ঢাকা,  শুক্রবার  ১৯ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

বিশ্ব ইজতেমা: প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাতদফা দাবি সাদ পন্থীদের

প্রকাশিত: ১৬:৪২, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

বিশ্ব ইজতেমা: প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাতদফা দাবি সাদ পন্থীদের

সংবাদ সম্মেলন

তাবলীগের সার্বিক কার্যক্রম ও বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠন করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন বিশ্ব ইজতেমার সাদ কান্ধলভী অনুসারী সাথীরা।

বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ইজতেমা ময়দানের পশ্চিম পাশে উত্তরায় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে সাতদফা দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে তাবলীগের দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ অনুসারী অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুস বাদল লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০২৪ সালে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব যেহেতু তারা করবেন, তাই বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রশাসনের দায়িত্বে থাকারও দাবি জানান তিনি।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সম্প্রতি শেষ হলো বাংলাদেশের টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা। যেখানে তাবলীগের সাধারণ সাথীদের পাশাপাশি প্রায় নয় হাজারের অধিক বিদেশি মেহমান দ্বিতীয় পর্বে উপস্থিত হয়েছিলেন। দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে দেশ-বিদেশে চার হাজারের অধিক জামাত দাওয়াতের কাজে বের হয়েছেন। যা সত্যিকারের বিশ্ব ইজতেমার রূপ লাভ করেছিল।

সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা আরো বলেন, সেখানে সরকার বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন কিন্তু পরবর্তী সময় বিশ্ব ইজতেমার ময়দান নিয়ে তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ (বিশ্ব আমীর মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারী) এর সঙ্গে বরাবরের মতো বৈরী ও বৈষম্যপূর্ণ আচরণ করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে তাবলীগের বিশ্ব মারকাজ দিল্লির নিজামুদ্দিনের অনুসারী মূলধারার তাবলীগের সাথীদের দ্বারা টঙ্গী মাঠকে সরল বিশ্বাসে প্রসাশনের কাছে হস্তান্তর করেছিল। কিন্তু হেফাজত সমর্থিত মাওলানা জুবায়ের সাহেবের গ্রুপকে রহস্যজনকভাবে একতরফা ২০২৩ইং সাল পর্যন্ত টঙ্গী ময়দান মাদরাসা এলাকা, টিনশেড মসজিদ এবং গোডাউন এলাকা ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেখানে মূলধারার তাবলিগ সাথীদের কেবল প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমার জন্য ব্যবহার করতে কেবলমাত্র ৫ দিনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব ইজতেমার মাঠে বিদ্যমান টিনশেডের পাশে আরেকটি সেড নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন কে বা কারা।

তারা প্রশ্ন তোলেন এসব কার অনুমতিক্রমে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তাবলিগের মূল ধারার সাথীদের সঙ্গে কোনো প্রকার পরামর্শ করা হয়নি।

টঙ্গী ময়দানে তাদের একচ্ছত্র অধিকার কে দিয়েছেন? এই বিশ্ব ইজতেমার মাঠ দিল্লির নিজামুদ্দিন বিশ্ব মারকাজ থেকে পরিচালিত তাবলীগ জামাতকেই দেওয়া হয়েছিল।

তারা উল্লেখ করেন, গত ৪ বছর ধরে মাওলানা জুবায়ের গ্রুপকে ৪ সপ্তাহের জন্য কাকরাইল ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আর মূলধারার তাবলীগের সাথীরা মাত্র দুই সপ্তাহের জন্য ব্যবহার করছেন। অথচ এহেন বিভাজনের কোনো আইনগত এমনকি নৈতিক ভিত্তিও নেই। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ না করে এবং হেফাজত সমর্থক এই বিচ্ছিন্ন তাবলীগের গ্রুপের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রশাসন এই একতরফা বিভাজন করে আসছেন।

এ সময় প্রশাসনের কাছে তাদের সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে-

আমাদের অনুরোধ বিশ্ব ইজতেমার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই মাঠের প্যান্ডেল নির্মাণ ও খোলার কাজ করবেন। প্রয়োজনে প্রসাশনের তদারকিতে উভয় পক্ষ বিশ্ব ইজতেমার ময়দান ব্যবহার করবেন।
কাকরাইল ও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ থেকে দুই মাদরাসাকে অন্য জায়গায় স্থানান্তর করা, কারণ শুধুমাত্র তাবলীগের কাজের জন্যই এই মাঠ ও কাকরাইল মসজিদ।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ তাবলীগের সার্বিক কার্যক্রম ও বিশ্ব ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় প্রশাসনের সহযোগিতায় নিরপেক্ষ প্রভাবমুক্ত একটি কমিটি গঠন করা।

কাকরাইল মসজিদ পূর্বের মতো দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজের অধীনে পরিচালনার যাবতীয় ব্যবস্থা করা।

দেশের সকল মসজিদে তাবলীগের সমস্ত কার্যক্রমের জন্য অনুমতি দেওয়া। ধর্মীয় কাজে বাধা দিলে ও অপপ্রচার চালালে সংবিধান মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দেশে স্বাধীনভাবে ধর্মীয় দাওয়াতি কাজ করার পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া।

টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমায় সকল মুরব্বিদের আসার বিষয়ে নিশ্চয়তা প্রদান করা এবং বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন রাখতে ও দেশের শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে তাবলীগের যাবতীয় কাজ পরিচালনায় হেফাজতসহ তৃতীয় পক্ষের রাজনীতিক অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করা। যাতে করে ইসলামের নামে কোনো পক্ষ সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে তাবলীগের নামে কেউ ভুল বুঝিয়ে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে।

সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়ার সমন্বয়কারী মো. সায়েমসহ বেশ কয়েকজন মুরুব্বী উপস্থিত ছিলেন।