ঢাকা,  বৃহস্পতিবার  ১৮ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

রাজশাহীতে দেশের সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল

প্রকাশিত: ১৬:৩০, ৩০ মার্চ ২০২২

রাজশাহীতে দেশের সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল

একপাশে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের লোকজ সাংস্কৃতির নানা চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অপরপাশে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। আর তারই মাঝে স্বগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু ও মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলার চিরাচরিত রূপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতেই রাজশাহীতে নির্মিত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্য’।

রাজশাহী নগরীরর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে নির্মিতব্য এই বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল ভাস্কর্যের প্রস্থ ৪০ ফুট এবং উচ্চতায় ৫০ ফুট। আর ম্যুারালের পাশেই ভাস্কর্যে ৭০ ফুট চওড়া এবং ৫ ফুট উচ্চতার দুইটি দেয়াল রয়েছে। যেখানে ডানদিকের দেয়ালে বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল, মাছ ইলিশ, পশু রয়েল বেঙ্গল টাইগার, মসজিদ, মন্দির, নবান্ন উৎসব, তাঁত শিল্প, বাংলাদেশের উপজাতীদের সংস্কৃতি সুন্দর করে টেরাকোটার মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। অপরদিকে বামপাশের দেয়ালে রয়েছে রক্তক্ষয়ী মহান মুক্তি সংগ্রামের চিত্র। যেখানে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, গণঅভ্যুত্থান, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ, ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন সময়ের নিষ্ঠুর নির্যাতন, শোষণ, নিপীড়ন ও বঞ্চণাসহ বিজয়ের প্রতিচ্ছবি টেরাকোটায় তুলে ধরা হবে। সব মিলিয়ে ১১০ ফুট চওড়া এবং ৫৮ ফুট উচ্চতার দেশের সর্ববৃহৎ ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্য’ এর সামনে রয়েছে বেদি, এমপি থিয়েটার ও নানার রঙের ফুলের বাগান।

সরেজমিনে দেখা যায়, নগরীর সিঅ্যান্ডবি মোড়ে পুরোদমে ভাস্কর্যটি নির্মাণের কাজ চলছে। কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছেন। ম্যুরাল নির্মাণের মূল অবকাঠামোর কাজ প্রায় শেষের দিকে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি স্থাপনের কাজও শেষ। দেয়ালের একপাশের টেরাকোটা বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। অপরপাশের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা।

রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাসিক সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে  প্রায় ৫ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে বঙ্গবন্ধুর এই ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে। ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্য’ নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাজশাহী মুন এন্টারপ্রাইজ। ভাস্কর্যটির স্থপতি আমিরুল ইসলাম এবং ল্যান্ড স্কেপিং কাজের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন স্থপতি আবির রহমান। নির্মাণ কাজ তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন রাসিকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মীর শাহরিয়ার সুলতান পরাগ।

তিনি জানান, ৫৮ ফুট উচ্চতার বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্যের কাজ প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এটি এখন পর্যন্ত দেশের সর্ববৃহৎ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। এটি শুধু বড়ই নয়; দৃষ্টিনন্দনও হবে। গত ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ম্যুরাল উদ্বোধনের কথা থাকলেও কিছু জটিলতায় নির্মাণ কাজ শেষ করতে দেরি হয়েছে।

‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্য’র স্থপতি আমিরুল ইসলাম শোভন বলেন, এটি দেশের সর্ববৃহৎ ও নান্দনিক বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্য। দেশের অন্য কোথায় এখন পর্যন্ত এত বৃহৎ ম্যুরাল স্থাপন করা হয়নি।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির গৌরব। তাকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে চিরজীবী করে রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল দেশে অনেক রয়েছে। কিন্তু রাজশাহীতে যে ম্যুরাল তৈরির কাজ হচ্ছে এটা দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ ও নান্দনিক। এর দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য দেখে সবাই মুগ্ধ হবে। বঙ্গবন্ধু দেশের জন্য যে অবদান রেখেছেন সেই ঋণ কখনো শোধ হবার নয়। এই কাজের মাধ্যমে আমরা একটু হলেও পরিতৃপ্তি পাবো।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে দেশের সর্ববৃহৎ ‘বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাস্কর্য’র নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন