ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কালীগঞ্জে সূর্যমুখী বাগান এখন বিনোদন কেন্দ্র

প্রকাশিত: ১৭:০৬, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১

কালীগঞ্জে সূর্যমুখী বাগান এখন বিনোদন কেন্দ্র

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় কৃষি অফিসের প্রদশর্নী, প্রণোদনা ও পূর্ণবাসনসহ স্থানীয় কৃষকদের নিজ উদ্যোগে- খানিকটা শখের বসেই চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল। তবে শখের সেই ফুলের ক্ষেত এখন স্থানীয়দের কাছে বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়ভাবে কৃষকদের অনাগ্রহের কারণে সূর্যমুখী ফুলের চাষ খুব একটা হয় না। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থবছরে তিন গুণ বেশি সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছে কৃষকরা।

ফলনে সন্তুষ্ট হয়ে আগামীতে কোলেস্ট্রোরেল ফ্রি, হার্ট  ও উচ্চ রক্তচাপের জন্য উপকারী এই ফসলটি আরও বেশি জমিতে চাষ করতে চান কৃষকরা। একই কথা বলছে স্থানীয় কৃষি অফিসও।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরে মাত্র দুই হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। কিন্তু গত বছরের তুলনায় এ বছরে তিন গুণ বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। এরমধ্যে কৃষি রাজস্ব খাতের অর্থায়নে ৪০ একর জমিতে কৃষি অফিসের প্রদর্শনী, ৩০ একর কৃষি প্রণোদনা ও পূর্ণবাসন এবং বাকি জমিতে নিজ উদ্যোগে কৃষকরা সূর্যমুখী ফুলের চাষ করছেন।

উপজেলার কালীগঞ্জ পৌরসভা, নাগরী, তুমলিয়া, বক্তারপুর, জাঙ্গালীয়া, মোক্তারপুর, জামালপুর ও বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের সবখানে এই তৈলজাত ফসলটির চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে বারি সূর্যমুখী-৩ ও আরডিএস-২৭৫ জাতের সূর্যমুখী ফুলের চাষ বেশি হচ্ছে। সব মিলিয়ে এবার এ উপজেলায় আট হেক্টর জমিতে ফসলটির চাষ হচ্ছে।

এদিকে হলুদ রংয়ের চাদর বিছিয়ে সূর্যের দিকে তাকিয়ে থাকা ক্ষেত ভরা ফুল দেখে নিজেকে স্থির রাখতে পারেন  না অনেকেই। ছবি তুলতে ক্ষেতের ভিতর ছুটছেন। অনেকে আবার বন্ধু-বান্ধবের কাছে খবর পেয়ে পরিবারসহ বাগান দেখতে হাজির হচ্ছেন।

উপজেলার তুময়িয়া ইউনিয়নের বোয়ালী গ্রামের বাসিন্দা রনি হায়দার সুমন বলেন, ‘ফুল কে না ভালবাসে? তাছাড়া সড়কের পাশে এমন হলুদ আভা যে কাউকে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে মিতালী করতে বাধ্য করবে।’

উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের গৃহবধূ সেচ্ছাসেবী নূসরাত কবির বলেন, ‘বন্ধু-বান্ধবের মাধ্যমে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি স্থানীয়ভাবে বেশ কিছু সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। তাছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থানীয় কমিটির সভাপতি, একই মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি আপার সূর্যমুখী ফুলের বাগানের একটি ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তাই আমি স্বামী-সন্তান নিয়ে চলে এলাম।’

কালীগঞ্জ পৌর এলাকার তুমলিয়া গ্রামের সুকুমার পালমা এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। একই এলাকার দুবার্টি গ্রামের আব্দুর রহিম ভূইয়া অন্যের ৩৩ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে তৈলজাত এ শষ্যটির চাষ করেছেন। তারা জানান, হাজার হাজার দর্শণার্থী দলে দলে ছুটে আসছে। বিষয়টি ভালো লেগেছে। আগামীতে আরও বেশি জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, ‘কৃষকদের আগ্রহ ও ভাল ফলনের কারণে আগামীতে কালীগঞ্জ উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ আরও বৃদ্ধি করা হবে। তৈলজাত এ ফসলটি মানুষের প্রশান্তির খোরাক হিসেবেও মন্দ না।’

গাজীপুর কথা