ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

গাজীপুরে কোরবানির পশু বেচা-কেনার জন্য কদর বাড়ছে অনলাইন হাটের

প্রকাশিত: ১৫:৫৪, ২৫ জুলাই ২০২০

গাজীপুরে কোরবানির পশু বেচা-কেনার জন্য কদর বাড়ছে অনলাইন হাটের

ঈদুল আজহা উপলক্ষে গাজীপুরে কোরবানির পশু বেচা-কেনার জন্য স্থায়ী হাটের পাশাপাশি অস্থায়ী হাটও বসছে। গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী ও জয়দেবপুরে দুটি স্থায়ী হাট থাকলেও ইতোমধ্যে সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আরও ১০টি অস্থায়ী হাটের টেন্ডার দেয়া হয়েছে।

করোনার কারণে হাটে গিয়ে পশু কেনার অনীহা আছে অনেকের। ফলে পশু কেনাকাটায় অনলাইন হাটগুলোর কদর বেড়েছে। ক্রেতাদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে বিভিন্ন রঙ আর সাইজের পশুতে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন সাইট, ফেসবুক আইডি ও পেজ। ক্রেতারা ছবি দেখে পছন্দ করছেন আর ঘরে বসেই অর্ডার দিচ্ছেন। অনেকে আবার নিজ খামারের নামে ফেসবুকে পেজ খুলে পশুর ছবি, ভিডিও, বিবরণ, দামসহ প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরছেন। সঙ্গে থাকছে ফ্রি হোম ডেলিভারি। তবে ছবি দেখে পশু কিনতে নারাজ কেউ কেউ। তাদের মতে ছবির সঙ্গে বাস্তবের অনেক পার্থক্য থাকে। প্রশাসন বলছে, অনলাইনে বিক্রেতার ছবি ও ফোন নাম্বারসহ বিস্তারিত পরিচয় সংযুক্ত থাকছে। প্রতারণার কোনও সুযোগ নেই।

গাজীপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা দিপক রঞ্জন রায় বলেন, জেলায় মোট খামারির সংখ্যা ৬ হাজার ৮৬৮ জন। তারা কোরবানির ঈদের জন্য ৬১ হাজার ১৫০টি গরু, ৪০ হাজার ৬৩৫টি মহিষ এবং ২০ হাজার ৯১৫টি ছাগল ও ভেড়া প্রস্তুত করেছেন । করোনার কারণে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে খোলা জায়গায় হাট স্থাপন করতে হবে।

হাটের ব্যাপক সমাগম আর ঝুঁকি এড়াতে সরকারি নির্দেশনা মেনে ইতোমধ্যে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে চালু হয়েছে শ্রীপুর অনলাইন পশুর হাট নামের একটি পেজ।

গাজীপুর জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগে নিয়েছে কয়েকটি ডেইরি খামারের মালিক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এস এম তরিকুল ইসলাম। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতাও করা হবে। 

সিটি করপোরেশন ও জেলা মার্কেটিং বিভাগ সূত্রে জানায়, জেলায় চার শতাধিক বাজার রয়েছে। পাঁচটি উপজেলায় রয়েছে প্রায় অর্ধশত স্থায়ী বাজার। এসব বাজারে সপ্তাহে একদিন করে গবাদি পশুর হাট বসে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গাজীপুর ও টঙ্গীতে বিশেষ ১০টি অস্থায়ী হাট বসবে।

শ্রীপুরের প্রহ্লাদপুরের মাধবপুর এলাকার খামারি সাদিকুল ইসলাম জানান, ক্রেতারা ঘরে বসেই গরুর ছবি ও ভিডিও দেখার এবং লাইভ ওজন জানার সুযোগ পাবেন। অনলাইনে কোরবানির পশু বেচা-কেনা ভালো জমবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এই গরুগুলোকেও অনলাইনে বিক্রির জন্য তোলা হয়েছেকাপাসিয়ার সিংহশ্রী এলাকার খামারি আইনুল হক জানান, তার খামারে ২০টি গরু বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। প্রতিদিনই অনেকে ফোন করে বিস্তারিত তথ্য জানছেন। এ পর্যন্ত ৫টি গরু বিক্রির বায়নাও হাতে পেয়েছেন। তার বিশ্বাস ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বাকিগুলোও অনলাইনে বিক্রি হয়ে যাবে। তা না হলে নিকটস্থ বাজারে নিয়ে যাবেন।   

শ্রীপুর খামারি মালিক সমতির সভাপতি মাসুদ সরকার জানান, স্মার্টফোন ব্যবহারকারী খামারি বা এ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্ত্বাধিকারীরা এরই মধ্যে ফেসবুকে গরু বিক্রি শুরু করেছেন। তবে দুর-দুরান্তের ব্যাপারী না পেলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে বলেও জানান তিনি।

শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রুকুনুজ্জামান বলেন, এ উপজেলায় ছোট বড় ৫১০টি গো-খামারে গরু লালনপালন করা হচ্ছে। আমরা তাদের তালিকা করে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তদারকি করছি।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ সামছুল আরেফীন জানান, ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় কুরবানির হাট বসানোর অনুমতি চেয়ে আবেদন এলেও করোনায় সামাজিক দূরত্ব বজায় নিশ্চিতকরণের কথা বিবেচনায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত। তাই অনলাইন হাটের প্রতি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (এসএম) এস এম তরিকুল ইসলাম বলেন, পশুর খামারিদের সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে অনলাইনে পশু বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনলাইনে পশুর ওজন অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ হবে, যাতে ক্রেতা-বিক্রেতা কেউ প্রতারিত না হন। করোনার সংক্রমন রোধে স্থানীয় বাজারগুলো নজরদারি করতে এরই মধ্যে প্রত্যেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন