ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কর্মমুখী মানুষের চাপ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায়

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ১৭ মে ২০২১

কর্মমুখী মানুষের চাপ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায়

ঈদের তৃতীয় দিনেও কর্মস্থলমুখী মানুষের চাপ ছিল পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের হাজারো মানুষ গাদাগাদি করে পার হয়েছেন ফেরি। সামাজিক দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই ছিল না। প্রচণ্ড রোদ আর গরমে নাকাল অবস্থা ছিল যাত্রীদের। বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়েও পড়েন।

ফেরি পারাপারে ভোগান্তি না থাকলেও বিভিন্ন যানবাহনে ভেঙে ভেঙে গন্তব্যে পৌঁছাতে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন যাত্রীরা। গুনতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া।

সরেজমিন পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা গেছে, সোমবার (১৭ মে) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতেই ছিল যাত্রী ও যানবাহনের ভিড়। তবে ফেরিগুলোতে যানবাহনের তুলনায় যাত্রীর সংখ্যাই ছিল বেশি। দৌলতদিয়া প্রান্তে যাত্রীর চাপ সামাল দিতে পাটুরিয়া ঘাট থেকে খালি ফেরিও ছেড়ে যেতে দেখা গেছে।

পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি ভিড়তেই স্রোতের মতো মানুষ নামতে দেখা যায়। এরপর গন্তব্যে পৌঁছাতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিভিন্ন পরিবহনে।এই সুযোগে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ও জেলার অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন গণপরিবহনগুলোতে কর্মস্থলমুখী মানুষের কাছ থেকে কয়েকগুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হয়। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।

প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছিলেন কাজী আনোয়ার হোসেন। পাটুরিয়া ৪ নম্বর ফেরিঘাটে দাঁড়িয়ে কথা হয় তার সঙ্গে।

তিনি জানান, অনেক কষ্ট করে ঈদের সময় বাড়ি ফিরেছিলেন। তবে ফেরার সময় ফেরিঘাটে কোনো সমস্যা নেই। তবে বিভিন্ন যানবাহনে ভেঙে ভেঙে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছাতে গিয়ে অনেক ভোগান্তির হয়েছেন বলে জানান। কাজী আনোয়ার হোসেন বললেন, পাটুরিয়া ঘাট থেকে একা গাবতলী যেতে মোটরসাইকেল ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৭০০ টাকা।

তিনি বলেন, ‘প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস সব চলছে। অথচ দূরপাল্লার বাস বন্ধ। সরকার যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চালু করে দিতো তাহলে মানুষজনকে এতো ভোগান্তিতে পড়তে হতো না। এতো গাদাগাদি করে যানবাহন আর ফেরিতে চলাচলের কারণে করোনা ঝুঁকি আরও বাড়ছে।’

পোশাক কারখানার শ্রমিক আন্না বেগম। ছয় বছরের মেয়েকে নিয়ে ফেরি থেকে নেমেই গাছতলায় বসেন। বলেন, এমনিতেই প্রচণ্ড গরম তার ওপর ফেরিতে এতো মানুষের সঙ্গে পার হতে গিয়ে তিনি খুবই ক্লান্ত। মনে হচ্ছে জীবন বের হয়ে যাচ্ছে। যাবেন নবীনগরে।পরে আরও কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে একটি মাইক্রোবাসে ৪০০ টাকা ভাড়া মিটিয়ে গন্তব্যে রওনা হন আন্না।

জীবন সাহা নামের এক যাত্রী জানান, ফেরিঘাটে কোনো ভোগান্তি নেই। তবে পথে পথে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। তারপরও সবার সঙ্গে ঈদ করতে পেরে ভীষণ খুশি তিনি।

এদিকে প্রচণ্ড রোদ ও গরমে পাটুরিয়া ঘাটে বেশ কয়েকজন যাত্রীকে অসুস্থ হয়ে পড়তে দেখা গেছে। দুপুরে ৩ নম্বর ঘাটে একটি ফেরি থেকে নামার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন রহমান নামের এক যাত্রী। এসময় অপর দুই যাত্রী তাকে ঘাটের একটি দোকানে বসিয়ে মাথায় ও চোখেমুখে পানি দিয়ে কিছুটা সুস্থ করে তোলেন।

৪ নম্বর ঘাটেও অসুস্থ হয়ে পড়েন চল্লিশোর্ধ্ব এক নারী। কয়েজন মিলে তার মাথাও পানি ঢালতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড গরমের কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান স্থানীয়রা।

বিআইডব্লিউটিসির আরিচা অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জিল্লুর রহমান জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ছোটবড় ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। সোমবারও সকাল থেকে ঈদফেরত যাত্রী ও যানবাহনের চাপ ছিল ঘাটে। দৌলতদিয়া ঘাটের যাত্রীর চাপ সামাল দিতে পাটুরিয়া থেকে খালি ফেরি ছাড়া হয়।

যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ থাকলেও মানুষের কোনো ভোগান্তি ছিল। কর্মস্থলমুখী মানুষের এই চাপ আরও কয়েকদিন থাকবে বলেও জানান তিনি।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন