
ধর্ষণ
গাজীপুরের কালীগঞ্জে তালাক দেওয়ার পর এক নারীকে আবারো বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষিতা ওই নারী এখন ৭ মাসের অন্ত:সত্ত্বা।
অভিযুক্ত ধর্ষক হযরত আলী উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের কাপাইস এলাকার (বালাইলার) মৃত হরমুজ আলীর ছেলে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযোগ দায়েরের দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন ওই নারী।
বিচার পাওয়ার আশায় ওই নারী এলাকার মেম্বার-চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তির পেছনে হন্যে হয়ে ঘুরছেন। নিরুপায় হয়ে বিয়ের দাবিসহ সন্তানের পিতৃপরিচয় পাওয়ার আশায় শুক্রবার বিকাল থেকে অভিযুক্তের বাড়িতে অনশন করছেন। পরে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এদিকে অনশনের সময় হযরত আলী, তার ২য় স্ত্রী ও তার মা অন্ত:সত্ত্বা ওই নারীকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে হুমকি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অবশেষে শুক্রবার রাতেই ওই নারী “৯৯৯” নাম্বারে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ শনিবার সকালে কাগজপত্র নিয়ে ভিকটিমকে থানায় আসতে বলেন।
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্য সংগ্রহের জন্য অভিযুক্ত হয়রত আলীর বাড়িতে গেলে হুমকি দিয়ে তিনি বলেন, ‘জানিস আমি কে? ভাইস চেয়ারম্যানের ভাগিনা। দ্রুত চলে যা, নইলে অবস্থা ভয়াবহ হবে।’
সরেজমিন জানা যায়, হযরত আলী র্ধষণ, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তার অপকর্মের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে চায় না। সবার মাঝে চাপা ক্ষোপ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে জামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল আমল বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। অপরাধীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় মেম্বার কিশোর আকন্দ জানান, ভিকটিম আমার কাছে এসেছিল। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি মীমাংসা করার। অভিযুক্ত হয়রত আলীও তার পরিবারের লোকজনদের মানাতে পারিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাকসুদ উল আলম খান জানান, ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষার পর জানা যাবে বাচ্চাটি কার! তবে অপরাধ করলে তার বিচার হওয়া উচিত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের কাপাইস এলাকার (বালাইলার) মৃত হরমুজ আলীর ছেলে হযরত আলীর সঙ্গে শরীয়া মোতাবেক তাদের বিয়ে হয়। তাদের ওরসে তাওহিদ (১২) ও তানজিদ (১০) নামের দুটি সন্তান রয়েছে। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই হযরত আলী দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তারই বিরোধের জেরে প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়ে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে প্রথম স্ত্রীকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েও ক্ষান্ত হয়নি অভিযুক্ত হযরত আলী। তালাকের ১ বছর পর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে।