ঢাকা,  শনিবার  ২০ এপ্রিল ২০২৪

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

সবাই মিলে একসাথে কাজ করলে শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব: যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৮:৪৮, ২৩ জুন ২০২২

সবাই মিলে একসাথে কাজ করলে শিশুশ্রম নিরসন সম্ভব: যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী

গোলটেবিল বৈঠক

‘আর নয় শিশু শ্রম’ ও ‘পথশিশু চলো স্কুলে যাই’ প্রতিপাদ্য নিয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠ ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

কালের কণ্ঠের সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলীর সঞ্চালনায় আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) দুপুরে গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভিআইপি সভাকক্ষে গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে দৈনিক কালের কণ্ঠ, টঙ্গী আরবান প্রোগ্রাম- ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ও অটিস্টিক কমিউনিকেশন।

কালের কণ্ঠ ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের কর্মকর্তারা ছাড়াও জেলা প্রশাসন, শিক্ষা, সামাজিক সংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, জনপ্রতিনিধি, শিশু সংগঠন, সংবাদকর্মী ও বিভিন্ন পেশার লোকজন উপস্থিত ছিলেন এ বৈঠকে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, কেন শিশুশ্রম হচ্ছে, এটাকে আমরা যদি চিহ্নিত করতে পারি এবং চিহ্নিত করে যে সকল প্রতিষ্ঠানগুলো এটিকে উৎসাহিত করে তাদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও কোম্পানির লাভ বেশি করার জন্য অল্প বেতন দিয়ে শিশুদের বাধ্য করা হচ্ছে শিশুশ্রমে আসার ক্ষেত্রে। যদি আমরা জনসচেতনতা তৈরি করতে পারি, সবাই মিলে একসাথে কাজ করতে পারি তবে শিশুশ্রম নিরসন করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, পথ শিশুদের নিয়ে কাজ করার সংখ্যাটা খুবই কম। যারা কাজ করে খুব ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায়। দেখা যাচ্ছে পথশিশুদের কিছু লেখাপড়া হচ্ছে, লেখাপড়া উপকরণ দেয়া হচ্ছে। ভবিষ্যৎ চিন্তা করে কীভাবে পথশিশু থেকে তাদের ফেরাবো; সে জিনিসটা খুবই কম কাজ হয় আমাদের দেশে। পথশিশুরা কিছু আছে বাবা নাই মা নাই, কিছু আছে পারিবারিক সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর সন্তান কোথায় যাবে, তখন রাস্তায় চলে যায়। দেখা যাচ্ছে একটা বিয়ে করছে বাবা, কোথাও আরেকটা বিয়ে করছে মা তখন সন্তানরা রাস্তায় চলে যায়। এগুলো থেকে মুক্ত করতে হলে আমাদের সবাইকে এক সাথে কাজ করতে হবে।

গাজীপুর কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ মহাপরিদর্শক আহমেদ বেলাল, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ ডেপুটি ডিরেক্টর ও রুরাল ক্লাস্টার মঞ্জু মারিয়া পালমা, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোমেন মিয়া ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাবেদ আলী, গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা ও অধ্যক্ষ মুকুল কুমার মল্লিক প্রমুখ বৈঠকে বক্তব্য দেন। এসময় তারা শিশুশ্রম বন্ধের দাবি জানান। এ ব্যাপারে বিভিন্ন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করার জোর দাবিও করেন তারা।  

বৈঠকে বক্তাদের মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট কোনাবাড়ী থানা কমিটির সভাপতি মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, বড় বড় শিল্প কারখানাগুলোয় শিশুশ্রম নেই বললেই চলে। কিন্তু মহল্লায় মহল্লায় ছোট ছোট কারখানা গড়ে উঠেছে। তারা বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের সাব কন্ট্রাক্টে কাজ করে থাকে। এসব কারখানায় নজরদারি না থাকায় কম বেতনে শিশুশ্রম চলছে। তাই এসব কারখানায় নজরদারি বাড়াতে হবে। এছাড়া দরিদ্র যদি বিমোচন করা না যায় তাহলে শিশুশ্রম কীভাবে বন্ধ হবে?

গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিসার রেবেকা সুলতানা বলেন, প্রত্যেক শিশু তাদের অধিকারগুলো ভোগ করুক। যে সমস্ত শিশু স্কুলে যায় না বা ঝরে পড়ে তাদের স্কুলে নেওয়া কঠিন। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তান অনেক সময় খেয়ে না খেয়ে স্কুলে যায়। তাদের জন্য মিড ডে মিল্ক ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যবস্থা কার্যকর করতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে।

গাজীপুর জেলা সরকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু ইউসুফ খান বলেন, পথ শিশুদের মূল স্রোতধারায় আনতে হবে। কাউন্সিলিং করতে হবে। বাড়িতে শিশুশ্রম আছে সেখানেও কাউন্সিলিং করতে হবে।