ঢাকা,  মঙ্গলবার  ২৩ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

নওয়াব আলী বিদ্যালয়ের সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশিত: ১৫:২৪, ১৭ আগস্ট ২০২২

নওয়াব আলী বিদ্যালয়ের সভাপতি-প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

আলহাজ্ব নওয়াব আলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়

গাজীপুরের শ্রীপুরে টেংরা আলহাজ নওয়াব আলী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। 

তেলিহাটি ইউনিয়নের এই বিদ্যালয়টির পরিচালনা পরিষদের সভাপতির যোগসাজশে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে স্কুলের টিন বিক্রি, কোচিং বাণিজ্য, শিক্ষকদের মূল সার্টিফিকেট জমা রাখা, জোরপূর্বকভাবে শিক্ষকদের স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়াসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। 

অভিযোগ রয়েছে, প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ সরকার ও সভাপতি মকবুল হোসেন ওই স্কুলের সব শিক্ষকের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামার স্বাক্ষর নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে রেখে দিয়েছেন। একই কায়দায় শিক্ষকদের চাপ প্রয়োগ করে সব শিক্ষকের সার্টিফিকেটের মূল কপি প্রধান শিক্ষক তার দখলে রেখেছেন, যা নিয়মবহির্ভূত বলে জানিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। 

নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ওই স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, সভাপতির শর্তসাপেক্ষে না চললে বিভিন্ন ধরনের মামলা মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি অব্যাহত রাখেন। বিএনপি নেতা সভাপতি মকবুল হোসাইনের একক আধিপত্য চলছে বিদ্যালয়টি। এ ছাড়া নিজস্ব লোক দিয়ে স্কুল পরিচালনা কমিটি করছে। প্রায় সময় স্কুল চলাকালে দাম্ভিকতা দেখিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে অসদাচরণ করে থাকেন।

অভিযোগে আরও জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক কোনো প্রকার রেজুলেশন বা পরিচালনা পরিষদের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত ছাড়াই স্কুলের টিন বিক্রি করে দিয়ে নিজের ক্ষমতার জোগান দেন। প্রধান শিক্ষক বিএনপি একনিষ্ঠ সংগঠক ও স্কুল কমিটির সভাপতি বিএনপির নেতা হওয়ায় সরকারি জাতীয় দিবস পালন না করা বিভিন্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামী লীগ সরকারকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। 

আবদুর রউফ সরকার স্কুলের পাশেই টেংরা গ্রামে একই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক আতিকুল ইসলামের বাড়িতেই ভাড়া থাকেন। কিন্তু ক্রীড়া শিক্ষকের সমন্বয়ে প্রধান শিক্ষক ওই বাড়িতেই গড়ে তুলেছেন কোচিং বাণিজ্য। সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে বীরদর্পেই চালাচ্ছেন কোচিং সেন্টার। 

এদিকে স্কুলের পরিচালনা পরিষদ গঠনে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটার তালিকায়ও অনিয়ম স্বজনপ্রীতির অভিযোগ রয়েছে সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে স্কুল পরিচলনা পরিষদে একই ব্যক্তি দুবারের অধিক সভাপতি হতে পারবেন না। 

কিন্তু বর্তমান সভাপতি ও বিএনপি নেতা মকবুল হোসেন তার তৃতীয়বার সভাপতি হওয়ার পথ সুগম করার লক্ষ্যে নিয়মনীতি উপেক্ষা করে তার বাধ্যগত লোক দিয়ে নির্বাচনের পাঁয়তারা করে আসছেন।

স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মকবুল হোসেন বলেন, স্কুল পরিচালনা করতে গেলে এত নিয়ম মানা যায় না। স্কুলের স্বার্থেই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ও মূল সার্টিফিকেট জমা রাখা হয়েছে। 

নিয়মবহির্ভূতভাবে টিন বিক্রি প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ সরকার বলেন, সভাপতির নির্দেশক্রমেই টিন বিক্রি এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়েছি আর সার্টিফিকেট জমা রেখেছি।

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল আমিন বলেন, ইতিপূর্বে আমি ওই প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিষয়ে অবগত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।