ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

করোনায় ৫ ধরনের মানুষ বেশি মারা যাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৬:২১, ১৬ এপ্রিল ২০২০

করোনায় ৫ ধরনের মানুষ বেশি মারা যাচ্ছেন

সারা বিশ্ব কাঁপছে করোনা ভাইরাস আতঙ্কে। দেশে দেশে মৃত্যুর মিছিল শুধুই দীর্ঘ হচ্ছে। আর আক্রান্তে সংখ্যাা বেড়ে আকাশচুম্বী লম্বা সারি হচ্ছে। যার কারণে দেশে দেশে লকডাউনের সময়সীমা শুধু বাড়ানো হচ্ছে। এই আতঙ্ক কবে কাটবে তার কোনো সদুত্তর আসছে না স্বাস্থ নিয়ে নেতৃত্ব দেয়া কোনো সংস্থার কাছ থেকেই।

পরিস্থিতি ক্রমশই মানুষকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এ করোনা ভাইরাসের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিও চরমভাবে ভেঙে পড়ছে। আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে মহামন্দার। প্রথম থেকেই বলা হচ্ছিলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তেমন ধরনের মানুষই মারা যাচ্ছে। অর্থাৎ বয়স্ক লোকই এই ভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকিতে বেশি। তবে কিছুদিন পর থেকে এই তালিকায় থেকে বাদ যায়নি শিশু, তরুণ, মধ্যবয়স্ক কেউই। তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে তাহলে ভাইরাসের গ্রাস আসলে কোনো ধরনের মানুষ বেশি হচ্ছে।

গবেষকরা বলছেন, পাঁচ ধরনের মানুষের করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমনকি করোনা আক্রান্ত হলে প্রথমে গুরুতর অসুস্থ, পরে মৃত্যুর শঙ্কা বেশি তাদেরই।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, কোভিড-১৯ নতুন রোগ। এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য এবং এই কয়েক মাসের অভিজ্ঞতা বলছে, এই ভাইরাস অন্য রোগে আক্রান্তদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে কোনো বয়সের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। এমনকি স্বাস্থ্যবানরাও আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। তবে বয়স্ক, শারীরিকভাবে দুর্বলরা বেশি ঝুঁকিতে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনায় মৃতদের মধ্যে পাঁচটি ধরন দেখা গেছে। সেগুলো হলো-

১. বয়স

গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ বছরের বেশি বয়স্কদের করোনায় মারা যাওয়ার হার অত্যধিক। উহানে গবেষকরা একটি পরিসংখ্যান চালিয়েছেন; সেখানকার দু'টি হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ১৯১ জনের মধ্যে বয়সভেদে মৃত্যুর একটি সম্পর্ক দেখেছেন তারা। এমনকি করোনা আক্রান্ত হলে গুরুতর পরিস্থিতি হবে কিনা, সেটাও নির্ভর করছে বয়সের ওপর।

বয়স্কদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় হার্ট, ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতির হাত থেকে তারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে রক্ষা করতে পারছে না

২. লিঙ্গ

পরিসংখ্যান বলছে, নারীদের তুলনায় পুরুষের মৃত্যু হচ্ছে বেশি। যদিও এর কারণ এখনো জানতেে পারেননি গবেষকরা। ইতালিতে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ হলেও মৃতদের মধ্যে পুরুষের শতাংশ ৬৮। গ্রিসে জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ পুরুষ হলেও করোনায় মৃতদের ৭২ শতাংশ পুুরুষ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নারীরা বেশিরভাগ সময় পুরুষের চেয়ে ঘরে সময় পার করেন। এমনকি করোনাভাইরাসের বিষয়টিও নারীরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। কিন্তু পুরুষরা সেভাবে বিবেচনা না করে এখনো বাইরে বের হচ্ছেন। ফলে মৃত্যুর হারের দিক থেকেও পুরুষের সংখ্যাটা বেশি হচ্ছে।

৩. শারীরিকভাবে দুর্বল

যেসব মানুষ আগে থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে আছেন; বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসে সমস্যা, হজমের সমস্যায় ভুগছেন- তাদের মৃত্যু হার বেশি।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, উহান শহরে প্রথম এক হাজার জন আক্রান্ত হওয়ার পর যারা মারা গেছেন- তাদের বেশিরভাগেরই ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হার্টে সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপ ছিল। হঠাৎ করেই সেসব রোগের উপসর্গ বেড়ে গিয়ে তাদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে।

৪. ওজন

শারীরিকভাবে বেশি ওজনের মানুষদের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। ফ্রান্সের গবেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে এতো বেশি মানুষ মারা যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বাড়তি ওজন। মোটা মানুষজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার কথাও বলেছেন গবেষকরা।

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। সে ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা কেবল আক্রান্ত কোনো মানুষকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে টেনে নিয়ে আসতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, করোনা আক্রান্ত হলে তাদের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে গুরুতরভাবে। এ ধরনের মানুষকে লাইফ সাপোর্টে পর্যন্ত নিতে হচ্ছে। পরে বেশি সংখ্যক এ ধরনের মানুষ মারা যাচ্ছে।

সূত্র: মিরর

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন