আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা
পদ্মাসেতুর উদ্বোধন ঘিরে বিএনপিসহ যারা এখনও ষড়যন্ত্র করছে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের মোকাবিলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা।
আগামী নির্বাচনের মধ্যদিয়ে তাদের রাজনীতি থেকেও বিতাড়িত করার আহ্বান জানিয়ে নেতারা বলেন, এ দেশের উন্নয়ন আর কেউ ঠেকাতে পারবে না।
বাঙালির আত্মমর্যাদার প্রতীক স্বপ্নের পদ্মাসেতু এখন বাস্তব। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত গর্বের এ স্থাপনাটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় এখন সারা জাতি। ২৫ জুন সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে সারাদেশেই বইছে উৎসবের আমেজ। এমন সময়ে নানা সমালোচনায় সক্রিয় একটি মহল। দক্ষিণাঞ্চলসহ পদ্মাসেতু উদ্বোধন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল আয়োজন করে সমাবেশ ও আনন্দ মিছিল।
শনিবার (১৮ জুন) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে আয়োজিত সমাবেশে যোগ দেন নেতারা।
তারা বলেন, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে পদ্মাসেতু মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। এখনও যারা ষড়যন্ত্র করছে, তাদের রাজপথেই মোকাবিলা করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করে ১৪ দল, অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লালন করে ১৪ দল।
তিনি বলেন, সমগ্র জাতি এ পদ্মাসেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্যালুট দেয় অথচ যারা প্রথম থেকে এটির জন্য বিরোধিতা করেছিল এবং সেটি যেন না হয় সেজন্য আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করেছিল। সেই অপশক্তি আজকেও যখন পদ্মাসেতু নির্মাণ হয়ে গেছে, আর তা উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে, এই সময়েও সেই অপশক্তি ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, তারা (বিরোধীরা) স্লোগান দেয় পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার। এর মধ্য দিয়ে প্রকারান্তরে তারা স্বীকার করে খুনি জিয়া পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। জিয়ার উত্তরসূরি তাদের নেতা তারেক রহমান শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল। ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদেরকে এ অপশক্তিকে রুখতে হবে। পরিষ্কার বলতে চাই, অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশে যারা সাম্প্রদায়িক চেতনা লালন করে, যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী তাদের কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে থাকতে দেয়া উচিত হবে না। আগামী জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তাদেরকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
পদ্মাসেতু এদেশের ঐক্যের প্রতীক উল্লেখ করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশের মানুষের জন্য আজ পদ্মাসেতু বাস্তব এবং দক্ষিণবঙ্গের মানুষের কাছে উন্নয়নের প্রতীক।
এ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে কেউ ঠেকাতে পারবে না। পদ্মাসেতুর উদ্বোধন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন, রাজপথেই তাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করা হবে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ১৯৭১ এর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় উৎসবের মধ্য দিয়ে যেভাবে বাঙালি জাতি উৎসব করেছিল, আগামী ২৫ জুন তেমনিভাবে আরেকটি উৎসব উদযাপিত হবে।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দিবাস্বপ্ন দেখে কোনো লাভ নেই। আগামী নির্বাচনের মধ্যদিয়ে বাঙালি তার অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার স্বার্থে শেখ হাসিনাকে পুনরায় নির্বাচিত করবেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টি জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি, গণআজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দলর নেতা ড. ওয়াজেদুল ইসলাম খান প্রমুখ।
পরে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব পর্যন্ত আনন্দ মিছিলও করেন ১৪ দলের নেতাকর্মীরা।