সি২/২০২২ ই৩ নামের সবুজাভ ধূমকেতু। ছবি: রয়টার্স
প্রায় ৫০ হাজার বছর পর পৃথিবীর পাশ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে সবুজাভ ধূমকেতু সি২/২০২২ ই৩। প্রায় এক মাস সময় ধরে ৪ কোটি ২৫ লাখ কিলোমিটার দূরে থেকে পৃথিবীকে পাশ কাটিয়ে যাবে ধূমকেতুটি। তবে এ সপ্তাহেই ধূমকেতুটিকে সবয়েচে স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সাধারণত ধূমকেতুকে ‘নোংরা তুষারগোলক’ বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। এগুলো মূলত বরফ, ধুলো, পাথর এবং গ্যাস দিয়ে গঠিত। সাধারণত কোনো একটি সোলার সিস্টেম বা সৌরজগতের বাইরে প্রান্তে থাকা অর্ট ক্লাউড থেকে এসব বরফ, ধুলো, পাথর ইত্যাদি নিয়ে গঠিত হয় ধূমকেতু।
প্রথমদিকে, বরফ, ধুলো, পাথর ইত্যাদি নিয়ে গঠিত অংশকে বলা হয় কোমা। যা পরে যতোই কোনো নক্ষত্রের দিকে অগ্রসর হতে থাকে ততই এতে থাকা গ্যাস, ধুলে এবং অন্যান্য উপাদান তাপে হালকা হতে থাকে এবং গ্যাসগুলো বাষ্প আকারে বের হয়ে কেন্দ্র থেকে একট লেজের মতো গঠন সৃষ্টি করে।
কেন এই ধূমকেতুটি সবুজাভ?
সি২/২০২২ ই৩ নামের সবুজাভ ধূমকেতুটি প্রথমবার দেখতে পাওয়া যায় ২০২২ সালের ২ মার্চ। জুইকি ট্রান্সিয়েন্ট ফ্যাসিলিটির টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এটি দেখতে পান। বিজ্ঞানীরা এই ধূমকেতুটির সবুজাভ হওয়ার কারণ হলো, এর কেন্দ্রে থাকা কার্বন এবং কার্বন-যৌগের অণুগুলো থেকে আলোর বিচ্ছুরণ।
কীভাবে দেখা যাবে এই সবুজাভ ধূমকেতু
এই ধূমকেতু সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে এবং একবার পূর্ণ প্রদক্ষিণ করতে এর সময় লাগে ৫০ হাজার বছর। নিজের কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর পাশ দিয়ে অতিক্রম করতে চলেছে।
গত ১২ জানুয়ারি এই ধূমকেতু সূর্যের সব থেকে কাছাকাছি ছিল। এখন সরে আসছে পৃথিবীর দিকে। বৃহস্পতিবারই (২ ফেব্রুয়ারি) এটি পৃথিবীর সব থেকে কাছাকাছি আসবে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এর আগে, এই ধূমকেতু শেষবার যখন পৃথিবীর এত কাছে এসেছিল তখন পৃথিবীতে নিয়ান্ডার্থাল মানুষ বসবাস করত।
পরিষ্কার রাতে দূরবীন ব্যবহার করে উত্তর আকাশের দিকে তাকালে ধূমকেতুটি দেখা যেতে পারে। আলোকদূষণ কিংবা আলোর বিচ্ছুরণ থেকে দূরে থেকে ধূমকেতুটি পরিষ্কারভাবে দেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই লোকালয় থেকে দূরবর্তী কোনো স্থানে যেতে হবে।