ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জ মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

প্রকাশিত: ১৬:৪১, ৩০ আগস্ট ২০২০

জাতীয় শোক দিবসে গোপালগঞ্জ মাদ্রাসার ছাত্রদের ব্যতিক্রমী আয়োজন

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে ২৮ আগস্ট পবিত্র জুম্মার নামাজের পর আল জামেয়াতুল ইসলামিয়া সুলতানশাহী ঘোড়াদাইড় সুলতানুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা তার শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করে এক ব্যতিক্রমধর্মী অনুষ্ঠানের। মাদ্রাসার এতিম ছাত্রদেরকে নিয়ে হামদ, নাত, কোরআন তেলাওয়াত এবং আজান প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সেখানে।

পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে এই আলোচনা সভা শুরু করা হয়। ওজোপাডিকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আলোচনা সভার প্রধান অতিথি প্রকৌশলী মো: শফিক উদ্দিন তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে প্রথম ইসলামিক ফাউন্ডেশন গঠন করেন। মহান আল্লাহ পাক ও হযরত মোহাম্মদ (সা.) সব সময় নিরীহ, এতিম, নিপীড়িত , সুবিধা বঞ্চিত মানুষের সেবা করার কথা বলেছেন। বঙ্গবন্ধু মহান আল্লাহপাক ও তার রসূলকে অনুসরণ করে সারা জীবন নিরীহ, এতিম, নিপীড়িত, সুবিধা বঞ্চিত মানুষের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। যেখানেই অন্যায়, অনিয়ম দেখেছেন সেখানেই তিনি সোচ্চার হয়েছেন এবং বজ্র কণ্ঠে আওয়াজ তুলেছেন। সেই ৭ই মার্চের বজ্র কণ্ঠে ভাষণে আমরা শুনতে পাই- 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব তবুও এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ।' তিনি ইনশাআল্লাহ বলতে ভুল করেননি। আল্লাহর উপর ভরসা করে তিনি আমাদের দেশকে উপহার দিয়েছেন একটি স্বাধীন মানচিত্র, একটি স্বাধীন পতাকা। আর এই স্বাধীন দেশ উপহার পাওয়ার কারণে আমরা বড় ইঞ্জিনিয়ার হয়েছি এবং বড় পদে চাকুরী করার সুযোগ পেয়েছি এবং স্বাধীনভাবে এখানে দাড়িয়ে কথা বলতে ও মত প্রকাশ করতে পারছি।

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু প্রতিদিন বাঙ্গালির এগিয়ে যাওয়ার সংগ্রামে উদ্দীপনা যুগিয়ে গেছে, বাঙ্গালি এগিয়ে গেছে। কিন্তু এ নির্মম ১৫ই আগস্ট আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কিছু কুলাঙ্গার, নরপিচাশ সেনা সদস্য আন্তর্জাতিক ভাবে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর বাঙ্গালি রাষ্ট্রের পরিচয়টি মুছে ফেলার চেষ্টা, তাঁকে ইতিহাস থেকে দূরে সরিয়ে দেয়া, তাঁর সব অর্জনকে অস্বীকার করে, তাঁর সব চিহ্ন মুছে ফেলার আয়োজন শুরু করলো। কিন্তু যাকে বাঙ্গালি এত দীর্ঘদিন সামনে ও পাশে পেয়েছে তাঁকে ভুলিয়ে দেওয়াটা অবাস্তব। বঙ্গবন্ধুকে হারাবার এ শোকাবহ মাসে আমাদের একটাই প্রত্যয় হোক শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের দেশে এনে রায় কার্যকর করতে হবে।

এ ধরনের ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজনের জন্য অবশেষে তিনি মাদ্রাসা কমিটি ও আয়োজকদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

মাদ্রাসার মোহতামিম ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিমান সম্পন্ন বক্তা মাওলানা মো. নাসির আহমাদের সভাপতিত্বে ও সুলতানশাহী গ্রামের মরহুম আব্দুল খালেক মোল্লার ছোট ছেলে ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপক প্রশাসন মোহাম্মদ নাজমুল হুদার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন অত্র মাদ্রাসার সভাপতি আলহাজ্ব হাফেজ মাওলানা আব্দুল মান্নান সাহেব, সাবেক সফল ধর্ম মন্ত্রী আলহাজ্ব শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর ছোট ভাই ও গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব শেখ মো. আবু দাউদ ও ওজোপাডিকোর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক মো. শহীদুল আলম।

গাজীপুর কথা