ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কালিয়াকৈরে শিক্ষকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত শুরু

প্রকাশিত: ১৫:০৬, ১৭ জুলাই ২০২০

কালিয়াকৈরে শিক্ষকের টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তদন্ত শুরু

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্পে ১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার নয় ছয়ের বিষয়ে প্রকল্প কো-অর্ডিনেটর মতিউর রহমান বাদী হয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপির কাছে একটি আবেদন দেন। মন্ত্রী ওই আবেদনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমীন উপজেলার শিক্ষাকর্মকর্তা রমিতা ইসলামকে প্রধান করে এক সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। ওই তদন্ত কমিটির প্রধান রমিতা ইসলাম গত বুধবার (১৫ জুলাই) সকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে মৌলিক স্বাক্ষরতা কর্মসূচীতে সংশিষ্ট সকলের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেন।

এ সময় তদন্ত কমিটির প্রধান রমিতা ইসলাম জানান, তদন্ত প্রতিবেদন দিতে ২-৩ দিন সময় লাগবে। তবে তদন্ত করে সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সঠিক প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

এদিকে এ মৌলিক স্বাক্ষরতা কর্মসূচীর সাথে জড়িত শিক্ষক, সুপারভাইজার ও  প্রোগ্রাম কর্মকর্তাও সাথে কথা বলে জানা গেছে। গত ২০১৯ সালের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ আনুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর অধীনে মৌলিক স্বাক্ষরতা কর্মসূচী উত্তরার রাজ ডু নামক একটি এনজিও এ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে নিরক্ষর ব্যক্তিদের স্বাক্ষরতার জন্য ৬০০ শিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেন।

সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬ শতাধিক শিক্ষক ও ১৫জন সুপারভাইজার নিয়োগ দেন রাজ-ডু নামক ওই এনজিও। প্রকল্প শিক্ষা গত বছরের জুনে শেষ হলেও ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, শিক্ষক ও সুপারভাইজারদের বেতন দিতে বিলম্ব হয়। শিক্ষকদের কয়েক কিস্তিতে বেতনের টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও দ্বিতীয় কিস্তিতে গত ৩০ জুন সুপারভাইজাররা শিক্ষকদের কাছ থেকে ৪৮০ টাকা করে কেটে নেওয়া হয় রাজ ডুর সার্ভিস খরচ বাবদ। এ নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করে।  
 
শিক্ষক  সাইদুর রহমান, যুথি আক্তার, সিহাব জানান, ওই প্রকল্পে ৬ মাসের প্রতি মাসে একজন শিক্ষককে ২ হাজার ৪৫০ টাকা করে দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হচ্ছে না। অনেক শিক্ষক কোন টাকা পায়নি। প্রতি কেন্দ্রের সুপারভাইজার তাদেরকে খরচ দেখিয়ে আরও ১ হাজার টাকা করে কেটে নিচ্ছেন। তিন মাসে ৭ হাজার ৩৫০ টাকার মাঝে প্রতি শিক্ষক ৫ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন। এতে ৬ শতাধিক শিক্ষকের প্রায় ১৪ লাখ ১০হাজার টাকা আত্মসাত  করা হয়। আবার ৬ মাসের মধ্যে কয়েক জন শিক্ষক এক মাসেরও বেতন না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।
 
অভিযোগকারী মতিউর রহমান জানান, রাজ ডুর পরিচালক মাসুম খাঁন ও প্রোগ্রাম কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস শিক্ষকদের বেতন শিক্ষকদের প্রাপ্য বেতন স্বাক্ষর জাল করে বেতন উত্তোলন, ঘরভাড়া, বিদ্যুৎ বিলের টাকা আত্মসাধের চেষ্টা করছে। সুষ্ঠ তদন্তের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক এমপির কাছে একটি আবেদন দিয়েছি।

অভিযুক্ত রাজ ডু এনজিওর নির্বাহী পরিচালক মাসুম খান জানান, সরকারের নিযুক্ত প্রোগ্রাম কর্মকর্তা জান্নাতুল ফেরদৌস শিক্ষকের বেতন দিয়ে থাকেন। কিন্তু এখানে আমার প্রতিষ্ঠানের কোন অনিয়ম ও টাকা আত্মসাতের কোন সুযোগ নেই।

অতিরিক্ত প্রোগ্রাম অফিসার জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আমি মাষ্টার রোল করে প্রতি শিক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে বেতনের টাকা পরিশোধ করেছি। আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ সঠিক নয়।  

গাজীপুর কথা