ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কমতে শুরু করেছে গাজীপুরের বন্যার পানি

প্রকাশিত: ১৪:৫৮, ৮ আগস্ট ২০২০

কমতে শুরু করেছে গাজীপুরের বন্যার পানি

গাজীপুরে কমতে শুরু করেছে বন্যার পানি। তবে, মানুষের দুর্ভোগ মোটেও কমেনি। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যায় প্লাবিত হয়েছে ঘর-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট ও হাট বাজার। এছাড়া বন্যার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন শতশত মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, কালিয়াকৈর ও কালীগঞ্জ উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে ঘর-বাড়ি, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট ও হাট বাজার ডুবে গেছে। এতে পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ।  

ভুক্তভোগী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্যার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে শতশত মানুষ। ফলে এসব পরিবারে দেখা দিয়েছে অভাব-অনটন, কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। বন্যার কারণে নানা রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। একদিকে মহামারি করোনা ভাইরাস অন্যদিকে বন্যা। বন্যায় কারো ঘরে পানি, কারো দুয়ারে। এমন সময়ে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও তারা পড়েছেন বিপদে। বন্যা কবলিত এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে অন্যের বাড়ি, উঁচু স্থানে। অনেকের রাত দিন কাটছে নৌকায়। হাট-বাজার ও রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় তাদের ভোগান্তির শেষ নেই। তবে গত দুই থেকে তিন দিন ধরে বন্যার পানি কমতে শুরু করে। যদিও মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। নৌকা ছাড়া বন্যা কবলিত এলাকার মানুষ এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়ি যেতে পারছেন না। বিপদে আছেন চাকরিজীবীরাও। এছাড়া বন্যায় বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট ভেঙে গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শতশত ঘর-বাড়ি।

জানা যায়, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল নদীর পাড়, কাতলাখালী, বাঘিয়া নদীর পাড়, আহাকি, মীরেরগাঁও, বড়ইতলী, মজলিশপুর, লাঠিভাঙ্গা, কালাকুর ও ধনঞ্জয়খালীসহ বিভিন্ন এলাকায় শতশত ঘরবাড়ি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কড্ডা বাজার, মজলিশপুর কদমতলা বাজার, বাঘিয়া বাজার, কাশিমপুর নামা বাজার ও কারখানা বাজার এবং সদর উপজেলার ভাওয়াল মির্জাপুর হাটসহ বেশকিছু হাটবাজার বন্যায় তলিয়ে গেছে।
এছাড়াও কালিয়াকৈর উপজেলার চাপাইর ইউনিয়নের মজুতপাড়া, বড়ইবাড়ি, খালপাড়, কুতুবদিয়া, সিমারপার ও বাঘচাপার এলাকা, সূত্রাপুর ইউনিয়নের হিজলতলি, গজারিয়া ও কাঞ্চনপুর, আটাবহ ইউনিয়নের জালশুকা গোসূত্রা, দরবাড়িয়া, কামারিয়া ও মাথারিয়া এলাকা, ঢালজোড়া ইউনিয়নের বেনুপুর, আশাপুর, ঢালজোড়া বাজার, চাঁনপুর ও বেগুনবাড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় শতশত ঘরবাড়ি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট হাটবাজারও তলিয়ে গেছে।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাতলাখালী এলাকার বাসিন্দা নুরু মিয়া জানান, মহামারি করোনা ভাইরাসের পর থেকে কাজকর্ম বন্ধ। এখন আবার বন্যা। চারদিকে বিপদ। আয় রোজগার নাই, শুধু খরচ। ঋণ করে সংসারের খরচ চালাচ্ছি। এভাবে কতদিন চলবো। বন্যায় চারদিক তলিয়ে গেছে। মনে হয় ঘরবাড়ি নিয়ে পানির উপর ভেসে আছি। তবে গত কয়েকদিন ধরে বন্যার পানি কমতে শুরু।

কালিয়াকৈরের বাসিন্দা আবু তালেব মিয়া জানান, প্রায় এক মাস ধরে পানিবন্দি হয়ে আছি। ঘরে-বাইরে সবখানেই শুধু পানি আর পানি। বন্যার কারণে স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপন করতে পারছি না। আরও কতদিন এভাবে কষ্ট করে থাকতে হবে কে জানে। গত ২১ বছরে গাজীপুরে বন্যায় এত পানি হয়নি।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। ক্ষত্রিগ্রস্ত মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট মেরামতেরও।

গাজীপুর কথা

    আরো পড়ুন