ঢাকা,  শুক্রবার  ২৯ মার্চ ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

অ্যাপ দিয়ে ছবি পাল্টানোর ভয়াবহ দিক

প্রকাশিত: ০৬:৩৪, ২৩ জুন ২০২০

অ্যাপ দিয়ে ছবি পাল্টানোর ভয়াবহ দিক

ফেসবুকে এসেছে নতুন ট্রেন্ডস। নিজের ছবি আরো একটু রঙিন করে প্রোফাইলে যুক্ত করছেন অনেকে। একটি মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আপনিও আপনার ছবিটি সম্পাদনা করে আরো আকর্ষণীয় করতে পারেন।
গুগল প্লে স্টোরেই রয়েছে ছবি সম্পাদনার জনপ্রিয় অ্যাপ ‌‘ফটো ল্যাব পিকচার এডিটর’। এটি মূলত একটি স্টাইলিশ ছবি সম্পাদনার অ্যাপ। কোন প্রফেশনাল এডিটর ছাড়াই এই অ্যাপ দিয়ে আপনার ছবিতে আকর্ষণীয় রূপ দিতে পারেন। এই অ্যাপে ৬৫০টির বেশি ফ্রেম এবং ৭০০ এর বেশি ইফেক্ট রয়েছে।

‌‘ফটো ল্যাব পিকচার এডিটর’ দিয়ে ছবি সম্পাদনার জন্য আপনাকে ফটোশপ এক্সপার্ট হওয়ার দরকার নেই। যে কেউ এই অ্যাপ দিয়ে খুব সহজেই যে কোনো ছবি সম্পাদনা করতে পারবেন।
হিউম্যান-টু-এনিমেল মন্টেজেস ব্যবহার করে আপনার ফেস পরিবর্তনও করতে পারবেন। অন্যের ছবি তুলে তার ফেসে ফানি ক্যারেকটারও দিতে পারেন। এটি হচ্ছে এই অ্যাপের বিশেষ ফিচার। এখন পর্যন্ত অ্যাপটির ফ্রি ভার্সন ১০ কোটির বেশি ডাউনলোড হয়েছে।

গেল কয়েকদিনে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে অত্যন্ত আলোচিত বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে এই অ্যাপ। এই অ্যাপ দিয়ে প্রোফাইল বা কাভার পিকচার তৈরী করছেন অনেকে। হলুদাভ আভাযুক্ত ছবিতে এখন ফেসবুক সয়লাব।
কেবল সাম্প্রতিক এই অ্যাপই নয়, কত বছর বয়সে আপনি দেখতে কেমন হবেন, আপনার নাম দিয়ে আপনার সম্পর্কে কী জানা যায় এমন নানা অ্যাপ হুটহাট সামনে এলেই হুমড়ি খেয়ে তার ব্যবহার শুরু হয়।– কিন্তু তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য চলে যাচ্ছে অ্যাপ মালিকদের কাছে। যা আপনার জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরী করতে পারে।

আন্তর্জাতিকভাবে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি হিসেবে চিহ্নিত হয়  যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কেলেঙ্কারির ঘটনা। বিবিসি সংবাদ অনুযায়ী, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, ফেসবুক থেকে তারা ৮কোটি ৭০ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ করে। এদের মধ্যে প্রায় ১১ লাখ অ্যাকাউন্ট যুক্তরাজ্য ভিত্তিক। এই কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দেয়া ক্রিস্টোফার ওয়াইলির বরাত দিয়ে বলা হয়, প্রায় ৫ কোটি মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর কারণে ২০১৮ সালে এপ্রিলে মার্ক জাকারবার্গকে কংগ্রেসের শুনানিতে অংশ নিতে হয়।
এই অ্যাপ থার্ডপার্টি অ্যাপ। ফেসবুক বা গুগলের না। তারা এই তথ্য ব্যবহার করে যে কারো কাছে বিক্রি করতে পারে। মনে রাখবেন একবার তথ্য নিলে সেটা সারাজীবনের জন্য কোথাও না কোথাও সংরক্ষিত থাকছে। যদি এই মুহূর্তে তারা কোনও পার্টির কাছে বিক্রি নাও করে, পাঁচ বছর পরে করবে। তিনি বলেন,বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এসব গোয়েন্দা সংস্থার কাছে দেওয়া হয় বলে প্রচারণা থাকলেও সেটা প্রমাণিত নয়।

এখন বিশ্বজুড়ে ফেইস ডিটেকশন (চেহারার বর্ণনার মাধ্যমে চিহ্নিত করা) গুরুত্বপূর্ণ। এটি নাগরিকদের নজরদারির জন্য ব্যবহার হয়। আমরা এটা নিয়ে মোটেই সচেতন না। কোন অ্যাপে আপনি যখন আপনার ব্যক্তিগত তথ্য গ্রহণে অনুমতি দিচ্ছেন তখন কখনো যদি সেই অ্যাপ হ্যাক হয় আপনার একাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে। এগুলো থেকে দূরে থাকাই একমাত্র ‍উপায়।
ধরুন মোবাইল ডায়ালার অ্যাপ। তারা আপনার মোবাইলের ক্যামেরা ইউজ করতে চাইবে। আপনার একটা ছবিটা তুলে পাঠাতে হবে। এনআইডি কার্ড পাঠাতে হবে। এসব হয়তো তারা সংরক্ষণ করছে। কোন দুষ্টু লোক যদি ভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজে লাগায় তখন কিছু করার নেই। যখন ব্যবহারকারীর সকল ব্যক্তিগত তথ্য আপনার হাতে তখন আপনার পাসওয়ার্ড ব্রেক করা হ্যাকারদের জন্য সহজ হয়ে যায়।

গাজীপুর কথা