ঢাকা,  সোমবার  ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

Gazipur Kotha | গাজীপুর কথা

কালীগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি শিক্ষিকার মৃত্যুর অভিযোগ

প্রকাশিত: ২০:১২, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

কালীগঞ্জে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি শিক্ষিকার মৃত্যুর অভিযোগ

সংগৃহিত ছবি

গাজীপুরের কালীগঞ্জের সেন্ট্রাল হাসপাতালে আবারও চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতি মুক্তা দে (৩২) নামে এক কলেজ শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

রবিবার ভোর ৫টার দিকে কালীগঞ্জ মহিলা ডিগ্রি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক মুক্তা রাণী দে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মুক্তা দে কালীগঞ্জ উপজেলার তুমিলিয়া ইউনিয়নের চুয়ারিয়াখোলা গ্রামের মুকল দের একমাত্র কন্যা ও ময়মনসিংহের ফুলপুর থানাধীন মহদীপুর গ্রামের শ্রীকান্ত সরকারের স্ত্রী।

শিক্ষিকার ভাই অনুপ দে বলেন, শনিবার দিবাগত রাতে আমার বোনের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে কালীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে যাওয়ার পর ডাক্তার আমাদের কিছু পরীক্ষা দেন। সেগুলো দেখে তিনি জানান তাৎক্ষণিক সিজার করাতে হবে। আমরাও ডাক্তারের পরামর্শে রাজি হই। পরে রাত ৯টার দিকে সিজার করাতে নিয়ে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডা. মাইনুল ইসলাম অপারেশন রুমে গিয়ে সিজার করেন। সিজার শেষ হলে তাকে বেডে দেওয়া হয় রাত ১০টার দিকে। তখনো তার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ডাক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান এটা স্বাভাবিক এবং কোন সমস্যা নেই।

তিনি আরও জানান, রাত ৩টার দিকে আমাদের জানানো হয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে হবে। চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা রোগী নিয়ে ঢাকায় রওনা দেই। পথিমধ্যে উত্তরা পৌঁছালে আমার বোনের অবস্থা ভালো না দেখে সেখানে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, আমাদের অনেক দেরি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তাদের কিছুই করার নেই। দ্রুত আবার ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথেই তার মৃত্যু হয়। আসলে সিজারের পর থেকে তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, কিন্তু ডাক্তার তা আমাদের জানায়নি। রবং ডাক্তার চিকিৎসা না দিয়ে অন্যত্র চলে যান। ডাক্তারদের ভুল সিজারের কারণেই আমার বোন মারা গেছেন।

এ ঘটনায় ডাক্তার মাইনুল ইসলামের কাছে ফোনে ঘটনা সম্পর্কে জানাতে চাইলে তিনি জানান, আমি সঠিকভাবে সিজার করেছি। সিজার হওয়ার পরে রক্তক্ষরণ হলে যেখানে রেফার করেছি কিন্তু রোগীর স্বজনরা সেখানে নিয়ে যায়নি। তাই আমি পরবর্তী ঘটনা সম্বন্ধে তেমন অবগত না। মুক্তা মারা গেছে সেটা আমি শুনেছি।

কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী পরিবারের কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এসএম মনজুর-এ-এলাহী বলেন, বিষয়টি আমরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি। এখনো ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করেননি। তবে ইতোমধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনজন চিকিৎসক দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আজিজুর রহমান বলেন, বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে না জানালেও অন্যভাবে জেনেছি। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ থাকলে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে আইনগত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কাজীগঞ্জ সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।