ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

৯০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ

প্রকাশিত: ১১:০৭, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২

৯০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ

বহুবছর ধরে ঐতিহ্যের ধারক হয়ে আছে খুলনার আমাদী ইউনিয়নের মসজিদকুড় মসজিদ। অপরূপ সৌন্দর্য্যরে পুরাকীর্তিতে সাজানো রয়েছে এ মসজিদটি। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে এটির কোনো সংস্কার হচ্ছে না। এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আয়ত্তে থাকায় এতে কোনো কাজ করতে পারছেন না স্থানীয়রাও। ফলে দিন দিন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে প্রায় ৯০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদটি।

প্রাচীন আমলের বিভিন্ন কারুকাজে সাজানো রয়েছে এর ভেতর ও বাইরের অংশ। মাঝে মাঝেই আরবি হরফের লেখা রয়েছে। যা বর্তমান সময়ে বিরল। সংস্কারের অভাবে এসব লেখার অনেক কিছুই এখন অস্পষ্ট হয়ে গেছে। পলেস্থেরা পড়ছে খোসে, আগাছা জন্মেছে মসজিদের বাইরের দেয়ালে। ফাটল ধরেছে বিভিন্ন জায়গায়। দীর্ঘদিন ধরেই এটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বা সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ধ্বংসের পথে ইতিহাস ঐতিহ্য সমৃদ্ধ প্রাচীন এই প্রত্নসম্পদ।

মহাত্মা খানজাহান আলীর শিষ্য বুড়া খান ও ফতেহ খান এই গ্রামে কাছারি করে এলাকা শাসন করতেন ১৪৫০-১৪৯০ সালের সময়কালে। তারা এখানে একটি নয় গম্বুজ মসজিদ নির্মাণ করেন, নাম রাখেন মসজিদকুড়। ইট-সুরকির তৈরি মসজিদটি দক্ষিণ বাংলার সবচেয়ে প্রাচীন প্রত্নসম্পদ। বর্গাকার এই মসজিদের প্রতি পাশের মাপ হচ্ছে ১৬ দশমিক ৭৬ মিটার, ভেতরের মাপ ১২ দশমিক ১৯ মিটার করে। কেবলামুখী দেয়াল বাদে বাকি তিন দেয়ালে মসজিদে ঢোকার জন্য তিনটি করে খিলান প্রবেশদ্বার আছে। মাঝের প্রবেশদ্বারগুলো অপেক্ষাকৃত বড়।

প্রাচীন এই মসজিদটিতে ২০১৪ সালে সিমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হয় আর সামান্য কিছু কাজ হলেও এরপর থেকে এর আর কোনো সংস্কার হয়নি। প্রাচীন আমলের ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটি সংস্কারের দাবি জানান স্থানীয়রা। তারা মনে করেন, সামান্য সদিচ্ছা থাকলেই বহুবছরের পুরোনো এ মসজিদটি ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল গণি বলেন, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পুরাতন মসজিদ। এ মসজিদটি দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর দর্শনার্থীরা আসেন। কিন্তু বর্তমানের এটির অবস্থা খুবই নাজুক, নামাজের সময় ও পলেস্থারা খোসে গায় পড়ে। দ্রুত এটি সংস্কারের প্রয়োজন।

প্রায় ১৫ বছর ধরে এ মসজিদে ইমামতি করছেন মাহমুদুল হাসান। তিনি বলেন, ‘এটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। জ্বালানার গ্রিলে ও মরিচা ধরেছে। মসজিদের দেয়ালে আরবি হরফে লেখাও এখন অস্পষ্ট। কিন্তু এটিকে সংস্কার করা হচ্ছে না। দ্রুত এটি সংস্কার করা প্রয়োজন। কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে থাকায় স্থানীয়দের পক্ষে সংস্কার করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ইচ্ছে থাকলেও এটি সংস্কারের হাত লাগাতে পারছি না। অন্যদিকে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগও এটি সংস্কারে উদ্যোগ নিচ্ছে না। পুরনো এই মসজিদটি টিকিয়ে রাখার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

গাজীপুর কথা

আরো পড়ুন