ঢাকা,  বুধবার  ২৪ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

আওয়ামী কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হলে ষড়যন্ত্রকারীরা কিছুই করতে পারবে না

প্রকাশিত: ১৭:১২, ৪ আগস্ট ২০২০

আওয়ামী কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হলে ষড়যন্ত্রকারীরা কিছুই করতে পারবে না

আগস্ট মাস এলেই ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হয়ে পরে। তবে আগস্ট ছাড়া অন্য সময়ও তারা সক্রিয় থাকে। আওয়ামী লীগের নেতকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে ষড়যন্ত্রকারীরা কিছুই করতে পারবে না বলে মনে করেন আলোচকরা।

আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এ্যাড. এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওছার বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সারা জীবন কাজ করে গেছেন। তার নেতৃত্বেই এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে এসে জাতির জনক দেশকে গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছিলেন। তিনি কখনোই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কখনোই বাড়তি নিরাপত্তা নেননি। তিনি বিশ্বাস করতেন, পাকিস্তানি শাসকরা যেখানে তাকে হত্যা করার সাহস পায়নি; সেখানে বাঙালিরা তাকে হত্যা করতে পারবে না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তাকে হত্যা করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকেই থমকে দিয়েছিল। ৭৫ এর পর সামরিক আইন দিয়ে দেশ পরিচালনা করতে। ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি এই দেশকে বাংলাস্তান করতে সকল প্রস্তুতি করেছিল। এই ষড়যন্ত্রকারীদের কারণেই ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসতে পারেনি। আগস্টের ষড়যন্ত্র আজো থেমে নেই। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় চালিয়েছিল। আর একটা গ্রেনেড বিস্ফোরিত হলে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা মারা যেতেন। তাকে হত্যা করার জন্য ১৯ বার চেষ্টা করা হয়েছে। দেখুন আজ বাংলাদেশ ৫০ বছরে পদার্পণ করছে। তার হাত ধরেই একসময়ের তলাবিহীন ঝুড়ি হিসাবে বাংলাদেশকে আখ্যায়িত করেছে, তারাই এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলছে। আমার নিজের বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা। ব্রিটিশ আমলের একটা রেল লাইন ছিল, আরেকটা করেছে শেখ হাসিনা। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে অন্যরকম একটা দেশ পেতাম। জাতির পিতার কন্যার কারণে অনেক স্বপ্নই পূরণ হয়েছে। তার হাতকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এমন একটি সংগঠন যেখানে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা সম্ভব। 

অধ্যাপিকা অপু উকিল বলেন, এই করোনাকালে আর কেউ যেন আক্রান্ত না হন সেটা প্রত্যাশা রেখেই আমি আলোচনায় অংশ নিচ্ছি। আগস্ট মাসই যে শুধু ষড়যন্ত্রের মাস সেটা আমি মনে করি না। সারাবছরই তারা ষড়যন্ত্র করে। কিন্তু আগস্ট এলেই ষড়যন্ত্রকারীদের রক্তপিপাসা বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান পাকিস্তানপন্থী পরাজিত শক্তিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন। তারই স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সেই ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রেখেছে। খালেদা জিয়া লিবিয়া থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এদেশে ফিরিয়ে এনে ফ্রিডম পার্টির মাধ্যমে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছিল। জিয়াউর রহমান যেমন ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে খুনিদের বিদেশে চাকরি দিয়েছেন। তেমনি জিয়া, খালেদা এবং তারেক রহমান গং যুব সমাজ, ছাত্র সমাজকে মাদক ও অস্ত্র দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেন। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু কন্যাকে দেশে ফিরতে আসতে দেয়নি। যখন তিনি ফিরে এলেন দেশে, তখন ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা ৯ বার হত্যা চেষ্টা করেছিল জিয়াউর রহমান, এরশাদ এবং খালেদা জিয়া। জিয়াউর রহমান কতটা পিশাচ হলে বঙ্গবন্ধুর রক্তমাখা বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে জড়িত জিয়াউর রহমান বারবার তাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছেন। জিয়া শেখ হাসিনাকে বাড়ি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু কোনো রক্তমাখা হাত থেকে কিছুই নেননি তিনি। জামায়াত ও ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে খালেদা জিয়া ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে তার জঘন্য রূপটি বাংলাদেশ দেখেছিল। কারণ তিনি ১৫ আগস্ট একটি ভুয়া জন্মদিন পালন করেছিল কেক কেটে। এর মাধ্যমে খালেদা জিয়া বুঝিয়ে দিয়েছিল তিনি পাকিস্তানিদের দোসরদের নিয়েই দেশ শাসন করতে চান। কিন্তু ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির প্রহসনের নির্বাচনে খালেদা জিয়া জয়ী হলেও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি। এরপরই ক্ষমতায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবার ২০০১-২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে খালেদা জিয়া। পৃথিবীর কোনো দলই এত লোক আত্নাহুতি দেয়নি। তারা শেখ হাসিনাকে ভ্যানগার্ড হয়ে পাহারা দিচ্ছে। সম্প্রতি বিএনপির অনলাইনে একটি স্থায়ী কমিটির বৈঠক করেছে। সেখানে তারা জামায়াত ইসলামীকে ছেড়ে বিএনপির চলতে হবে। সেখানে এ ঘোষণার বিরোধিতাও করেছে অনেকে। বিএনপি এমন একটি দল জামায়াতের মতো নিষিদ্ধ দলকে বাদ দেয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। 

আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির বলেন, আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বঙ্গবন্ধুর ডাকেই মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমার বাবাকেও ষড়যন্ত্রকারীরা হত্যা করতে চেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় বলেছিলেন, আমার লাশটা আমার বাংলার মানুষের কাছে দিও। বঙ্গবন্ধু হত্যার দিনে ১৫ আগস্ট খুনি জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া ভুয়া জন্মদিন পালন করে এদেশের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করলো। দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশের একটা প্রজন্মকে বিতর্কিত ইতিহাস দিয়ে নষ্ট করে দিয়েছিল। বাংলাদেশিরা একমাত্র জাতি যাদের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস আছে। আজকে আমাদের অবহেলা, অসচেতনার কারণে অন্যরা সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা আমাদের কাছে শক্তির জায়গা। তিনি এত পরিশ্রম করছেন, তার সব পরিশ্রম যেন বিফলে না যায় তার জন্য আমাদের একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে। তাকে হত্যা করার জন্য জিয়া, এরশাদ, খালেদা এবং তারেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। আমাদের নীতি নৈতিকতা সম্পন্ন কর্মী হয়ে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, শেখ হাসিনা বেঁচে থাকলে অবশ্যই দেশ ভালো থাকবে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু এবং আমাদের গৌরবের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো বিরোধ থাকতে পারে না। রাজনৈতিকভাবে আমাদের মধ্যে বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশ, বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো আপোস হতে পারে না। 

আগস্টের ষড়যন্ত্র প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সাথে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট অভ্যুত্থানের সপ্তাহখানে আগে জিয়াউর রহমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ’র স্টেশন চীফ ফিলিপ চেরির সাথে বৈঠক করেছেন। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে পারেন না। এছাড়া ২১ বছর যারা ইতিহাস বিকৃত করেছে, তাদেরও বিচার করা উচিত।

গাজীপুর কথা