ঢাকা,  শুক্রবার  ২৬ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

গাজীপুরের শ্রীপুর-মাওনা সড়কের বেহাল দশা, দ্রুত সংস্কারের দাবি

প্রকাশিত: ১৬:০৭, ২১ জুন ২০২০

গাজীপুরের শ্রীপুর-মাওনা সড়কের বেহাল দশা, দ্রুত সংস্কারের দাবি

গাজীপুর সদর উপজেলার শ্রীপুর-মাওনা সড়কে যাতায়াত করেন ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ' শিক্ষার্থী, বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমকি এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। ইটনির্মিত সড়কটি ইট উঠে যেন খালে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে সিএনজি, ইজিবাইক, নসিমন, ভটভটি, অটোবাইক ও ভ্যান চলাচল করছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত। চরম দুর্ভোগে আছেন সড়কটি ব্যবহারকারী লোকজন।

গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি বাজারের গ্রামীণ এই সড়কের এক কিলোমিটার বেহাল দশায় পাঁচটি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার বাসিন্দার ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সড়কটির এমন অবস্থা হলেও সংস্কারে কেউ এগিয়ে আসেনি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

রাস্তা খালে পরিণতস্থানীয় কৃষক ফজলুল হক ও তাইজুদ্দিন মোড়ল বলেন, ‘আমাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষিপণ্য বিক্রির জন্য উপজেলা সদরের হাটবাজারে নিতে হয়। কিন্তু ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ভ্যানচালকেরা যেতে চান না। কেউ যেতে রাজি হলেও এর জন্য অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়। দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা দরকার।'

২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি বাজারের ব্যবসায়ী তাইজ উদ্দিন অভিযোগ করেন, বেহাল এই রাস্তার কারণে মার খাচ্ছে তাদের ব্যবসা। বর্ষাকালে রাস্তায় যাতায়াত করাটা বিপজ্জনক। আশপাশের অনেক রাস্তা পাকা করা হলেও এ রকম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাকে পাকা করা নিয়ে টালবাহনা করা হচ্ছে।

রাস্তা খালে পরিণতস্থানীয় বাসিন্দা ও গাজীপুর আদালতের আইনজীবী নজরুল ইসলাম জানান, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সংস্কার না হওয়া এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। সংস্কারের নামে কয়েকবার সড়কটির মাপামাপি করা হলেও কাজের কোনও খবর নেই।

সরেজমিনে এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর সড়কটির তিন কিলোমিটারের মধ্যে শ্রীপুর-মাওনা সড়কের কেওয়া বাজার থেকে দুই কিলোমিটার কার্পেটিং করে। বাকি এক কিলোমিটার শ্রীপুর পৌর কর্তৃপক্ষ ইট দিয়ে চলাচল উপযোগী করে। দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন না করায় ইট উঠে মাটি বের হয়ে গেছে। ২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি বাজারের এক কিলোমিটার অংশ গর্ত হয়ে ছোট খালে পরিণত হয়েছে।

রাস্তা খালে পরিণতভ্যানচালক আব্দুর রশীদ বলেন, 'ভাঙাচোরা রাস্তার জন্য বেশি মাল নেওয়া যায় না। এ ছাড়া ভ্যানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পেটের দায়ে বাধ্য হয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হচ্ছে।'

শ্রীপুরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসান শান্ত, জাকারিয়া মারি মম ও সানজিদা আক্তার বলেন, 'সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য আমাদের অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে। প্রায়ই স্লিপ কেটে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানিতে পড়ে গিয়ে জামা-কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। ওই দিন স্কুল-কলেজ কামাই (অনুপস্থিত) দিতে হয়। যানবাহনে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করলে কষ্ট হয়, সময়ও বেশি লাগে।'

৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, সড়কটি দিয়ে যাতায়াতে প্রায়ই নষ্ট হচ্ছে গাড়ি। স্থায়ীভাবে কোনও উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না সড়কটিতে। আমাদের দাবি, সড়কটি যেন দ্রুত সংস্কার করা হয়।

রাস্তা খালে পরিণতশ্রীপুর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী সরকারি কলেজের প্রভাষক ও স্থানীয় বাসিন্দা শাহিদুল ইসলাম সুজন অভিযোগ করেন, গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তা পাকা করার জন্য শ্রীপুর পৌর মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। স্থানীয় কাউন্সিলরের (৭ নং ওয়ার্ড) কাছে আবেদন জানালে তিনি বলেন, এ রাস্তা উন্নয়নে বাজেট না থাকায় সংস্কার করা হচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল ইসলাম মিস্টার বলেন, 'পৌর কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও স্থানীয় কাউন্সিলরের গাফিলতির কারণে জনগুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না।'

শ্রীপুর পৌরসভার প্রকৌশলী তবিবুর রহমান বলেন, 'এই মুহূর্তে বরাদ্দ না থাকা ও অর্থ সংকট থাকায় রাস্তার উন্নয়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। বরাদ্দ এলে প্রস্তাব অনুযায়ী সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করা হবে।'

গাজীপুর কথা