সাড়ে ৬ লাখ টাকায় ভাড়া দেন। বর্তমানে বকেয়া ভাড়া বাবদ প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা তিনি প্যান্ডরা ফ্যাশন কর্তৃপক্ষের কাছে পাবেন। এছাড়া তার ভবনের আরো প্রায় ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে বকেয়া ভাড়া চাইলে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হতো। এ নিয়ে অনেক দেন-দরবার হয়েছে। বকেয়া ভাড়ার টাকা চাওয়ায় সম্প্রতি কারখানার পরিচালক আব্দুর রজ্জাক আমাকে গুলি করারও হুমকি দিয়েছেন।

এদিকে কারখানার শ্রমিকরা জানান, ঈদের ছুটির সময়ও তাদেরকে লে-অফ ঘোষণার বিষয়টি জানানো হয়নি। তাদের চলতি পাওনা ও সার্ভিস বেনিফিট পরিশোধ না করেই কারখানা কর্তৃপক্ষ রাতের অন্ধকারে মেশিনপত্র নিয়ে পালিয়ে যেতে চেয়েছিল। রোববার ভোর বেলায় স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে তারা যে যেঅবস্থায় ছিলেন সেভাবেই কারখানার গেটে ছুটে আসেন। ততক্ষণে কয়েকটি ট্রাক কারখানা ত্যাগ করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিকে যাচ্ছিল। তারা ট্রাকগুলোকে আটকে ফেরত নিয়ে আসেন।

কারখানার শ্রমিক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমান ভবনে ভাড়া আসার আগেই আমি ২০০০ সালের ২০ জুন থেকে কারখানাটিতে নিয়মিত চাকরি করছি। প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী আমাদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করলে কোনো আপত্তি থাকবে না।

এদিকে এ ব্যাপারে কারখানার পরিচালক আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। প্যান্ডরা ফ্যাশন লিমিটেড-এর এডমিন ম্যানেজার আইয়ুব আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। মালিকপক্ষই ভাল বলতে পারবেন।

এ ব্যাপারে গাজীপুর শিল্প পুলিশের টঙ্গী জোনের পুলিশ পরিদর্শক রেজ্জাকুল হায়দার বলেন, কারখানা কতৃপক্ষ ভবন মালিক ও শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ না করেই গোপনে মেশিনপত্র সরাতে চেয়েছিলেন। খবর পেয়ে শ্রমিকরা মেশিনপত্র আটকে দিয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ না করে মেশিনপত্র যাতে স্থানান্তর করতে না পারে সেজন্য আমাদের পুলিশ সদস্যরা কারখানায় অবস্থান করছেন। 

গাজীপুর কথা