ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

ইমরান খানের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ১৯ অক্টোবর ২০২০

ইমরান খানের পদত্যাগ দাবিতে উত্তাল পাকিস্তান

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেছে বিরোধী দলের লক্ষাধিক নেতাকর্মী। রোববার বন্দরনগরী করাচিতে এই বিক্ষোভ হয়।
বিরোধীদের দাবি, ২০১৮ সালে পাকিস্তানে যে পার্লামেন্ট নির্বাচন হয়েছে তা ছিল জালিয়াতির। সেনাবাহিনী নির্বাচনে জালিয়াতি করে ক্ষমতায় বসিয়েছে ইমরান খানকে। এজন্য তার পদত্যাগ দাবি করেন তারা। সংবাদমাধ্যম  রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

খবরে বলা হয়েছে, সরকারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী অসন্তোষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রধান নয়টি বিরোধী দল মিলে গত মাসে একটি প্লাটফরম গঠন করেছে। এর নাম দেয়া হয়েছে পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (পিডিএম)।

বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ। তিনি ইমরান খানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি জনগণের কর্মসংস্থান কেড়ে নিয়েছেন। সাধারণ মানুষের সামনে থেকে দিনে দু’বেলার খাবার কেড়ে নিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রেসিডেন্ট বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেন, বাড়িতে অনাহারে আমাদের কৃষক। যুব শ্রেণি হতাশায়।

প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস সংক্রমণ এমনিতেই সারাবিশ্বের মতো পাকিস্তানের অর্থনীতিতেও আঘাত হেনেছে। সেখানে মুদ্রাস্ফীতি দুই অঙ্কে পৌঁছে গেছে। প্রবৃদ্ধি পৌঁছেছে নেগেটিভে। এজন্য ইমরান খানের সরকারকে দায়ী করেন বিরোধীরা। ইমরান খান সরকারের ক্ষমতার মেয়াদ দুই বছর। এ সময়ে তিনি ভিন্ন মতাবলম্বী, সমালোচক ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমনপীড়ন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। এছাড়া সেখানে সেন্সরশিপ খুব বেশি বলে বলা হচ্ছে।

করাচির ওই বিক্ষোভে  ৬৩ বছর বয়সী ফকির বেলুচ বলেন, মুদ্রাস্ফীতি গরীব মানুষের কোমর ভেঙে দিয়েছে। অনেকে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দিতে অন্যের কাছে হাত পাততে বাধ্য হচ্ছেন। এই সরকারের পদত্যাগ করার এটাই উপযুক্ত সময়। এ সময় “যাও ইমরান যাও” বলে বিরোধী সমর্থকদের স্লোগান দিতে দেখা যায়।

পাকিস্তানে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৩ সালে। ওদিকে শুক্রবার এই জোটের বিক্ষোভ হয়েছে পূর্বের শহর গুজরানওয়ালায়। ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর এটাই ছিল তার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। এই বিক্ষোভে লন্ডনে থাকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ ভিডিও লিঙ্কে বক্তব্য রাখেন। তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জালিয়াতির জন্য দায়ী করেন সেনাপ্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়াকে। এছাড়া নওয়াজ শরীফকে ২০১৭ সালে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্যও তিনি এই সেনাপ্রধানকে দায়ী করেন।

নওয়াজ শরীফ বলেন, তার এই উদ্যোগে সহায়তা করেছিল বিচারবিভাগ। তবে রোববারের বিক্ষোভে নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম বলেন, তার দল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নয়। তবে যদি বলা হয়, যারা বুটের নিচে ব্যালটকে দলিত মথিত করেছে, তাদেরকে সম্মান করতে, তা হতে পারে না। ওদিকে পাকিস্তানের রাজনীতি বা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনো হস্তক্ষেপ বা অন্যায় করার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে সেনাবাহিনী। তারা নওয়াজ শরীফের অভিযোগের সুস্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত।

গাজীপুর কথা