গাজীপুরে লিথি গ্রুপের তিনটি গার্মেন্টসের ৪ শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে তিনজন একই পরিবারে সদস্য। গত কয়েকদিন ধরে তারা কারখানায় কাজ করছিলেন। মঙ্গলবার রাতে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউপি মেম্বার তাদের ভাড়াবাসা থেকে বের হতে নিষেধ করেন। বুধবার তাদের গার্মেন্টে যেতে দেওয়া হয়নি। আক্রান্ত একজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কারো শরীরে করোনা উপসর্গ নেই।
আক্রান্ত ওই ২০ বছরের যুবক জানান, বাবা-মা ও ছোট বোনসহ তারা ছয়জন এবং প্রতিবেশী এক দম্পতি সদর উপজেলার বাঘের বাজারের শিরিরচালা এলাকার লিথি গ্রুপের অ্যাপারেলস, বেসিক ও প্যানটেক্স কারখানায় কাজ করেন। কারখানা ছুটি হয়ে গেলে গত ২৩ এপ্রিল গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার কাউকান্দি গ্রামের বাড়িতে পৌঁছান। গাজীপুর থেকে গেছে শুনে আতঙ্কে এলাকার মানুষ ও প্রশাসন ওই দিন তাদের নমুনা সংগ্রহ করে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখেন। এর মধ্যে গার্মেন্টস খোলার ঘোষণা দিলে তারা গত ২৬ এপ্রিল গাজীপুরের শিরিচালার ভাড়াবাড়িতে ফিরে আসেন। তারা বাবা ২৭, বোন ও মা ২৯ এপ্রিল এবং তিনি ও প্রতিবেশী দম্পতি ২ মে কাজে যোগ দেন। মঙ্গলবার ডিউটি শেষ করে বিকেলে বাসায় তারা সবাই বাসায় ফেরেন। রাত ১০টার পর স্থানীয় মেম্বার এসে জানান তিনি, তার বাবা (৪৮) ও ছোট বোন (১৮) এবং প্রতিবেশী স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে স্ত্রী (৩৩) করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ঘর থেকে বের হতে এবং গার্মেন্টসে যেতেও নিষেধ করে গেছেন। বুধবার কারখানার লোকজনও এসে কাজে না যেতে বলেছেন। তাই সবাই বাসাতেই অবস্থান করছেন। তাদের কারো মধ্যে করোনার কোনো লক্ষণ নেই বলে দাবি করেন লিথি গ্রুপের বেসিক গার্মেন্টসের ওই শ্রমিক।
গাজীপুর সদর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিন পরিষদের স্থানীয় মেম্বার মো. শফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জয়দেবপুর থানার ওসির মাধ্যমে খবর পেয়ে ওই ৪ শ্রমিককে মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে খুঁজে বের করেন। তারা বাঘের বাজার এলাকার এক স্কুলশিক্ষকের বাড়ির ভাড়াটে। সুনামগঞ্জে তাদের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট মঙ্গলবার পাওয়া গেছে। ওই রিপোর্টে ছয়জনের মধ্যে চারজনের করোনা পজিটিভ এসেছে। সুনামগঞ্জের বাড়িতে না পেয়ে প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি গাজীপুরের প্রশাসনকে জানায়। তারপরই তাদের খুঁজে বের করা হয়। তাদের ঘরে থাকতে এবং কাজে যেতে বারণ করা হয়েছে।
তাহেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইকবাল হোসেন বলেন, তাদের নমুনা সংগ্রহের ১৩ দিন পর নিশ্চিত হওয়া যায় তারা করোনা আক্রান্ত। রিপোর্ট আসার পর তাদের অবস্থানের জানতে গিয়ে জানা যায় আক্রান্তরা কর্মস্থল গাজীপুরে চলে গেছেন। বিষয়টি গাজীপুরের প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
গাজীপুর কথা